২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

  রাসেলকে প্রতি মাসে ৫ লাখ টাকা দিতে গ্রিন লাইনকে হাইকোর্টের নির্দেশ

-

গ্রিন লাইনের বাসচাপায় পা হারানো রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকার বাকি ৪৫ লাখ টাকা একসাথে না দিয়ে প্রতি মাসে পাঁচ লাখ টাকা করে নয়টি কিস্তিতে পরিশোধ করতে বলেছেন হাইকোর্ট। গতকাল বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গ্রিন লাইনের পক্ষে টাকা কমানোর আবেদন নাকচ করে এ আদেশ দিয়েছেন।
আদালত বলেছেন, গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে জরিমানার বাকি ৪৫ লাখ টাকা রাসেলকে দিতেই হবে। গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষ প্রতি মাসে পাঁচ লাখ টাকা করে নয় কিস্তিতে রাসেলকে এই অর্থ দেবে। প্রতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা পরিশোধ করে ওই মাসের ১৫ তারিখ আদালতকে তা জানাতে হবে।
শুনানিতে আদালত গ্রিন লাইন পরিবহনের মালিকের আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বলেন, ওজিউল্লাহ সাহেব আপনারা কত টাকা দিয়েছেন? জবাবে আইনজীবী ওজিউল্লাহ বলেন, চিকিৎসা বাবদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা দিয়েছি। এ ছাড়াও ৫ লাখ টাকার চেকে দেয়া হয়েছে।
এ সময় আদালত বলেন, আপনারা অসহায় এ ছেলেটার একটা ব্যবস্থা করতে পারতেন। খোঁজখবর নিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করে সমঝোতা করতে পারতেন। কোনো না কোনোভাবে সহযোগিতা করতে পারতেন। স্বাভাবিক মানবতাবোধ দেখাতে পারতেন। আপনাদের আচরণ শোভনীয় নয়।’
আদালত আরো বলেন, আপনার কোনো স্টাফ এমন আচরণ করেছে তাতে আপনাদের কোনো দায় নাই।
আপনারা আপিল বিভাগে গেছেন, সেখানে নাকচ হয়েছে। এখন আমরা বিষয়টা শুনতে বাধ্য। যদি ২৫ লাখ টাকা চিকিৎসার জন্য এবং বাকি ২৫ লাখ তার জীবন নির্বাহের জন্য দিতেন, তাহলে ভালো হতো। কিন্তু মানুষ হিসেবেও আপনারা কিছু করেননি। আপনাদের আচরণ শোভনীয় নয়। এখন ক্ষতিপূরণের অর্থের পরিমাণ কমানোর কোনো সুযোগ নেই। আদালত আরো বলেন, আপনারা ক্ষতিপূরণ কমানোর আর কিস্তিতে টাকা পরিশোধের সুযোগ চাইছেন। তার ওপর ইচ্ছাকৃত গাড়ি চালানোতে পা হারিয়েছে। অথচ ছেলেটার একটু খোঁজ নিলেন না।
এ সময় আইনজীবী ওজিউল্লাহ নীরব থাকলে রিট আবেদনের আইনজীবী খন্দকার সামসুল হক রেজা দাঁড়িয়ে বলেন, তারা আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করেনি। এমনকি কিভাবে ক্ষতিপূরণ দিবে তাও জানায়নি। প্রতিদিন তাদের আয় এক কোটি টাকা। আদালত বলেন, আপনারা তো দেওলিয়া হয়ে যাননি। কিছু টাকা দিলে কী হতো। ছেলেটার সামনে এখনো অনেক সময় পড়ে আছে।
আদালত গ্রিন লাইনের উদ্দেশে বলেন, যদি আপনারা আদেশ লঙ্ঘন করেন, তাহলে আমরাও অন্য ব্যবস্থা নেব। কোনোভাবে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ কমানোর সুযোগ নেই। যে লোক আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করার ফন্দিফিকির খোঁজে তাকে সরকার কিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দেয় সেটা আমরা দেখব।
এ সময় বিআরটিএর পক্ষের আইনজীবী বলেন, বিআরটিএ ২০০৩ সালের ১৬ নভেম্বর থেকে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটির কার্যক্রম এখনো চলছে।
আদালত বলেন, আমরা কমিটি নয় অ্যাকশন দেখতে চাই। সড়কে এখনো বিশৃঙ্খলা রয়েছে। এবারের ঈদে অন্তত ৪৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে, আহত হয়েছে ৭০০। আপনারা কিসের নিরাপত্তা দিচ্ছেন?
বিআরটিএর আইনজীবী আবার বলেন, আমরা কমিটি করেছি।
আদালত বলেন, এটা গতানুগতিক। মানুষ মারা যাচ্ছে। বিআরটিএ কিছু করতে পারছে না।


আরো সংবাদ



premium cement