রাজশাহীতে স্কুলছাত্রী উদ্ধার অপহরণ নিয়ে ধূম্রজাল
- রাজশাহী ব্যুরো
- ১২ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
রাজশাহীতে এক স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। মেয়েটি বলছে, একদল লোক তাকেসহ তিন স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে গাজীপুর থেকে রাজশাহী এনেছে। মাইক্রো বাস থেকে লাফ দিয়ে সে পালিয়েছে। অন্য দু’জনকে নিয়ে গেছে অপহরণকারীরা। কিন্তু পুলিশ তার এ বক্তব্যের তেমন সত্যতা পাচ্ছে না। ফলে এই ‘অপহরণের’ ঘটনা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত হতে কাজ করছে পুলিশ।
বুধবার রাত ৮টার দিকে রাজশাহী নগরীর তালাইমারী মোড়ের একটি ফার্মেসি দোকানের সামনে গিয়ে বসে পড়ে ১৪ বছরের ওই মেয়েটি। মেয়েটি পরিবারের সাথে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার শান্তনগর এলাকায় থাকে। স্থানীয় মাওনা বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সে। তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার দমদমা গ্রামে। মেয়েটির বাবা-মা গাজীপুরে পোশাক কারখানায় কাজ করেন।
ফার্মেসি দোকানে গিয়ে মেয়েটি বলে, ‘তাকে ও তার স্কুলের আরো দুই ছাত্রীকে সকালে স্কুল যাওয়ার পথে জোর করে সাদা রঙের একটি বড় মাইক্রো বাসে তুলে নেয়া হয়। এরপর তারা অচেতন হয়ে পড়ে। রাজশাহী আসার পর তার জ্ঞান ফিরে। তালাইমারী মোড়ে গাড়িটি যানজটে পড়লে সে লাফ দেয়। তবে অপর দুই স্কুলছাত্রীকে গাড়িতে করে নিয়ে চলে যাওয়া হয়েছে। তারাও তার মতো স্কুলের ইউনিফর্ম পরে আছে। আর গাড়িতে অন্তত ছয়জনের বেশি অপহরণকারী রয়েছে বলেও জানায় সে।’
ঘটনা শুনে ওই স্কুলছাত্রীকে নগরীর মতিহার থানায় নিয়ে যান ফার্মেসি দোকানদার হাসিবুর রহমান চৌধুরী। এরপর রাজশাহী মহানগর পুলিশের মতিহার জোনের উপকমিশনার সাজিদ হোসেন ও মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন খান মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাদেরকেও একই কথা বলে মেয়েটি। তখন রাজশাহীর প্রতিটি চেকপোস্টে সাদা রঙের মাইক্রো বাস তল্লাশি শুরু হয়। একই সাথে ঘটনার বিষয়ে অবহিত করা হয় গাজীপুর জেলা পুলিশকে।
গাজীপুর পুলিশ বলছে, তিন স্কুলছাত্রীকে অপহরণের মতো কোনো ঘটনার খবর তারা পাননি। ঘটনাটি তাদের কাছে রহস্যজনক। কারণ রাজশাহীতে উদ্ধার মেয়েটি আরো যে দুই ছাত্রীর কথা বলেছে তারা অপহরণের শিকার হয়নি। ওই ছাত্রীরা অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। বৃহস্পতিবার তারা ক্লাস করেছে।
গাজীপুরের শ্রীপুর থানা পুলিশ জানায়, তিনটি মেয়ে অপহরণের শিকার হলে এলাকায় হুলস্থুল পড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সকালের এ ঘটনার খবর রাজশাহী পুলিশ না জানানো পর্যন্ত তারা জানতেই পারেননি। রাতে ঘটনা শুনেই রাজশাহীতে উদ্ধার মেয়েটির বাবাকে থানায় আনা হয়। তিনি অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় অপহরণের মামলা করেছেন। শ্রীপুরের আর কোনো ছাত্রী নিখোঁজ নেই।
রাজশাহীর মতিহার থানা পুলিশ জানায়, মেয়েটি তার কথায় এখনো অনড় রয়েছে। সে বলছে, তাদের তিনজনকে অপহরণ করে আনা হয়। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তবে এ নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, মেয়েটির ভাষ্য অনুযায়ী, রাজশাহীর প্রতিটি চেকপোস্টে সাদা রঙের মাইক্রো বাস তল্লাশি করা হয়েছে। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি। উদ্ধার হওয়া মেয়েটিকে তাদের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ও অভিভাবকেরা রাজশাহী এসে মেয়েটিকে নিয়ে যাবেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা