২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
দুর্নীতিবিরোধী সংগ্রাম কমিটির সংবাদ সম্মেলন

ওজোপাডিকোর বিরুদ্ধে কর্মসূচি ঘোষণা

-

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) দুর্নীতির বিরুদ্ধে গতকাল নগরীর বিএমএ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে ১৭ জুন বেলা ১১টায় পিকচার প্যালেস মোড়ে মানববন্ধন, ১৯ জুন মেয়র ও সংসদ সদস্যকে স্মারকলিপি প্রদান এবং ২০ জুন জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএমএর সভাপতি ডা: শেখ বাহারুল আলম। বক্তব্যে বলা হয়, ওজোপাডিকো বিনামূল্যে প্রি-পেইড মিটার দেয়ার কথা বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে সিঙ্গেল ফেজ মিটারে ৪০ টাকা, থ্রি ফেজ মিটারের জন্য ২৫০ টাকা প্রতি মাসে কেটে নিচ্ছে। এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী বিদ্যুৎ ব্যবহারের আগে বিল পরিশোধ করার কারণে গ্রাহকদের এক শতাংশ রিবেট পাওয়ার কথা। কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে প্রি-পেইড মিটার চালু থাকলেও এ পর্যন্ত গ্রাহকদের কোনো রিবেট দেয়া হয়নি। গত আড়াই বছরে দেড় লাখ গ্রাহকের এ রিবেটের টাকা ওজোপাডিকো আত্মসাৎ করেছে। প্রি-পেইড মিটার রিচার্জ করার সাথে সাথে রিচার্জের টাকা ও বিভিন্ন খাতে কেটে নেয়া টাকার মধ্যেও ব্যাপক গরমিল রয়েছে। ওজোপাডিকোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এতটাই বেপরোয়া যে, গ্রাহকেরা এ বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা চাইলে তারা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। এ ব্যাপারে কোনো জবাব দিতে তারা অনীহা প্রকাশ করেন।
মিটার লাগানোর সাথে সাথে প্রথম রিচার্জে সঠিক বিল এলেও পরবর্তী মাস থেকে অধিক বিলের ভোগান্তি শুরু হচ্ছে। প্রত্যেক গ্রাহকের বিল থেকে ভ্যাট কেটে নেয়া হচ্ছে ৫ শতাংশ, কিন্তু গ্রাহকদের কোনো কর চালানপত্র দেয়া হয় না। এ মিটারে গ্রাহকদের প্রতি সবচেয়ে নিষ্ঠুর আচরণ হলো মিটার লক-আনলক পদ্ধতি। নতুন প্রি-পেইড মিটার অপারেট করতে গিয়ে মিটার অনিচ্ছাকৃতভাবে লক হয়ে গেলে ওজোপাডিকোর দ্বারস্থ হয়ে জরিমানা দিয়ে তা খুলতে হয়। যদি ছুটির দিন মিটার লক হয়ে যায় তাহলে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় অপেক্ষায় থাকতে হয় ওজোপাডিকোর কর্মদিবসের। বিভিন্ন সময় মিটার বাইপাসের ভিত্তিহীন অভিযোগে গ্রাহকদের হয়রানি ও তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এ ছাড়া পিডিবি আমলের এবং পরবর্তী বিভিন্ন সময়ের পরিশোধিত বিলের স্লিপ না দেখাতে পারলে গ্রাহককে ভৌতিক বিল পরিশোধে বাধ্য করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, প্রি-পেইড মিটার ছাড়াও ওজোপাডিকোর অভ্যন্তরে রয়েছে অসংখ্য অনিয়ম দুর্নীতি ও গ্রহক হয়রানির চিত্র। দুদক বা সরকারি উপযুক্ত সংস্থা দিয়ে তদন্ত করলেই অনেক অনিয়ম বেরিয়ে আসবে। এক কথায় ওজোপাডিকোতে গ্রাহকের টাকায় চলছে হরিলুট।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য সচিব সাংবাদিক মহেন্দ্রনাথ সেন, যুগ্ম সদস্য সচিব শাহ মামুনুর রহমান তুহিন, খুলনা উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যানও কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক শরীফ শফিকুল হামিদ চন্দন ও মোড়ল নুর মোহাম্মদ, সিপিবির জেলা কমিটির নেতা মিজানুর রহমান বাবু, ওয়ার্কার্স পার্টির শেখ মফিদুল ইসলাম, জাসদের নেতা খালিদ হোসেন, ন্যাপের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার রায়, গণতান্ত্রিক পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য কামাল হোসেন জোয়ার্দার, সাবেক ছাত্রলীগ ফোরামের আহবায়ক শেখ মো: জাহাঙ্গীর আলম, সাতক্ষীরা নাগরিক মঞ্চের শেখ মো: ওবায়েদুস সুলতান বাবলু, বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন আন্দোলনের চেয়ারম্যান শেখ মো: নাসির, বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহিউদ্দীন আহমেদ প্রমুখ।

 


আরো সংবাদ



premium cement