১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
আন্তঃধর্মীয় সংলাপে বক্তারা

জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় সর্বস্তরে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে

-

জঙ্গিবাদ শুধু ধর্মের ওপর চাপিয়ে দেয়া যাবে না। এটার পেছনে ভূরাজনীতির প্রভাব রয়েছে। জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় বিভিন্ন গোষ্ঠীর ধর্মীয় নেতা ও নেতৃত্বের অংশগ্রহণে রাষ্ট্রীয়ভাবে আন্তঃধর্মীয় সংলাপের আয়োজন করতে হবে। একই সাথে সরকারকে সর্বক্ষেত্রে দৃশ্যমান সব ধরনের সামাজিক বঞ্চনা ও বৈষম্য কমিয়ে আনা এবং সর্বস্তরে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।
গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসি আয়োজিত আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। সংলাপে ১০ দফা সুপারিশসহ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। এতে আলোচনায় অংশ নেন পুলিশের এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান অ্যাডিশনাল আইজি মোহাম্মদ আবুল কাশেম, কুরআনের আলো ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, শ্রী শ্রী প্রণব মঠের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী সঙ্গীতানন্দজী মহারাজ, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের নির্বাহী সভাপতি অশোক বড়–য়া, আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের উপাধ্যক্ষ ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয়, খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের মহাসচিব উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার, সিনিয়র সাংবাদিক বাংলাদেশ পোস্টের সম্পাদক শরিফ শাহাবউদ্দিন, দৈনিক সমকালের উপসম্পাদক অজয় দাস গুপ্ত, ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল খায়ের, একাত্তর টেলিভিশনের হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির সহযোগী অধ্যাপক মোখতার আহমাদ, গ্রীনহেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক ম্যালকম ম্যান্ডেজ।
সংলাপ আয়োজনে সহযোগিতা করে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সম্প্রীতি প্রকল্প। সংলাপটি সঞ্চালনা করেন ন্যাশনাল ডিবেট ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন। পুলিশের অ্যাডিশনাল আইজি মোহাম্মদ আবুল কাশেম বলেন, জঙ্গিবাদ তথা অপরাধের পেছনে ব্যবসাও জড়িত। এসব নিয়ে ব্র্যান্ডিং করতে পারলেই তাদের ব্যবসায় ভালো হয়। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহিংস উগ্রবাদ দমনে প্রস্তুত। উগ্রবাদ দমনে আমরা তৃপ্ত হলেও এ নিয়ে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। কারণ উগ্রবাদের ধরন প্রতিনিয়ত পাল্টাচ্ছে। ভবিষ্যতে আমাদের সাইবার হামলা মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে হবে। ভবিষ্যতে ডিজিটাল বোমা হামলারও আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ধর্ম মানুষের আত্মশুদ্ধির জন্য। খারাপ যা কিছু তা থেকে বিরত রাখার জন্য। সব ধর্মই কল্যাণের কথা বলে। কোনো ধর্মেই মানুষকে হত্যা করার বিধান নাই। তবে মানুষ ডিপ্রাইভ হলে আয় উপার্জন না থাকলে ক্ষোভ থেকে সন্ত্রাস তৈরি হতে পারে। তবে অনেকে না বুঝে উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িত হচ্ছে। ইসলাম কখনো সন্ত্রাসকে সমর্থন করে না। একইভাবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও শান্তির কথা বলে।
মূল প্রবন্ধে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, প্রত্যেকটি ধর্মেরই মূলমন্ত্র শান্তি, সহিষ্ণুতা, সম্প্রীতি ও মানবকল্যাণ। যারা ধর্মের লেবাসে সহিংস উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে তাদের প্রতিরোধে ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা সর্বত্র প্রচার করতে হবে। মনে রাখতে হবে কোনো ধর্মই অন্য ধর্মের প্রতিপক্ষ নয়।
প্রবন্ধে সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধে ১০ দফা সুপারিশ উপস্থাপন করে তিনি বলেন, ধর্মীয় স্থিতিশীলতা অক্ষুণœœ রাখতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর ধর্মীয় নেতা ও নেতৃত্বের অংশগ্রহণে রাষ্ট্র্রীয়ভাবে আন্তঃধর্মীয় সংলাপের আয়োজন করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement