২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চাপের মুখে জাবি ভিসি

সিনেট, সিন্ডিকেট, টেন্ডার ও শৃঙ্খলাবিধি নিয়ে উত্তেজনা
অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম -

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো ঘোলাটে হচ্ছে শিক্ষক রাজনীতি। সেই সাথে সিনেট, সিন্ডিকেটে পরাজায়, টেন্ডারের জন্য চাপ ও আবদার এবং শৃঙ্খলাবিধি নিয়ে বড় ধরনের চাপের মুখে রয়েছেন ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তির পাশাপাশি আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশের সাথে বিএনপি ও বামজোটের সমন্বয়ে অ্যান্টি-ভিসি রাজনীতি আগের চেয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ক্যাম্পাসের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সাড়ে ১৪০০ কোটি টাকা বাজেট এনে প্রথমে বাহবা পেলেও বর্তমানে এই প্রকল্পে কাজ পাইয়ে দেয়া এবং টেন্ডার নিয়ে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের আবদার ও চাপে রয়েছেন ভিসি। প্রকল্পের টেন্ডার আগ্রহী একটি কোম্পানির দরপত্র শিডিউল ছিনতাইয়ের অভিযোগ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্টের নিয়ম লঙ্ঘন করার অভিযোগেও সমালোচিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংশ্লিষ্ট শৃঙ্খলাবিধিতে নতুন হয়রানিমূলক আইন সংযোজন করা নিয়ে ক্যাম্পাসের সাংবাদিক সংগঠন, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে জাবি সাংবাদিক সমিতি, প্রেস ক্লাব, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, জাসদ ছাত্রলীগসহ সচেতন শিক্ষার্থীরা এ হয়রানিমূলক আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ভিসিবিরোধী সম্মিলিত জোটের মধ্যে ফাটল ধরলে ভিসি ও প্রশাসনে কিছুটা স্বস্তি আসে। কিন্তু বিরোধীরা আবার দ্রুততম সময়ের মধ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে ব্যাপক পরিসরে ঘুরে দাঁড়ায়। এর জেরে গত সোমবার অনুষ্ঠিত সিনেটে নির্বাচনে ভরাডুবি হয় ভিসিজোটের। অধ্যক্ষ ক্যাটাগরির সিনেট সদস্য নির্বাচনে ভিসিজোট মাত্র ১টিতে বিজয়ী অন্যদিকে বিরোধী জোট ৪টি পদে জয়লাভ করে। এ ছাড়া সিন্ডিকেট সদস্যদের মধ্যে ভিসিজোট ১টি, বিরোধী জোট ১টিতে জয়লাভ করে। ভিসির ঘনিষ্ঠ কয়েকজন শিক্ষক বলেছেন, আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের একটি গ্রুপ ভিসিকে সমর্থন দিলেও ভোট দেয়নি।
এ দিকে শিক্ষক সমিতিতে বিজয়ের পর অধ্যক্ষ কোটায় সিন্ডিকেট ও সিনেট নির্বাচনে বিজয়ে আরো আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ। তারা ইতোমধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে বিলম্বিত সিনেট, সিন্ডিকেটের পাশাপাশি ডিন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। পাশাপাশি জাকসুর পরিবেশ তৈরিরও আহ্বান জানায় তারা।
এ বিষয়ে সম্মিলিত শিক্ষক সমাজের সদস্যসচিব অধ্যাপক জামালউদ্দিন রুনু বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের জয়ের ধারাবাহিকায় সিনেট ও সিন্ডিকেটে সম্মিলিত শিক্ষক সমাজের বিজয় আবারো প্রমাণ করল, আমরা ক্যাম্পাসের স্বার্থে যে যৌক্তিক বিরোধিতা করছি তা সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। আমাদের এ বিজয় প্রশাসনের অগণতান্ত্রিক চর্চার বিরুদ্ধে বড় একটি মেসেজ। আশা করি ভিসি বিষয়গুলো মাথায় রেখে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করবেন।’
সব কিছু বিবেচনায় সংশ্লিষ্টরা বলছে, মেগা প্রজেক্টের বাজেটের সঠিক ব্যবহার, বিভক্ত শিক্ষক রাজনীতি, বিতর্কিত ছাত্রশৃঙ্খলাবিধি ও বিলম্বিত নির্বাচন দেয়াকে কেন্দ্র করে আরো চাপে থাকবেন জাবি ভিসি।


আরো সংবাদ



premium cement