১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শরীয়তপুরে আ’লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২৫

-

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুরের চিতলিয়ায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের শরীয়তপুর সদর ও মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত দুইজনকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এলাকার পরিস্থতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পালং মডেল থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও চিতলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছালাম হাওলাদার এবং চিতলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন হাওলাদার গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ দিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছে। এরই জেরে গত গত ৮ অক্টোবর দুই পক্ষের মধ্যে হামলা, পাল্টা হামলা ও মামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে পুনরায় গতকাল সোমবার সকালে চিতলিয়া বাজারে গেলে উভয় গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মারামারি হয়। এ খবর দুই গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে উভয় গ্রুপ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। জালাল খান (৪৫), রেহানা বেগম (৩৮), স্বর্ণা আক্তার (১৪), দবির বাঘা (৪০), মফেজ সরদার (৪০), জুলহাস খাঁ (৫০), নেছার বেপারি (৪২), মজিবর সরদার (৫৫), ওমর খাঁ (৬৫) এবং সালাম হালাদারের সমর্থক মান্নান বেপারি (৫৫), সফিক বেপারি (২২), এসকেন খাঁ (৩৮), হবি হাওলাদার (২৫), মজিবুর হাওলাদার (৬০), সুজন হাওলাদার (২৬), দৌলত খাঁ (৬২), সুমন হাওলাদার (২৬), হাবিব হাওলাদার (৪০), বাদশা সরদার (৪০) ও জিয়া হাওলাদারসহ (৪২) উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। খবর পেয়ে পালং মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। আহতদের শরীয়তপুর সদর ও মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত জালাল খাঁ ও তার মেয়ে স্বর্ণা আক্তারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
হারুন হাওলাদার জানান, গত ৮ অক্টোবর শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলিয়া ইউনিয়নের কাশিপুর নেছারিয়া দাখিল মাদরাসার নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করতে যায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু। উদ্বোধন শেষে চেয়ারম্যান ছালাম হাওলাদারের সমর্থকেরা আমার সমর্থক আলী একাবর খাঁ ও তার স্ত্রীকে বাড়িতে গিয়ে মারধর করে। এ নিয়ে মামলা হয়। সে মামলায় তার লোকজন জামিনে এসে গত রোববার বিকেলে মোটরসাইকেল মোহরা দেয়। গতকাল সকালে আমার সমর্থকেরা চিতলিয়া বাজারে গেলে সালাম হাওলাদারের সমর্থকেরা আমার ১০-১৫ জন সমর্থককে বেদম মারধর করে। আমরা সালাম হাওলাদারের সমর্থকদের ওপর হামলা করি নাই এবং কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে নাই।
সালাম হাওলাদারের ভাই জেলা পরিষদ সদস্য সাখাওয়াৎ হোসেন হাওলাদার জানান, গত ৮ অক্টোবর স্থানীয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু কাশিপুর মাদরাসা ভবন উদ্বোধন শেষে সেখান থেকে সালাম হাওলাদারের সমর্থকেরা মিটিং শেষে বাড়ি যাওয়ার সময় হারুন হাওলাদারের সমর্থকেরা সালাম হাওলাদারের সমর্থক দৌলত খাঁকে মারধর করে। এর পর গতকাল সকালে সালাম হাওলাদারের সমর্থক মান্নান বেপারির ছেলে সফিক বেপারি চিতলিয়া বাজারে মাছ কিনতে গেলে হারুন হাওলাদারের লোকজন তাকে মারধর করে। পরে এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে আমাদের অন্তত ১০-১২ জন লোক আহত হয়।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আসলাম উদ্দিন বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছে।
এ বিরোধের জেরে বাজারে মাছ কিনতে গেলে এক পক্ষ অপর পক্ষের ওপর হামলা করলে সংঘর্ষ বাধে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলা হলে আমরা পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।


আরো সংবাদ



premium cement