২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সরকারের কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই : খন্দকার মোশাররফ

-

সরকারের কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, দেশের পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে খারাপের দিকে যাচ্ছে। গতকাল দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশের প্রতিটা প্রতিষ্ঠান সরকারের নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। গণতন্ত্রহীনতার কারণে সর্বত্র নৈরাজ্য বিরাজ করছে। এ অবস্থায় দেশ একটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, দেশ অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছে। সর্বক্ষেত্রে সর্বগ্রাসী অবক্ষয় ঘটেছে। সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই ভোট ডাকাতি করেছে আজকে তারাও বুঝতে পারছে কী পরিমাণ পরাজয় আওয়ামী লীগ ও সরকারের হয়েছে। তাদের এই পরাজয় শুরু হয়েছে গত ২৯ ডিসেম্বর রাতে। সরকার দেশ পরিচালনা করতে পারছে না, তারা সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী নবীন দলের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, কেন্দ্রীয় নেতা এ বি এম মোশাররফ হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, সরকারের কোথাও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। আপনারা দেখেন উচ্চ আদালত মানুষের সর্বশেষ যে জায়গা হাইকোর্ট সেখানে তিনজন বিচারপতিকে এই সরকারের সময়ে চিহ্নিত করা হয়েছে তারা দুর্নীতিবাজ। আজকে পুলিশের ডিআইজি, এসপি, পুলিশের ডিসিÑ দুর্নীতির দায়ে এই সরকারের হাতেই ধরা খেয়েছে। আপনি তাকান সরকারি সিভিল সার্ভিসের দিকে। দেখেছেন, একজন জেলা প্রশাসক (ডিসি) অপকর্মের জন্য প্রত্যাহার হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিচার চলছে। দুদকের দিকে তাকান সেখানে একজন পরিচালক দুর্নীতির দায়ে কারাগারে। কারাগারের ডিআইজিও আজকে কারাগারে। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই এত দুর্নীতি করছে তারা, কেউ না কেউ ধরা পড়ে যাচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক এই অধ্যাপক বলেন, সবচেয়ে দুর্ভাগ্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ দেশের শিক্ষিত দেশপ্রেমিক জনশক্তি তৈরি করার জন্য সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। এই বিদ্যাপীঠে কী পরিমাণ দুর্নীতি হচ্ছে, সরকারের কর্তৃত্বে এবং তাদের দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা কী পরিমাণ যে লুটপাট-অনিয়ম হচ্ছেÑ আপনারা ইদানীংকালে পত্রপত্রিকায় তা দেখছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া ভর্তি হতে পারেÑ এটা কোনোদিন কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। কত বড় অন্যায়, কত বড় দুর্নীতি। আপনারা দেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে ৮৬ কোটি টাকা চাঁদাবাজি করার দায়ে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বহিষ্কৃত। এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে অস্বাভাবিক বিষয়। বেগম খালেদা জিয়া দুই কোটি টাকার জন্য যদি জেলখানায় যায় তাহলে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শোভন ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বানী ৮৬ কোটি টাকা আত্মসাতের জন্য কবে জেলখানায় যাবে বলে প্রশ্ন করেন খন্দকার মোশাররফ?
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সঙ্কট গণতন্ত্রহীনতা। বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে থাকার কারণে আজকে বাংলাদেশকে গণতন্ত্রহীন ও বাংলাদেশে অলিখিত বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছে। সরকার তার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য দেশনেত্রীকে কারাগারে আটকিয়ে রেখেছে। দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। আমরা চাই অবিলম্বে তার মুক্তি দেয়া হোক। তিনি মুক্তি না পেলে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না। আমরা গণতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে তার মুক্তির জন্য কাজ করছি। একই সাথে আদালতের মাধ্যমে জামিনের চেষ্টা করছি। যদিও আমরা জানি, এই আদালত সরকারের হস্তক্ষেপের কারণে দেশনেত্রীকে মুক্তি দেবে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement