১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বয়স জালিয়াতি করে ময়মনসিংহ ডিসি অফিসে ১৭ জনকে নিয়োগ

এনআইডি সংশোধনে তদবির; ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ
-

বয়স জালিয়াতি করে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ১৭ জন কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস এ নিয়োগ সম্পন্ন করেন। এর আগে ২৭ অক্টোবর ২০১৬ সালে ৩৯টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়। এর মধ্যে ১৭ জনকে নিয়োগ দেয়া হয় যাদের বয়স বিজ্ঞাপিত বয়সের চেয়ে ২ থেকে ২৮ বছর পর্যন্ত বেশি। এমন জালিয়াতির ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। তাদের এমন অভিযোগের তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদের মাধ্যমে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রেরণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানতে চাইলে সদ্য বিদায়ী ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক ও নিয়োগ প্রদানকারী কর্মকর্তা ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস নয়া দিগন্তকে বলেন, নিয়োগে কোনো অনিয়ম করা হয়নি। বয়সের ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন দেখা হয়েছে। পরবর্তীতে তারা নির্বাচন কমিশনে জাতীয় পরিচয়পত্রে সংশোধনের আবেদন করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে ২৭ অক্টোবর দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে তিনটি পদে ৩৯ জন কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়। এতে আবেদনের শেষ সময় দেয়া হয় একই বছরের ৩০ নভেম্বর। আবেদনের শর্তে প্রার্থীর বয়স দেয়া হয় ১৮ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত। মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে সরকারি বিধি মোতাবেক বয়সসীমা ছিল ৩২ বছর। নিয়োগ প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ সালে নিয়োগ দেয়া হয়। যাদের মধ্যে ১৭ জন বয়স জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছেন।
সূত্র জানায়, অফিস সহায়ক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মো: বাবুল হোসেন। জাতীয় পরিচয়পত্র (৬১১৫২৪৭৫৬৭৬৮৭) অনুযায়ী তার জন্ম ৮ আগস্ট ১৯৮২। চাকরির আবেদনের শেষ দিনে তার বয়স ছিল ৩৫ বছর ২ মাস ২২ দিন। পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনে দেয়া বয়স সংশোধন আবেদনে ৮ আগস্ট ১৯৮২-র পরিবর্তে ৮ অক্টোবর ১৯৮৭ করার অনুরোধ জানান।
একই পদে নিয়োগ পেয়েছেন আব্দুস সাত্তার। জাতীয় পরিচয়পত্র (৬১১৫২৪৭৫৮০১৩৯) অনুযায়ী তার জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৮৪। চাকরির আবেদনের শেষ দিনে তার বয়স ছিল ৩৩ বছর ১০ মাস ২৯ দিন। নির্বাচন কমিশনে দেয়া বয়স সংশোধন আবেদনে ১ জানুয়ারি ১৯৮৪-র পরিবর্তে ৩ মে ১৯৮৯ করার অনুরোধ জানান।
একই পদে নিয়োগ পান শহীদুল ইসলাম। জাতীয় পরিচয়পত্র (৬১১৫২২৯৬২৮৯০৫) অনুযায়ী তার জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৮২। চাকরির আবেদনের শেষ দিনে তার বয়স ছিল ৩৫ বছর ১০ মাস ২৯ দিন। নির্বাচন কমিশনে দেয়া বয়স সংশোধন আবেদনে ১ জানুয়ারি ১৯৮২-র পরিবর্তে ১ জানুয়ারি ১৯৯০ করার অনুরোধ জানান।
নিয়োগ পেয়েছেন মাহমুদ আল ফয়সাল তামিম। জাতীয় পরিচয়পত্র (৬১১৬৫৬৯৯২৭৭৮৩) অনুযায়ী তার জন্ম ১০ ডিসেম্বর ১৯৮৬। চাকরির আবেদনের শেষ দিনে তার বয়স ছিল ৩০ বছর ১১ মাস ২০ দিন। নির্বাচন কমিশনে দেয়া বয়স সংশোধন আবেদনে ১০ ডিসেম্বর ১৯৮৬ -র পরিবর্তে ১ মার্চ ১৯৯০ করার অনুরোধ জানান।
নিয়োগ পেয়েছেন শিহাব হোসেন মানিক। জাতীয় পরিচয়পত্র (৬১১৫২৬৭৩৯৪৫৭৯) অনুযায়ী তার জন্ম ১৯ অক্টোবর ১৯৮৭। চাকরির আবেদনের শেষ দিনে তার বয়স ছিল ৩০ বছর ১ মাস ১১ দিন। নির্বাচন কমিশনে দেয়া বয়স সংশোধন আবেদনে ১৯ অক্টোবর ১৯৮৭ -র পরিবর্তে ৩০ জুন ১৯৮৮ করার অনুরোধ জানান।
