২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় না হওয়া কূটনৈতিক ব্যর্থতা : সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম

-

একাত্তরের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনীর চালানো গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানোর পাশাপাশি পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কর্মতৎপরতা শুরু করার আহ্বান জানিয়েছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম।
গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-’৭১-এর আয়োজনে ‘গণহত্যা ১৯৭১ : আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা ও স্বীকৃতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ আহ্বান জানান। সংগঠনের সহসভাপতি সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি নুরুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেজবাহ উদ্দিন কামাল, সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়াহিদুল হক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব সাংবাদিক হারুন হাবীব প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, ২৫ মার্চের গণহত্যা নিয়ে আমাদের কোনো কমপ্রিহেনসিভ ডকুমেন্টস নেই। এটা করে যেতে পারলে নতুন প্রজন্ম ইতিহাস নতুনভাবে জানতে পারত। গণহত্যা নিয়ে যে কাজগুলো হচ্ছে, তা বিচ্ছিন্নভাবে না করে সমন্বিতভাবে করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধেও যে বধ্যভূমি এখন উন্মোচিত হচ্ছে, সেখানে স্মারকচিহ্ন স্থাপন করতে হবে। তবে এ কাজের জন্য বড় বাজেট লাগবে।
অধ্যাপক মেজবাহ কামাল বলেন, একাত্তরের গণহত্যার কথা স্মরণ করলেই আমরা ক্ষত-বিক্ষত হই। আমাদের অনেক স্বজন গণহত্যার শিকার হয়েছেন। অনেক পক্ষের দাবির পর ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে সরকার স্বীকৃতি দিয়েছে। এই ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিকভাবে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া উচিত। এ জন্য বাংলাদেশের প্রত্যেকটি অ্যাম্বাসিকে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে হবে। অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা একটি রিডানডেন্ট ইস্যু। আমরা এখন রাজাকারদের তালিকা নিরূপণ না করে মুক্তিযোদ্ধাদের নতুন তালিকা প্রণয়ন করছি। এতে দুর্নীতির বড় ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে।
ওয়াহিদুল হক বলেন, একাত্তরে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এখনো আমরা আদায় করতে পারিনিÑ এটা আমাদের কূটনৈতিক ব্যর্থতা। আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস আদায়ে সারা বিশ্বব্যাপী তৎপরতা চালাতে হবে।
সৈয়দ হাসান ইমাম বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনে মুক্তিযুদ্ধের দলিলগুলোর সঙ্কলন পাঠাতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
সাংবাদিক হারুন হাবীব বলেন, ১৯৭১ সালের গণহত্যার স্বীকৃতি ও অপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দায়বদ্ধতা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমি মনে করি, যত দিন পাকিস্তান তাদের সেনাবাহিনীর হাতে বাংলাদেশের মাটিতে গণহত্যার দায় স্বীকার না করবে, যত দিন এই গণহত্যার জন্য বাংলাদেশের মানুষের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা না করবে, যত দিন ১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধপরাধীর বিচারে কর্মতৎপরতা শুরু না করবে, যত দিন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত না হবে তত দিন দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে পারে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement