জামালপুরে দুদকের অভিযানে ঘুষের টাকাসহ অফিস সহকারী আটক

নার্সদের শ্রান্তি বিনোদন ভাতার বিল পাস করে দেয়ার নামে ৩৬ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগে জামালপুর ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালকের কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক কাজী গোলাম মোস্তফা খোকনকে আটক করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক।
বুধবার সকালে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় টাঙ্গাইলের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল এ অভিযান চালান। ওই অফিস সহকারীর কাছ থেকে ঘুষের ৩৬ হাজার টাকা এবং হিসাববহির্ভূত আরো ৯৭ হাজার ৩২ টাকা জব্দ করেছে দুদক।
দুদক জানিয়েছে, জামালপুর সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রোখসানা বেগমের অভিযোগ ছিল হাসপাতালের সহকারী পরিচালকের কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক কাজী গোলাম মোস্তফা খোকন স্টাফ নার্সদের শ্রান্তি বিনোদন ভাতার বিল পাস করে দিতে গড়িমসি ও হয়রানি করে আসছিলেন। একপর্যায়ে এই বিল পাস করার জন্য কাজী গোলাম মোস্তফা ২৯ জন স্টাফ নার্সের কাছে জনপ্রতি দুই হাজার টাকা করে ঘুষ দাবি করেন। পরে নার্সরা নিরুপায় হয়ে এক হাজার ৫০০ টাকা করে মোট ৪৩ হাজার ৫০০ টাকা ঘুষ দেয়ার জন্য রাজি হন। তারা দাবিকৃত ঘুষের ৩৬ হাজার টাকা নগদ এবং শ্রান্তি বিনোদন ভাতার বিল পাওয়ার পর অবশিষ্ট আরো সাত হাজার ৫০০ টাকা দিতে রাজি হন। একই সাথে নার্সদের পক্ষে সিনিয়র স্টাফ নার্স রোকসানা বেগম বুধবার ঘুষের টাকা দেয়ার দিন ধার্য করে গত ১৫ অক্টোবর দুদকের কাছে অভিযোগ করেন।
নার্সদের অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় টাঙ্গাইলের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি আভিযানিক দল বুধবার সকালে অফিস সহকারী কাজী গোলাম মোস্তফাকে ঘুষের টাকাসহ ধরতে ফাঁদ পাতেন। সকাল ১০টায় হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা: প্রফুল্ল কুমার সাহার উপস্থিতিতেই দুদকের দল নার্সদের দেয়া সেই ঘুষের ৩৬ হাজার টাকাসহ অফিস সহকারী কাজী গোলাম মোস্তফাকে আটক করেন। এ সময় দুদকের প্রতিনিধিরা ওই অফিস সহকারীর প্যান্টের এক পকেট থেকে নার্সদের কাছ থেকে নেয়া ঘুষের ৩৬ হাজার টাকা ও প্যান্টের অন্য পকেট থেকে আরো ২৭ হাজার ৩২ টাকা এবং তল্লাশি চালিয়ে অফিসের আলমিরা থেকে আরো ৭০ হাজার টাকা জব্দ করেন।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় টাঙ্গাইলের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, নার্সদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই অফিস সহকারী কাজী গোলাম মোস্তফা খোকনকে আটক করে দুদক আইনের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নার্সদের কাছ থেকে ৩৬ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার কথা স্বীকার করলেও তার কাছ থেকে জব্দ করা অতিরিক্ত ৯৭ হাজার ৩২ টাকার বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি কাজী গোলাম মোস্তফা। অভিযানে অংশ নেয়া দুদকের উপসহকারী পরিচালক রাজু মো: সারওয়ার হোসেন বাদি হয়ে আটক অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর তাকে দুপুরে জামালপুর জেলা জজ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।