একই পদে নিয়োগ পেয়েছেন শামছুল আলম। জাতীয় পরিচয়পত্র (৬১২৫২০৬১৪৪২৯০) অনুযায়ী তার জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৭৭। চাকরির আবেদনের শেষ দিনে তার বয়স ছিল ৪০ বছর ১০ মাস ২৯ দিন। নির্বাচন কমিশনে দেয়া বয়স সংশোধন আবেদনে ১ জানুয়ারি ১৯৭৭-র পরিবর্তে ১ জানুয়ারি ১৯৮৮ করার অনুরোধ জানান। নিয়োগ পেয়েছেন ওবায়দুর ইসলাম। জাতীয় পরিচয়পত্র (৬১১৫২৪৭৫৬৭১১৬) অনুযায়ী তার জন্ম ৩১ ডিসেম্বর ১৯৮২। চাকরির আবেদনের শেষ দিনে তার বয়স ছিল ৩৪ বছর ১০ মাস ৩০ দিন। ১ জানুয়ারি ১৯৮৭ নিয়োগ পেয়েছেন আবুল কাশেম। জাতীয় পরিচয়পত্র (৬১১৫২৯৪৪৮৩৬০৬) অনুযায়ী তার জন্ম ১৬ মার্চ ১৯৬৪। চাকরির আবেদনের শেষ দিনে তার বয়স ছিল ৫৩ বছর ৮ মাস ১৪ দিন। নিয়োগ পেয়েছেন জোবায়ের আলম খান। জাতীয় পরিচয়পত্র (৪৬০৫৪৩৭২৩৭) অনুযায়ী তার জন্ম ১১ এপ্রিল ১৯৮৫। চাকরির আবেদনের শেষ দিনে তার বয়স ছিল ৩২ বছর ৭ মাস ১৯ দিন। নিয়োগ পেয়েছেন ওমর ফারুক। জাতীয় পরিচয়পত্র (৬১১৫২৪৭৫৭০৬৬৩) অনুযায়ী তার জন্ম ৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২। চাকরির আবেদনের শেষ দিনে তার বয়স ছিল ৩৫ বছর ৯ মাস ২২ দিন। নিয়োগ পেয়েছেন একাব্বর হোসেন আকন্দ। জাতীয় পরিচয়পত্র (৬১২৬৫০১৮০৩১৭৮) অনুযায়ী তার জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৭৮। চাকরির আবেদনের শেষ দিনে তার বয়স ছিল ৩৯ বছর ১০ মাস ২৯ দিন। নিয়োগ পেয়েছেন আকরাম হোসেন। জাতীয় পরিচয়পত্র (৬১২৫২০৩১২২৯৭৪) অনুযায়ী তার জন্ম ১ মার্চ ১৯৬৯। চাকরির আবেদনের শেষ দিনে তার বয়স ছিল ৪৮ বছর ৮ মাস ২৯ দিন। নিয়োগ পেয়েছেন আবদুল কাদির। জাতীয় পরিচয়পত্র (৬১১৫২৪৭৫৬৮৪৯৩) অনুযায়ী তার জন্ম ১ অক্টোবর ১৯৬৫। চাকরির আবেদনের শেষ দিনে তার বয়স ছিল ৫২ বছর ১ মাস ২৯ দিন।
নিরাপত্তা প্রহরী পদে নিয়োগ পেয়েছেন রুহুল আমিন। জাতীয় পরিচয়পত্র (১৯৮৬৬১১৫২৬৭০০০০৫৫) অনুযায়ী তার জন্ম ১৫ জুলাই ১৯৮৬। চাকরির আবেদনের শেষ দিনে তার বয়স ছিল ৩১ বছর ৪ মাস ১৫ দিন। নিয়োগ পেয়েছেন আব্দুল মান্নান। জাতীয় পরিচয়পত্র (৬১১৬৫৬৯৯৩২৮১২) অনুযায়ী তার জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৮০। চাকরির আবেদনের শেষ দিনে তার বয়স ছিল ৩৭ বছর ১০ মাস ২৯ দিন। নিয়োগ পেয়েছেন আব্দুল কাদের জিলানী। জাতীয় পরিচয়পত্র (৬১১৬৫৬০০০৮৫০১০) অনুযায়ী তার জন্ম ১ ডিসেম্বর ১৯৮৩। চাকরির আবেদনের শেষ দিনে তার বয়স ছিল ৩৩ বছর ১১ মাস ২৯ দিন।
পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন লক্ষ্মী রানী। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৮৪। চাকরির আবেদনের শেষ দিনে তার বয়স ছিল ৩২ বছর ১০ মাস ২৯ দিন। অবৈধভাবে নিয়োগ দেয়ার পর এসব কর্মচারীর বয়স জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের জন্য প্রক্রিয়া শুরু করে। এই সংশোধনের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে অনৈতিকভাবে এনআইডি বিভাগে একটি তালিকা পাঠানো হয়।


আরো সংবাদ



premium cement
মাত্র ২ বলে শেষ পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড প্রথম টি-টোয়েন্টি জেলে কেজরিওয়ালকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দলের ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা তোকে যদি এরপর হলে দেখি তাহলে খবর আছে, হুমকি ছাত্রলীগ নেতার বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি : প্রধানমন্ত্রী দাওয়াতী ময়দানে সকল নেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেল শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে বিমানবন্দরের টার্মিনালে ঢুকে গেলো বাস, ইঞ্জিনিয়ার নিহত গোয়ালন্দে প্রবাসীর স্ত্রী-সন্তানকে মারধর, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

সকল