১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রথম দফাতেই ভালো দর পেয়েছে ডিএসসিসি কোরবানির পশুহাট

-

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীতে স্থাপিত অস্থায়ী পশুহাট ইজারায় প্রথম দফাতেই ভালো সাড়া পেয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। ১৪টি অস্থায়ী হাটের মধ্যে ১১টি হাটেই বেশি দর পড়েছে। এমনকি কোনো কোনো হাটে অনেক বেশি দর দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
গত বছর প্রাথমিক পর্যায়ে ১৩টি হাটের দরপত্র আহ্বান করে ডিএসসিসি। কিন্তু তিন দফা দরপত্র আহ্বান করেও মাত্র সাতটি হাটের ইজারা দিতে পেরেছিল তারা। আর বাকি ছয়টিতে তিনবারেও কোনো দরপত্র জমা দেয়নি ব্যবসায়ীরা। ফলে খাস আদায়ের জন্য দেয় ডিএসসিসি। কিন্তু এবার ১৪টি হাটের দরপত্র আহ্বান করা হয়। গতকাল প্রথমবারের মতো দরপত্র খোলা হয়। এতে দেখা যায় ১১টি হাটেই ভালো দর পড়েছে। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভা শেষে এসব হাটের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক মো: রাসেল সাবরিন।
দরপত্র মূল্যায়নে দেখা যায়, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সঙ্ঘের মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গার হাটের সরকারি মূল্য ছিল আট লাখ ২৭ হাজার ১৫৪ টাকা। এ হাটে তিনটি দরপত্র জমা পড়েছে। এ এস এম এন্টারপ্রাইজের আব্দুল লতিফ সর্বোচ্চ দর দিয়েছেন আট লাখ ৪০ হাজার টাকা। এ ছাড়া কামরুজ্জামান বাবুল ছয় লাখ এবং জাকির হোসেন পাঁচ লাখ টাকা দর দিয়েছেন। ঝিগাতলা হাজারীবাগ মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গার হাটের সরকারি মূল্য ছিল ৯৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৬৭ টাকা। এর বিপরীতে দু’টি দরপত্র জমা পড়েছে। দিলজাহান ভূঁইয়া ৯৮ লাখ টাকা এবং আবুল নাসের বাবু ৯৫ লাখ টাকা দর দিয়েছেন। লালবাগের রহমতগঞ্জ খেলার মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গার হাটের সরকারি মূল্য ছিল ১০ লাখ ৭০ হাজার ১২৩ টাকা। এ হাটে তিনটি দরপত্র জমা পড়েছে। রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির পক্ষে সহসভাপতি হাজী লতিফ মাহমুদ সর্বোচ্চ ১২ লাখ সাত হাজার ১৫০ টাকা, এস এম মাহবুব আমিন পাঁচ লাখ টাকা এবং মো: সেলিম চার লাখ টাকা দর দিয়েছেন। কামরাঙ্গীরচর ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির মোড় হতে দক্ষিণ দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গার হাটের সরকারি মূল্য ছিল পাঁচ লাখ ৬১ হাজার ৮০০ টাকা। এ হাটে তিনটি দরপত্র জমা পড়েছে। আবুল হোসেন সরকার সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ ৮০ হাজার টাকা, হাজী মো: সোলায়মান পাঁচ লাখ ৭০ হাজার টাকা দর উল্লেখ করেছেন। তবে আব্দুর রশিদ সরকার নামে একজন দরপত্র জমা দিলেও তিনি কোনো দর উল্লেখ করেননি। পোস্তগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গার হাটের সরকারি মূল্য ছিল ২৭ লাখ ১৫ হাজার ৩৬৭ টাকা। এ হাটে তিনটি দরপত্র জমা পড়ে। মইন উদ্দিন চিশতী সর্বোচ্চ ২৮ লাখ ৫ হাজার টাকা, মো: আসাদুজ্জামান ২৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং দেলোয়ার হোসেন দুলাল ২৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দর দিয়েছেন। মেরাদিয়া বাজারসংলগ্ন আশপাশের এলাকার খালি জায়গার হাটের সরকারি মূল্য ছিল ৭৮ লাখ ১৪ হাজার ১৪৫ টাকা। এ হাটে চারটি দরপত্র জমা পড়েছে। হাজী মো: শাহ আলম প্রায় দ্বিগুণ এক কোটি ৪০ লাখ ৫ হাজার টাকা দর দিয়েছেন। এ ছাড়া মাসুদ হাসান শামীম এক কোটি ৩৫ লাখ, ইব্রাহিম মিয়া ৭৮ লাখ ১৪ হাজার এবং কুদ্দুস খান ৬০ লাখ টাকা দর দিয়েছেন। ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সামসাবাদ মাঠসংলগ্ন আশপাশের এলাকার খালি জায়গার হাটের সরকারি মূল্য ছিল এক কোটি ৬১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। এ হাটে দু’টি দরপত্র জমা পড়েছে। মুরাদ হাসান সর্বোচ্চ এক কোটি ৬২ লাখ ৭৭ হাজার ৫১০ টাকা এবং ইমরান হোসেন এক কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার টাকা দর দিয়েছেন। লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব সংলগ্ন গোপীবাগ বালুর মাঠ ও কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গার হাটের সরকারি মূল্য ছিল ৪০ লাখ ২০ হাজার টাকা। এ হাটে চারটি দরপত্র জমা পড়েছে। এ হাটে সরকারি মূল্যের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দর উঠেছে। জাকির হোসেন সর্বোচ্চ এক কোটি ৮১ লাখ ৮১ হাজার ১৮১ টাকা দর দিয়েছেন। এ ছাড়া সহিদ উদ্দিন আহম্মেদ এক কোটি ১০ লাখ ৬০ হাজার, রফিকুল ইসলাম ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩৩৩ টাকা এবং সোহেল রানা ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দর দিয়েছেন। শনির আখড়া ও দনিয়া মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গার হাটের সরকারি মূল্য এক কোটি ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। মোশাররফ হোসেন সর্বোচ্চ এক কোটি ১২ লাখ টাকা, কাজী মুহাম্মদ বদরুল হুদা ৪০ লাখ টাকা এবং কামরুজ্জামান ৩২ লাখ টাকা দর দিয়েছেন। ধুপখোলা মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গার হাটের সরকারি মূল্য ৩২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। শামসুজ্জোহা ৩২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, হাসান আসকারী ৩২ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং জহিরুল ইসলাম এ্যাপোলো ৩২ লাখ ৩১ হাজার টাকা দর দিয়েছেন। ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউয়ারটেক মাঠসংলগ্ন আশপাশের এলাকার খালি জায়গার হাটের সরকারি মূল্য ছিল ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ফরহাদ ভূঁইয়া বাবু ৩৬ লাখ সাত হাজার, মো: জুয়েল ৩০ লাখ ও শাহাদত হোসেন ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা দর দিয়েছেন।
তবে তিনটি হাটে দরপত্র জমা পড়লেও সরকারি মূল্যের চেয়ে কম দাম পড়েছে। শ্যামপুর বালুর মাঠসহ আশপাশের এলাকার খালি জায়গার হাটটির সরকারি মূল্য ছিল ৯৮ লাখ ৫৮ হাজার ২৪৮ টাকা। এর বিপরীতে সিদ্দিকুর রহমান ৪৫ লাখ টাকা, তাজুল ইসলাম ৩৫ লাখ টাকা, কাজী মো: শহীদ উল্লাহ ৩০ লাখ ও রাসেল ইকবাল ২৫ লাখ টাকা দর দিয়েছেন। দাওকান্দি ইন্দুলিয়া ভাগাপুর নগর (আফতাব নগর ইস্টার্ন হাউজিং মেরাদিয়া মৌজার সেকশন-১ ও ২) লোহারপুলের পূর্ব অংশ এবং খোলা মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গার হাটের সরকারি মূল্য ছিল ৬৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু এ হাটের জন্য মাত্র একটি দরপত্র জমা পড়েছে। পূর্ব বাসাবোর মোকাসসেদ হোসেন কিসলু ২০ লাখ টাকা দর দিয়েছেন। একই ভাবে আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গার হাটের সরকারি মূল্য ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা থাকলেও এ হাটের বিপরীতে আহসান উল্লাহ চার লাখ টাকা এবং হেলাল উদ্দিন বেপারি তিন লাখ টাকা দর দিয়েছেন। নিয়মানুযায়ী সরকারি মূল্যের চেয়ে কম দর দেয়া হাটগুলোতে আবারো দরপত্র আহ্বান করতে হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement