১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মীমাংসার নামে ধামাচাপার চেষ্টার অভিযোগ রংপুরে ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষণ : বিক্ষুব্ধদের থানা ঘেরাও : আটক ৩

-

রংপুর মহানগরীর পাণ্ডারদীঘি ধাপ কামারপাড়ায় একজন দিনমজুরের পঞ্চম শ্রেণী পড়–য়া কন্যাকে ধর্ষণ করেছে মিন্টু রায় (৩২) নামে দুই সন্তানের জনক। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী থানা ঘেরাও করে বিচার দাবি করেছেন। পুলিশ ঘটনাটি সালিস বৈঠকের নামে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠলে পরে পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। মামলায় আসামি করা হয়েছে ধর্ষক মিন্টু, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা হারাধন রায়সহ চারজনকে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল ইসলাম জানান, নগরীর ৪নং ওয়ার্ডের ধাপ কামারপাড়ার এক দিনমজুরকে একই এলাকার ঝড়– রায়ের ছেলে দুই সন্তানেরজনক মিন্টু গত ১৫ এপ্রিল দুপুরে জমিতে ঘাস কাটার জন্য শ্রমিক হিসেবে নেয়। ওই শ্রমিক জমিতে ঘাস কর্তন করতে থাকলে মিন্টু রায় তার বাড়িতে আসে এবং তার পঞ্চম শ্রেণী পড়–য়া মেয়েকে ধর্ষণ করে। এ সময় শিশুটি চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসলে ধর্ষক মিন্টু রায় পালিয়ে যায়। এ সময় শিশুটির মা অন্যের বাড়িতে কাজ করতে গিয়েছিলেন।
ওসি জানান, কাজ শেষে বাড়িতে এসে মেয়ে এবং প্রতিবেশীর মুখে শুনে ধর্ষণের ঘটনার জন্য পুলিশের কাছে যেতে চান ওই শ্রমিক। কিন্তু ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রংপুর সিটি করপোরেশনের আওয়ামী কাউন্সিলর পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হারাধন রায় মীমাংসার দায়িত্ব নিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকে। গত বুধবার রাতে শিশুটির মা বাদি হয়ে মিন্টু রায়, ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারাধন হারা, ধর্ষকের শ্যালক শম্ভু রায়, টেংকু রায় ও মেহেদুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করেছেন।
ওসি জানান, ধর্ষণের ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে ধর্ষককে সহযোগিতার অভিযোগে ধর্ষকের শ্যালক শম্ভু রায়, টেংকু রায় ও মেহেদুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ধর্ষক ও কাউন্সিলরকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। মেয়েটিকে উদ্ধার করে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছিল। গতকাল রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে তার ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ধর্ষিতা শিশুর বাবা জানান, মিন্টু তার জমিতে আমাকে ঘাস কাটার কাজে লাগিয়ে দিয়ে আমারই বাড়িতে ঢুকে আমার মেয়েকে ধর্ষণ করল। এখন আবার আমাকেই মামলা তুলে নেয়ার জন্য কাউন্সিলর হারাধন, ধর্ষক মিন্টুর শ্যালক শম্ভু ও টেংকু রায় চাপাচাপি করছে। হুমকি দিচ্ছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তিনি জানান, আমি দোষীদের ফাঁসি চাই। আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই।
এ ব্যাপারে রংপুর সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারাধন রায় জানান, ধর্ষণের ঘটনাটি ১৫ এপ্রিল ঘটেছে। দুইপক্ষই ১৬ এপ্রিল আমার কাছে এসেছিল। তখন আমি ছেলেপক্ষকে বলেছিলাম ছেলেকে হাজির করান, তারপর মীমাংসা। কিন্তু তারা আমাকে মামলায় জড়িয়েছে। এটা ঠিক নয়।
এ দিকে এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। গত বুধবার রাতে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মেট্রোপলিটন পুলিশের পরশুরাম থানায় ঘেরাও করে রাখে। একপর্যায়ে এলাকাটি কোতোয়ালি থানার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণে এলাকাবাসী কোতোয়ালি থানায় এলে পুলিশ মামলা রেকর্ড করে তিন সহযোগীকে আটক করে।


আরো সংবাদ



premium cement