২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

রংপুর-৩ উপনির্বাচন স্বামীকে মিথ্যা আসামি বানিয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে : রিটা রহমান

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনের বিএনপির প্রার্থী রিটা রহমান : নয়া দিগন্ত -

জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে প্রচারণার দ্বিতীয় দিনে মিথ্যা প্রচারণার অভিযোগ তুললেন বিএনপির প্রার্থী রিটা রহমান। তার অভিযোগÑ তার স্বামী মেজর (অব:) খায়রুজ্জামানকে বঙ্গবন্ধু ও জেলহত্যা মামলার মিথ্যা আসামি বানিয়ে একটি পরিকল্পিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যা মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। তিনি বলেন, আইয়ুব খানের সময়ে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতারের পর তার পরিবারকে বাসা ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ এলে তাদের কেউ বাসা না দিলেও আমার শ্বশুর বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে নিজের বাড়িতে তুলেছিলেন।
গতকাল দুপুরে নগরীর শিমুলবাগ কমিউনিটি সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেনÑ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সামসুজ্জামান সামু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান লাকু, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক লিটন পারভেজ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সামসুল হক ঝন্টু, যুগ্ম সম্পাদক শাহ্ জিল্লুর রহমান, মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জহির আলম নয়ন প্রমুখ। অন্য দিকে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রইচ আহম্মেদসহ জেলা ও মহানগরের অন্যান্য নেতার আদালতে হাজিরা থাকায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হতে পারেননি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সাবেক মন্ত্রী মরহুম মশিউর রহমান যাদু মিয়ার কন্যা রিটা রহমান সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, আমি সংবাদমাধ্যমের কাছে একটি অন্যায়, একতরফা, ভিত্তিহীন অপপ্রচারের বিরুদ্ধে নালিশ করতে এসেছি। সেটি হলোÑ আমার স্বামী মেজর (অব:) খায়রুজ্জামান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও জেলহত্যা মামলার আসামি নন; কিন্তু বারবার আমার স্বামীর বিরুদ্ধে ওই মামলার আসামি বলে আমার বিরুদ্ধে প্রহসনমূলক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভিত্তিহীন প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
তিনি তার বক্তব্যের সপক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তথ্য দিয়ে বলেন, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে খায়রুজ্জামান ভারতের আহম্মেদাবাদ নগরে এএইচকিউ প্রেরিত ইন সার্ভিস ট্রেনিংয়ে ছিলেন, যার কারণে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মোহাম্মদ খায়রুজ্জামানকে চার্জশিটভুক্ত করা হয়নি, যার রেকর্ড বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ফাইল খুললেই পাওয়া যাবে। তা সত্ত্বেও খায়রুজ্জামানকে ১৯৯৬ সালের ১৩ আগস্ট উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গ্রেফতার করা হয়েছিল।
বিএনপি নেত্রী রিটা রহমান বলেন, তিন বছর সাত মাস আমার স্বামীকে কোনো স্পেসেফিক চার্জ ছাড়াই শ্যোন এরেস্ট দেখিয়ে কারারুদ্ধ করে রাখা হয় তখন। এ সময় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল খায়রুজ্জামানকে পারসন অব কনসিয়েন্সেস বিবেকের বন্দী ঘোষণা করে, যা তারা প্রতি ছয় মাসে একজনকে আখ্যায়িত করে থাকেন। বিষয়টি যখন গণমাধ্যমে আসে তখন তাকে জেলহত্যা মামলার আসামি করা হয়। এরপর বিচার সম্পন্ন হওয়ার পর পাঁচজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়, তাদের মধ্যে আমার স্বামী খায়রুজ্জামান একজন।
খায়রুজ্জামানের পিতা বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে দুঃসময়ে বাড়িভাড়া দিয়েছিলেন উল্লেখ করে রিটা রহমান বলেন, ১৯৫৪ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসন জারি হলে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয় এবং বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকারি বাড়ি খালি করার নির্দেশ দেয়া হয়। সে সময় বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে কেউ বাড়ি ভাড়া দিচ্ছিল না। তখন খায়রুজ্জামানের পিতা বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে তাদের বাড়িতে আনেন। কিন্তু অন্যায়ভাবে আমার স্বামী ও আমার বিরুদ্ধে নানা রকম ভিত্তিহীন গুজব ছড়িয়ে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। তিনি সাংবাদিকদের কাছে এসব বিষয়ে ওয়াচডগের ভূমিকা আশা করেন। তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে জনগণকে মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হয়ে অন্যায়, অবিচার ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ধানের শীষে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান।

 


আরো সংবাদ



premium cement