এ মুহূর্তে বন্যায় কৃষিতে ক্ষতি কম হবে : কৃষিমন্ত্রী
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ১৬ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, এবারের বন্যা এমন কোনো বন্যা নয়। এ বন্যা আমাদের জন্য আশীর্বাদ, আবার খুব খারাপ হলে অভিশাপ। স্বাভাবিক বন্যা দেশের জন্য, চাষিদের জন্য কল্যাণকর ও মঙ্গলজনক। এই মুহূর্তে বন্যায় তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ মাঠে এখন তেমন কোনো ফসল নেই। এ দিকে ফিলিপাইনে সিদ্ধ চাল রফতানির বাজার খুলছে। বাংলাদেশের চাল কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে দেশটি। দেশের কৃষকদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে সরকার ইতোমধ্যে চাল রফতানির অনুমতি দিয়েছে।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে চাল রফতানিকারকদের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কৃষিমন্ত্রী কথা বলেন। এ বৈঠকের সময় সচিবালয়ে কৃষিমন্ত্রী মো: আব্দুর রাজ্জাকের সাথে সাক্ষাৎ করে ফিলিপাইনের সরকারের পক্ষে একটি প্রতিনিধিদল চাল কেনার আগ্রহের কথা জানায়।
বন্যার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের বন্যার দরকার আছে দু’টি কারণে- আমরা যে সেচব্যবস্থায় গেছি, নিচ থেকে পানি তুলে খরচ করছি। এটা পূরণ করতে হবে। বন্যা না হলে, বৃষ্টি না হলে এটা কিভাবে হবে। পানির স্তর আস্তে আস্তে নিচে নেমে যাচ্ছে। আরেকটা হলো, বন্যার পানির সাথে অনেক পলিমাটি আসে, যেটার মধ্যে অনেক নিউট্রিয়ান্ট, অনেক সার আছে। এটাকে ছোট করে দেখার কোনো কারণ নেই।
বাংলাদেশ থেকে চাল আমদানিতে ফিলিপাইন আগ্রহ প্রকাশ করেছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ফিলিপাইন থেকে একটি পার্টি এসেছে, তারা চাল আমদানিতে দেশটির সরকারকে সহযোগিতা করে।
অনেক মিলার-ব্যবসায়ীদের গুদামে যথেষ্ট চাল রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, চালের দাম খুবই কম। এ জন্য আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। আমাদের কৃষকেরা সত্যিকার অর্থে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। ধান চাষাবাদ করে তাদের কোনো লাভ হচ্ছে না। এই প্রেক্ষিতে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিছু চাল আমরা বিদেশে রফতানি করব। কী পরিমাণ রফতানি করা যাবে সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে চালের উদ্বৃত্ত আছে। ১০ লাখ টন চাল রফতানি করলেও আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু যেকোনো সময় বন্যা হতে পারে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ হতে পারে। সে প্রেক্ষিতে আমরা গ্র্যাজুয়ালি যাবো। ওরা এক লাখ টন নিতে চাচ্ছে। ফিলিপাইন সরকারও আমাদের সরকারের কাছ থেকে চাল কিনে নিতে চাচ্ছে। চাল রফতানিতে কৃষকপর্যায়ে কোনো প্রভাব পড়বে কি না এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, যদি পাঁচ লাখ টন চাল রফতানি করতে পারি অবশ্যই দামের ওপরে প্রভাব পড়বে। তিনি বলেন, এবার বাংলাদেশে চালের উৎপাদন, বিশেষ করে বোরোর উৎপাদন বেশি হয়েছে। বিগত কয়েকটি সিজন আউশ-আমন। আমনে এক কোটি ৪০ লাখ টন টার্গেট ছিল, উৎপাদন হয়েছে এক কোটি ৫৩ লাখ টন। এখন আমাদের অনেক মিলার-ব্যবসায়ীর গুদামে যথেষ্ট চাল রয়েছে। এবার বোরোতে উৎপাদন ভালো হওয়ায় অস্বাভাবিকভাবে চালের দাম কমে যায়। আমার বলতে কোনো দ্বিধা নেই, এ মুহূর্তে চালের দাম খুবই কম। এ জন্য আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। আমাদের কৃষক-চাষিরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। ধান চাষাবাদ করে তাদের কোনো লাভ হচ্ছে না। এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, কিছু চাল আমরা বিদেশে রফতানি করব।
ফিলিপাইনের ব্যবসায়ীরা কোন্ ধরনের চাল কিনতে চান জানতে চাইলে রশিদ গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, মাঝারি ধরনের আটাশ ও ঊনত্রিশ চালের ডিমান্ডই তাদের বেশি। সাথে সাথে হয়তো মিনিকেটও কিছু পরিমাণে চাল রফতানি করা যেতে পারে। দামের বিষয়ে জানতে চাইলে- এ ব্যবসায়ী বলেন, ‘তারা যে প্রাইস বলেছে, সরকার যদি সহায়তা না করে তা হলে তাদের প্রাইসের সাথে সমন্বয় করা কঠিন হয়ে যাবে। কারণ অন্যান্য দেশে চালের দাম এখনও অনেক কম।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা