১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আন্দোলনে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুই দিন ধরে অচল পৌরসভা ৮০ মাস ধরে বেতনহীন ৩৫ হাজার জন; রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন ভাতা ও পেনশন দাবি

বকেয়া বেতনের দাবিতে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করেন পৌরসভার কর্মচারীরা : নয়া দিগন্ত -

রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে শতভাগ বেতন-ভাতাসহ পেনশন চালুর দাবি এবং ৩৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ৮০ মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় আন্দোলনে নেমেছে দেশের ৩২৮টি পৌরসভার জনবল। সারা বাংলাদেশ থেকে দাবি আদায়ে তারা এখন ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে দুই দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। দেশের ৩২৮টি পৌরসভা থেকে আসা কয়েক হাজার কর্মকর্তা ও কর্মচারী পৌরসভা ছেড়ে ঢাকায় দুই দিন ধরে অবস্থান নেয়ায় পৌরসভাগুলোতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
নেতারা জানান, শতকরা ৭৬ ভাগ পৌরসভাই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন দিতে পারছে না। পৌরসভার যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী অবসরে গেছেন, তাদের অবসরকালীন অর্থ পরিশোধ করতে পারছে না।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল আলীম মোল্যা জানান, পৌরসভার আয় পর্যাপ্ত না হওয়ায় অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন ৮০ মাস ধরে বকেয়া রয়েছে। যার ফলে আমাদের জীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। এসব পরিবার আজ মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমরা চাই, আমাদের বেতন-ভাতা পেনশন সুবিধা সব কিছুই সরকারি কোষাগার থেকে দেয়া হোক। আমাদের এই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
আব্দুল আলীম বলেন, পৌরসভার আয় থেকে আমাদের যে বেতন দেয়া হয়, তাতে আমরা সংসার চালাতে পারি না। তার ওপর বেতন বকেয়া থাকে, পেনশন নেই। এটা অমানবিক। তিনি বলেন, আমাদের ৩২৮টি পৌরসভার মধ্যে মাত্র ৩৩টি পৌরসভার বেতন-ভাতা নিয়মিত পরিশোধ করে। ৩৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তারা সরকারের কাছে এই বিষয়ে আশু সমাধান চান।
বিভিন্ন পৌরসভা থেকে আগত কর্মচারীরা বলেন, সরকার আমাদের চাকরি দেয়, শাস্তি দেয়, বদলি করে, শুধু ঠিক মতো বেতন দেয় না। সব কিছুই যদি সরকারি হয়, তাহলে বেতন কেন সরকারি হবে না? এমন প্রশ্ন এখন পৌরসভার জনবলদের। তারা বলেন, যদি দাবি আদায় না হয়, তাহলে কাফনের কাপড় বেঁধে রাজপথে নামতে হবে। আমরা রাষ্ট্রকে সেবা দেব, কিন্তু রাষ্ট্র আমাদের পারিশ্রমিক দেবে না, এটা হতে পারে না। এক দেশে দুই নিয়ম চলতে পারে না। ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলায় কর্মরতরা সুযোগ-সুবিধা পাবে আমরাও স্থানীয় সরকারে কাজ করে কেন তা পাবো না।
আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, তাদের অনেকে ৮০ মাস পর্যন্ত বেতন ছাড়া অফিস করছেন। সর্বনিম্ন পাঁচ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকারের কাছে বকেয়া বেতন দ্রুত পরিশোধের দাবি জানান। ইউনিয়ন পরিষদের কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ বেতন দেয় সরকার। একই নিয়মে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালিত হয়, তাহলে বেতনের ক্ষেত্রে কেন দুই নীতি? আমরাও তাদের মতো সরকারি বেতন চাই।
তৃণমূল নেতারা বলেন, স্থানীয় সরকারের অন্যতম প্রাণ পৌরসভার জনবল আজ অনিশ্চয়তার মাঝে জীবনযাপন করছে। তাদের চাকরিতে কোনো পেনশনপ্রথা নেই। ফলে চাকরিজীবন শেষে শূন্য হাতে ফিরে যেতে হয়। বেশির ভাগ পৌরসভায় বছরের পর বছর বেতন-ভাতা নেই। সুশাসনের অভাবে আজ এই পরিস্থিতির উদ্ভব।
অ্যাসোসিয়েশন ও সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের মোট ৩২৭টি পৌরসভার মধ্যে ২২৬টিতেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাকি আছে। পৌরসভাগুলোর ৩২ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন পরিশোধ করতে বছরে প্রয়োজন প্রায় ৯৪৭ কোটি টাকা। এই অর্থের মাত্র ০.৪৫ শতাংশ দেয় সরকার, বাকি অংশ পরিশোধ করার কথা পৌরসভার নিজস্ব আয় থেকে। কিন্তু নিজস্ব আয় বাড়ানোর কোনো উদ্যোগ নেই পৌরসভায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের।


আরো সংবাদ



premium cement
বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা করা হয়নি : প্রধানমন্ত্রী দাওয়াতী ময়দানে সকল নেতাদের ভূমিকা রাখতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেল শ্রমিকদের মাঝে ইসলামের আদর্শের আহ্বান পৌঁছাতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান ঢাকা শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে বিমানবন্দরের টার্মিনালে ঢুকে গেলো বাস, ইঞ্জিনিয়ার নিহত গোয়ালন্দে প্রবাসীর স্ত্রী-সন্তানকে মারধর, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন সিরিয়ায় আইএস-এর হামলায় সরকার সমর্থক ২০ সেনা সদস্য নিহত ফরিদপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু জনসমর্থনহীন সরকার জনগণের আওয়াজ নির্মমভাবে দমন করে : রিজভী সরিষাবাড়ীতে স্কুলছাত্র হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি

সকল