গাইবান্ধার পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গাইবান্ধার পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুাল। বিচারপতি মো: শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত চারটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন।
আসামিরা হলেন মো: রঞ্জু মিয়া, আবদুল জব্বার, মো: জাফিজার রহমান খোকা, মো: আবদুল ওয়াহেদ মণ্ডল (৬২) ও মো: মমতাজ আলী বেপারি মমতাজ। এদের মধ্যে আসামি মো: রঞ্জু মিয়া গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। বাকিরা পলাতক রয়েছেন। এ ছাড়া অপর আসামি আজগর হোসেন খান মারা গেছেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল। আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবুল হাসান। রায় ঘোষণার পর প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে রাষ্ট্রপক্ষ সক্ষম হয়েছে। তাদের কৃত অপরাধের বিষয় বিবেচেনা করে আদালত মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন। এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।
আবুল হাসান বলেন, এই মামলার একজন আসামি রঞ্জু মিয়ার বয়স ১৯৭১ সালে ছিল ১৪ বছর। বাকি আসামিদের বিরুদ্ধেও আনা অভিযোগের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক ছিল না। রাজনৈতিক রেষারেষিতে তাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনা হয়েছে। এ রায়ে আমরা সংক্ষুব্ধ। আশা করি উচ্চ আদালতে আপিল করলে আসামিরা খালাস পাবেন।
গত ২১ জুলাই এ মামলাটি শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়। আসামিরা গাইবান্ধা সদরের নান্দিদা ও ফুলবাড়ি গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন করে ২০১৬ সালের ২১ ডিসেম্বর প্রতিবেদন প্রকাশ করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আসামিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা-গণহত্যা, ধর্ষণ, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, বাড়িঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ, ভয়-ভীতি ও আতঙ্ক ছড়িয়ে হিন্দু সম্প্রদায়কে ধর্মান্তর ও দেশান্তরে বাধ্য করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি অভিযোগ আনা হয়। আসামিদের সবাই জামায়াতে ইসলামীর সক্রিয় কর্মী বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
২০১৭ সালের ১২ মার্চ প্রসিকিউশন এ মামলার অভিযোগ দাখিল করে। প্রসিকিউশনের অভিযোগ আমলে নিয়ে শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ মে চার অভিযোগে মামলার অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।