মালয়েশিয়ায় মানবপাচার বাণিজ্য ফের চাঙ্গা কক্সবাজার ও উখিয়ায় ৫২ রোহিঙ্গা আটক
- কক্সবাজার ও দক্ষিণ কক্সবাজার সংবাদদাতা
- ১৬ মে ২০১৯, ০০:০০
সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে জড়ো করা ৫২ জন রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ, শিশুকে কক্সবাজার শহরতলির শুকনাছড়ি উপকূল পয়েন্ট ও উখিয়া উপজেলায় পৃথক অভিযান চালিয়ে আটক করেছে পুলিশ। অন্যদিকে উখিয়া উপজেলার উপকূলবর্তী জালিয়াপালং ইউনিয়নের লম্বরী পাড়ার তাবাইয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ২৪ রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ, শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মালয়েশিয়ায় মানব পাচারকারী একটি চক্র মঙ্গলবার রাতের আঁধারে দরিয়ানগর ও শুকনাছড়ি ঘাটে জড়ো করে অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু। বিষয়টি টের পেয়ে এলাকার শতাধিক মানুষ রাত সাড়ে ৯টার দিকে সমুদ্র সৈকত ও সৈকতে মানব পাচারকারীদের একটি বাড়ি ঘেরাও করে ২৮ রোহিঙ্গাকে আটকে রাখে। পুলিশে খবর দেয়া হলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের থানায় নিয়ে আসে। আটক মালয়েশিয়াগামীদের মধ্যে ১৩ জন নারী, ৯ জন পুরুষ ও ছয়টি শিশু।
স্থানীয় যুবনেতা ইমাম হোসেন ও পারভেজ মোশাররফ জানান, মালয়েশিয়ায় আদম পাচারকারী একটি চক্রের সদস্যরা দরিয়ানগর ও শুকনাছড়ি ঘাটকে আবারো মানব পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহার শুরু করার খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে এলাকাবাসী জড়ো হয়ে একটি বাড়িতে ২৪ জন ও সমুদ্র সৈকত থেকে চারজনকে আটক করে। এ সময় মানবপাচারকারী দালালরা সটকে পড়ে।
বুধবার সকালে উখিয়া থানায় গিয়ে দেখা যায়, আটক রোহিঙ্গারা গেস্ট রুমে জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে। এদের আত্মীয় পরিচয়দানকারী কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা যুবক মিজানুর রহমান (২৫) জানান, পাঁচ দিন আগে টেকনাফের হ্নীলা জাদিমোরা ঘাট দিয়ে এপারে এসেছেন তার খালাম্মা গুলমেহের (৬০), খালাতো ভাই আব্দুল সালাম (২০), খালাতো বোন রফিকা বেগম (১৮), আমিনা খাতুন (১৫), সিরাজুল ইসলামসহ (১২) পাঁচ সদস্যের একটি পরিবার। তাদের বাড়ি মিয়ানমারের বুচিডং পুইমালি গ্রামে। গুলমেহের জানান, তার স্বামী মোহাম্মদ কাশেমকে রাখাইন সন্ত্রাসীরা মেরে ফেলেছে। বাড়িঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। জীবন বাঁচাতে ১০ মে রাতে হ্নীলা জাদিমোরা ঘাট দিয়ে এপারে এলে তাবাইয়া নামের এক ব্যক্তি তাদের মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে লম্বরীপাড়ার তার বাড়িতে পাঁচ দিন রাখে।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আবুল খায়ের জানান, উদ্ধার করা রোহিঙ্গাদের মাঝে আটজন পুরুষ, ১১ জন মহিলা, তিনটি ছেলে শিশু ও দুইটি মেয়ে শিশু। একাধিক রোহিঙ্গাকে ওসির কাছে তাবাইয়ার কথা বলতে শোনা গেছে।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার জানান, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সবাই রোহিঙ্গা বলে স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দালালদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে ১২ মে রাতে টেকনাফের বাহারছড়া থেকে আটজন, মহেশখালীর কালারমারছড়া থেকে ১৪ জন ও ১১ মে মহেশখালীর পানিরছড়া থেকে ১২ জন মালয়েশিয়াগামী রোহিঙ্গাকে আটক করে পুলিশ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা