১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সরকারের দুঃশাসনে দেশে কবরের নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে : রিজভী

-

ক্ষমতাসীন সরকার বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দী রেখে তার জামিনে বাধা সৃষ্টি করছে জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, রাষ্ট্রের কোনো মানুষই এখন নিরাপদে নেই। জানমালের সুরক্ষা চরম বিপদাপন্ন। সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসনের কবলে পড়ে দেশজুড়ে গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, ধর্ষণ, ব্যভিচার এখন মহামারী আকার ধারণ করেছে। তিনি গতকাল দুপুরে এক বিক্ষোভ মিছিল শেষে এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারো বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মিছিল শেষে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা সাজানো মামলায় কারাবন্দী রেখে এবং তার জামিনে বাধা সৃষ্টি করে চলেছে ক্ষমতাসীনেরা। তারা আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের রাতে ভোট চুরি ও জবরদস্তির মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী অবৈধ আওয়ামী সরকার নিশ্চিন্ত থাকতে পারছে না। কারণ একটা গণতান্ত্রিক দেশে গণতন্ত্রকে কবরস্থ করে বর্তমান অবৈধ সরকার অতিমাত্রায় বেপরোয়া ও নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, বর্তমান অবৈধ শাসকগোষ্ঠী জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কব্জায় নিয়ে সম্পূর্ণরূপে দস্যুবৃত্তির নীতিতে দেশ পরিচালনা করছে বলেই দেশে কবরের নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। কিন্তু গণতন্ত্রের সাথে বেগম জিয়ার সম্পর্ক অবিচ্ছেদ ও অবিভাজ্য। সুতরাং গণতন্ত্রের নেত্রীকে বন্দী করে প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন পূরণ হবে না। জনগণের মিলিত স্রোত বেগবান হয়ে দেশনেত্রীর মুক্তি নিশ্চিত হবে ইনশা আল্লাহ।
রিজভী আরো বলেন, দুঃশাসনের কবলে নারী ও শিশুদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা এখন প্রকট হয়ে উঠেছে। দেশ থেকে ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে সমাজবিরোধীদের দাপট বৃদ্ধি পেয়েছে। চার দিকে লুটপাট ও সমাজের সর্বত্র বিশৃঙ্খলার রমরমা রাজত্ব বিরাজমান। আইনের শাসন না থাকায় মানুষ ন্যায়বিচার পাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ তাদের পুরনো বাকশালী ঐতিহ্যের ধারায় দেশ থেকে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়ায় মানুষ বর্তমান সরকারের দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে এখন ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত হচ্ছে। সরকারের প্রতিহিংসায় বেগম জিয়া কারাবন্দী থাকলেও তিনি দেশের মানুষের কাছে এখন আরো জনপ্রিয় নেত্রী হয়ে উঠেছেন। তিনি মানুষের কাছে গণতন্ত্রের প্রতীকে অভিষিক্ত হয়েছেন। এ জন্যই শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী নেতাদের বুকে তীব্র জ্বালা। আমি বিএনপির পক্ষে আবারো আহ্বান জানাচ্ছি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, জামিনে বাধা প্রদান করবেন না। তাকে তার পছন্দ অনুযায়ী বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ দিতে হবে।
মিছিলে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, মহানগর উত্তরের ফখরুল ইসলাম রবিন, গাজী রেজওয়ান হোসেন রিয়াজ, দক্ষিণের এসএম জিলানী, নজরুল ইসলাম, রফিক হাওলাদার, সাবেক নেতা আনু মোহাম্মদ শামীম আজাদ, ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল, কাদের হালিমী, ইলিম মোহাম্মদ নাজমুল, শাহাবুদ্দিন মুন্না, আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, আবুল কালাম আজাদ, জেড আই কামাল, সরদার মো: নূরুজ্জামান, আবদুল্লাহ আল মামুন সহ স্বেচ্ছাসেবক দলের শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
এ ছাড়া গতকাল নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাকা মহানগর পশ্চিম ও উত্তর শাখার এক কর্মিসভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী তার বক্তব্যে বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে ছাত্রদল অত্যন্ত সুসংগঠিত। তার সুচিন্তিত দিকনির্দেশনা ও সিদ্ধান্তেই ছাত্রদল পরিচালিত হচ্ছে। ছাত্রদলের গৌরবময় অতীত কর্মকান্ডের ধারাবাহিকতা এখনো অব্যাহত আছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন বেগবান করতে ছাত্রদলের নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীরা এখনো ঐক্যবদ্ধ। সভায় মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন রুবেল, সাখাওয়াত হোসেন সৈকত, কাজী মো: ইলিয়াছ, এস এম সায়মন কবির শাওন, মো: মনির হোসেন, মো: জিয়াউল হক জিয়া, শহিদুল ইসলাম (নয়ন), রাহেল খান, রাফসান হোসেন বিভিন্ন থানা শাখার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement