২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গভীর রাতে আশুলিয়ায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশে স্থাপনা ভাঙচুর

-

আশুলিয়ায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ ভবনের প্রবেশ গেটের দু’পাশের জবর দখলকৃত স্থাপনায় ভাঙচুর চালানো হয়েছে। তবে কে বা কারা এ ভাঙচুর করেছে এ সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেনি কেউ।
দীর্ঘ দিন ধরে এ জমি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দখলে রয়েছে। এ স্থানে আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র পিএইচএ ভবনে প্রবেশের জন্য সুবিশাল গেট বানিয়েছিল গণস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। গত বছর ওই গেটটি ভেঙে তার দু’পাশের জমি দখল করে নেন আওয়ামী লীগের সাভার উপজেলা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন। দখলকৃত জমিতে দু’টি অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে তা ভাড়ায় দেয়া হয়। এ ঘটনায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত আনুমানিক আড়াইটায় বুলডোজার ও ভেকু নিয়ে অজ্ঞাত ৫০ থেকে ৬০ জন লোক ওই সব স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়।
এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী এবং ক্ষতিগ্রস্ত হোটেল ফুড প্যালেস অ্যান্ড পার্টি সেন্টারের ম্যানেজার আজহারুল ইসলাম বলেন, রাত আড়াইটায় তার হোটেলে ৫০ থেকে ৬০ জন লোকের দল বুলডোজার ও ভেকু দিয়ে স্থাপনায় হামলা চালায়। এতে হোটেলের অবকাঠামোসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। পরে সেখানে হোটেলের মালিক সাজ্জাদ হোসেন সাজেদ লোকজন নিয়ে এলে ভাঙচুরকারীরা একজনকে গাছের সাথে বেঁধে রেখে বেদম মারধর করে। তবে হামলাকারীদের কাউকে তারা চিনতে পারেননি।
জানা গেছে, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সাথে আওয়ামী লীগ নেতা নাসির উদ্দিনের জমিসংক্রান্ত মামলা ও অনেক ঝামেলা রয়েছে। এ বিরোধকে কেন্দ্র করেই হয়তোবা কোনো পক্ষ এ ঘটনা ঘটাতে পারে বলেও জানান হোটেলের মালিক সাজ্জাদ হোসেন।
সংবাদ পেয়ে সকালে আশুলিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তবে কে বা কারা এ হামলা করেছে এ ব্যাপারে কোনো লিখিত অভিযোগ থানায় কোনো পক্ষই দায়ের করেনি বলে জানিয়েছেন থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মাসুদ পারভেজ।
এ ব্যাপারে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিচালক সাইফুল ইসলাম শিশির বলেন, পিএইচএ ভবনের গেট ও দু’পাশের জমি দীর্ঘ দিন যাবত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ভোগদখল করে আসছে। গত বছর নাসির উদ্দিন ও মোহাম্মদ আলী গংরা একযোগে হামলা চালিয়ে পিএইএ ভবনের গেটটি ভেঙে ফেলে এবং দু’পাশের জমি জোরপূর্বক দখলে নেয়। এ সময় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিক্যাল কলেজের আবাসিক নারী হলে হামলা চালিয়ে তাদের বের করে দেয়া হয়। ওই শিক্ষার্থীদের মালামাল লুট করে নেয়া হয়। সে সময় পিএইচএ ভবনে হামলা চালিয়ে লাখ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ওই ঘটনায় আদালতে মামলা করে। পাশাপাশি জমিসংক্রান্তও একটি মামলা দায়ের করে। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মীর মুর্তজা আলী বলেন, মামলায় হেরে যাওয়ার ভয়ে নাসির উদ্দিন ও মোহাম্মদ আলী গংরা একের পর এক সাজানো মামলা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের হয়রানি করছে। তারা একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, চিকিৎসক, বয়োবৃদ্ধ ট্রাস্টি ডা: জাফরুল্লাহসহ প্রতিষ্ঠানের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মামলা দিয়ে হয়রানি ও তাদের সুনাম ক্ষুণেœর চেষ্টা করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশকে ম্যানেজ করে তারা এ অবৈধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে।
আশুলিয়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মাসুদ পারভেজ এ ব্যাপারে জানান, ভাঙচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কোনো পক্ষই এ সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ থানায় দেয়নি।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement