২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাজেটে শ্রমিক জনগোষ্ঠীর স্বার্থ উপেক্ষা করা হয়েছে : গোলাম পরওয়ার

-

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট শ্রমিক জনগোষ্ঠীর শোষণ-বঞ্চনা ও বৈষম্য বৃদ্ধির একটি দলিল। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। গোলাম পরওয়ার আরো বলেন, অনির্বাচিত ফ্যাসিবাদী সরকারের অর্থমন্ত্রী গত ১৩ জুন জাতীয় সংসদে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার মোটা অংকের যে অবাস্তব বাজেট প্রস্তাব পেশ করেছেন তা সরকারের পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না বলেই দেশের অর্থনীতিবিদরা মনে করেন।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের গোটা অর্থের এক তৃতীয়াংশই ঋণ নির্ভর। বাজেটে সম্পদশালীদের সুবিধা দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে বাজেটে ধনীর জন্য নানা সুবিধা দেয়া হয়েছে কিন্তু গরিব, প্রান্তিক শ্রমিক জনগোষ্ঠী ও মধ্যবিত্তদের সুবিধা দেয়া হয়নি, তারা বঞ্চিতই রয়ে গেল। অথচ বাংলাদেশের স্বাধীনতা এসেছে বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে। তাই এই বাজেট শ্রমিক জনগোষ্ঠীর শোষণ-বঞ্চনা- বৈষম্য বাড়াবে।
তিনি আরো বলেন, যে সমাজে বৈষম্য বৃদ্ধি পায়, সে সমাজ আজ হোক-কাল হোক টেকে না, এগোতে পারে না। যেভাবে বাংলাদেশে বৈষম্য বাড়ছে তাতে ৭, ৮ ও ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি টেকানো কষ্টকর হবে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বাজেটে রাজস্ব আয়ের দুঃসহ ভারের সবটাই বহন করতে হবে গরিব ও মধ্যবিত্তসহ সাধারণ শ্রমিক শ্রেণীর মানুষকে। তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর এবং চার স্তরের ভ্যাটের বোঝা আরো বাড়বে। ধনীদের সারচার্জে বড় ধরনের ছাড় দিয়ে তাদের তুষ্ট করা হয়েছে। ধনীদের সম্পদ কর বা সারচার্জের সীমা দুই কোটি ২৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এবারের বাজেটে আয়করমুক্ত আয়ের সীমা বিগত তিন বছরের মতোই দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা রাখা হয়েছে। অথচ বাস্তবতার নিরিখে তা হওয়া উচিত ছিল কমপক্ষে পাঁচ লাখ টাকা।
তিনি আরো বলেন, ব্যর্থ সরকারের উচ্চাভিলাসী ও অবাস্তব কৌশলী বাজেট দেশের গরিব শ্রমিক জনগোষ্ঠীকে আরো হতাশ করবে। বাজেটে মুদ্রাস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫.৬ শতাংশ। বিরাট অংকের বাজেট পেশ করার ফলে মুদ্রাস্ফীতি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়ে মধ্যবিত্ত, নি¤œ-মধ্যবিত্ত গরিব শ্রমিক জনগোষ্ঠীর দুর্ভোগ আরো বেড়ে চরম আকার ধারণ করার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গোলাম পরওয়ার বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের নির্বাচিত সরকার নয়। দেশের জনগণের প্রতি এ সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তাই প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের বৃহৎ শ্রমিক জনগোষ্ঠীর স্বার্থ উপেক্ষা করে সরকারের দলীয় লোকদের ভোগবিলাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ধনীকে আরো ধনী এবং গরিবকে আরো গরিব করা, ধন বৈষম্য ও শ্রেণী বৈষম্য বৃদ্ধি করা, সামাজিক অস্থিরতা ও নৈরাজ্য বৃদ্ধি করা ইত্যাদি হবে এই বাজেটের ফলাফল। এই বাজেট জাতির অর্থনৈতিক-সামাজিক-রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নৈরাজ্য, অস্থিতিশীলতা বাড়িয়ে তুলবে। তাই শ্রমিক সমাজ প্রস্তাবিত বাজেট ২০১৯-২০ প্রত্যাখ্যান করেছে। বিজ্ঞপ্তি।


আরো সংবাদ



premium cement