২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
প্লাস দিয়ে স্ত্রীর জিহ্বা কেটে নেয় এ অপরাধী

নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বোমা লিপু নিহত

-

হাতে একটা ধারালো কাঁচি নিয়ে হুঙ্কার দিয়ে ভাগিনা জহিরকে একটি লোহার প্লাস আনতে বলে লিপু ওরফে বোমা লিপু। তারপর ঘটালো ভয়ঙ্কর এক ঘটনা। স্ত্রী পারভীনের জিহ্বা প্লাস দিয়ে চেপে ধরে ধারালো কাঁচি দিয়ে একটি অংশ কেটে দেয় সে। অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটে পড়লে পারভীনের ওপর চালানো হয় আরো অমানুষিক নির্যাতন। পাথর দিয়ে আঘাত করে ভেঙে দেয়া হয় তার পা।
ভয়ঙ্কর এ অপরাধী বোমা লিপু বুধবার রাতে ফতুল্লার দাপা এলাকায় পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শুটার গান ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এ সময় ডিবি পুলিশের চার সদস্য আহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ বলছে, লিপু পুরস্কার ঘোষিত পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা রয়েছে। এসব মামলার বেশির ভাগই মাদক, ডাকাতি অস্ত্র ও হত্যার ঘটনায় দায়ের করা হয়। নিহত লিপু পিলকুনি এলাকার মৃত শামসুল হকের ছেলে।
নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান জানান, বুধবার সন্ধ্যায় লিপুকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, তার কাছে মাদক ও অস্ত্র রয়েছে। তার দেয়া তথ্য মতে, রাতে দাপা বালুরমাঠ এলাকায় অভিযানে গেলে লিপুর সহযোগীরা তাকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলির একপর্যায়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হয় লিপু। পরে তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।
জানা গেছে, গত সাত বছরে মোট ১৫টি ভয়াবহ অপরাধের মামলার আসামি লিপু। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা ছিল কারাগার থেকে বেরিয়ে এসে নিজ স্ত্রী পারভীনের জিহবা কেটে ফেলার অভিযোগ। পারভীনও একজন মাদক ব্যবসায়ী। ফতুল্লার দাপা ইদ্রাকপুরের পিলকুনি জোড়া মসজিদ এলাকার শহীদ জমাদ্দারের মেয়ে পারভীনের ১৫ বছর আগে বোমা লিপুর সাথে বিয়ে হয়েছিল। তাদের স্বাধীন (১৪) ও রিয়া (১০) নামে দু’টি সন্তান রয়েছে। ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাত ১টায় লিপু তার স্ত্রীর জিহ্বা কেটে দেয়। স্থানীয়রা বলছে, পারভীন ও লিপু দু’জনই এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। একাধিকবার হোরোইনসহ গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করে।
স্থানীয়রা জানান, ৩-৪ বছর আগে লিপু একটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যায়। ফলে সংসার ও স্বামীর মামলা পরিচালনার খরচ জোগাতে হিমশিম খায় পারভীন। পরে পরিবারের অন্য মাদক ব্যবসায়ীদের পরামর্শে এলাকায় হেরোইন ব্যবসা শুরু করে সে। এক সময় কারাগারে থাকা স্বামীকে ফেলে জনুদ্দিন জনু নামে অন্য আরেক মাদক ব্যবসায়ীর সাথে ঘর-সংসার শুরু করে পারভীন। তার কিছু দিনের মাথায় কারাগার থেকে জামিনে লিপু বেরিয়ে এসে সহযোগীদের নিয়ে স্ত্রীর নতুন স্বামী জনুদ্দিন জনুকে বেদম প্রহার করে। পুলিশের তালিকাভুক্ত চিহ্নিত অপরাধী লিপু কয়েক দফা গ্রেফতার হলেও আইনের ফাঁকফোকর গলিয়ে জামিনে বেরিয়ে এসে আবারো মাদক সন্ত্রাসসহ অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।

 


আরো সংবাদ



premium cement