২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
প্রস্তাবিত বাজেটে স্মার্টফোনে অধিক হারে শুল্ক নির্ধারণ

হাজার কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে সরকার

-

২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে স্মার্টফোনের ওপর অর্পিত শুল্ক ৩২% থেকে ৫৭% উন্নীতকরণের প্রস্তাব করা হয়েছে, যার নজির পৃথিবীর কোনো দেশে নেই। এটি কার্যকর হলে অবৈধপথে মোবাইল আমদানি বেড়ে যাবে, যাতে হাজার কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে সরকার।
বর্তমানে স্মার্টফোন মিনি কম্পিউটার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে এর ব্যবহার কম্পিউটারকেও ছাড়িয়ে গেছে। আজকাল স্মার্টফোন ব্যবহৃত হচ্ছে ডিজিটাল আর্থিক লেনদেন, শিক্ষাব্যবস্থা, কৃষি উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে, যা সরকারের অন্যতম মূল লক্ষ্য।
জরিপ ও বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য প্রমাণে দেখা গেছে, দেশে বর্তমানে আইফোন ব্যবহার করছে ২৫ লাখেরও অধিক মানুষ। আইফোন পরিবেশকেরা জানান, গত পাঁচ বছরে বৈধভাবে আমদানি হয়েছে মাত্র ৩৫ হাজার আইফোন। একই চিত্র শাওমি, হুয়াওয়ে, নকিয়া, অপ্পোসহ অন্যান্য ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রেও। উচ্চমাত্রার শুল্কের কারণে স্মার্টফোন মার্কেটে গ্রে ব্যবসায়ীরা উৎসাহিত হচ্ছে। স্বল্প ব্যয়ে একজন গ্রে ব্যবসায়ী যেখানে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে স্মার্টফোন বাজারজাত করছে, সেখানে অন্য সব বৈধ স্মার্টফোন আমদানিকারকেরা ব্যবসা পরিচালনা করতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে। এতে সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি অবৈধ হুন্ডি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও উচ্চমাত্রার শুল্কের ফলে স্মার্টফোন সাধারণ জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে এবং কপি স্মার্টফোন ও নকল ফোনে বাজার সয়লাব হয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে মোবাইল ফোন তথা স্মার্টফোন শিল্পের সম্ভাবনা প্রচুর। এ দেশে স্মার্টফোনের কারখানা স্থাপিত হলে এক দিকে যেমন দেশের অর্থনীতি অধিক সমৃদ্ধ হবে, সেই সাথে ব্যাপক কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করবে। অতএব, কারখানা স্থাপনে বিদেশী বিনিয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড যেমন হুয়াওয়ে, শাওমি, অপ্পো, ভিভো, নকিয়া, মটোরোলা ইত্যাদি ব্র্যান্ডের অন্তত আরো ২ বছর সময়ের প্রয়োজন। এ অন্তর্র্বর্তী সময় সহজ শুল্কিকরণের মাধ্যমে বর্তমান ব্যবসাকে সচল রাখতে হবে, যাতে এসব ব্র্যান্ড আমদানির মাধ্যমে সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব অর্জন করতে পারবে।
সরকার প্রথম তিন মাসের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে যদি ০৫-১০% শুল্কারোপের মাধ্যমে এবং পরবর্তী তিন মাস প্রস্তাবিত উচ্চ শুল্কারোপের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় করেন তাহলেই রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে বিশাল পার্থক্য নির্ণয় করতে সক্ষম হবেন। যেমন এক সময়ে ফ্ল্যাট রেট শুল্ককরণের মাধ্যমে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়েছিল। বিজ্ঞপ্তি।


আরো সংবাদ



premium cement