২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ

বাম জোটের মাসব্যাপী কর্মসূচি
-

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দ। মন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্য স্বাধীন জাতীয় আত্মমর্যাদাবোধ বিরোধী ও জাতীয় স্বার্থ এবং দেশের সার্বভৌমত্ব পরিপন্থী বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তারা। নেতৃবৃন্দ এ ধরনের বক্তব্য প্রত্যাহার করে দেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য জোর দাবি জানান।
গতকাল বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের এক সভায় এসব দাবি জানান হয়। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য ‘ভারত বাংলাদেশের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর মতো এবং তিস্তার পানি কোন সমস্যা নয়’ যা ভারতের আজকাল পত্রিকায় ছাপা হয়েছে উল্লেখ করে এ বক্তব্য দেয়া হয় জোটের পক্ষ থেকে।
এদিকে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন রুখে দাঁড়ানোর পাশাপাশি জনগণের সংগ্রামী ঐক্য জোরদারের দাবি জানিয়ে মার্চ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক জনসভা, দুদক অভিমুখে বিক্ষোভ-ঘেরাও। গতকাল বাম গণতান্ত্রিক জোট এর কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের এক সভায় কর্মসূচি নিয়ে এ সিদ্ধান্ত হয়। গতকাল সেগুনবাগিচাস্থ তৃতীয় তলায় সিপিবি নেতা রুহীন হোসেন প্রিন্সের বাসায় অনুষ্ঠিত হয়। বাম জোটের সমন্বয়ক বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে সভায় বর্তমান পরিস্থিতি ও জোটের করণীয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ইউসিবিএল-এর সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের হামিদুল হক, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, সাজ্জাদ জহির চন্দন, কাফী রতন, রুহীন হোসেন প্রিন্স, বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, ইউসিবিএল নেতা আজিজুর রহমান, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা আলমগীর হোসেন দুলাল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, গণসংহতি আন্দোলনের নেতা তাছলিমা আক্তার, জুলহাস নাইন বাবু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির নেতা মমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
সভার এক প্রস্তাবে বলা হয়, বর্তমানে দেশে চলছে একদলীয় ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন। গত ৩০ ডিসেম্বর নজিরবিহীন ভোট ডাকাতির ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে মহাজোটের সরকার পুনরায় ক্ষমতা দখলে রেখে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন কায়েম করেছে। সভার প্রস্তাবে অবিলম্বে ভোট ডাকাতির সংসদ বাতিল করে সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচন দেয়া, ব্যর্থ ও অনুগত, ভোট ডাকাতির সহযোগী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালুর দাবিও জানানো হয়। এই দাবি আদায়ে ব্যাপক জনগণের সংগ্রামী ঐক্য গড়ে তোলা ও বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তির উত্থানে কার্যকর আন্দোলনের আহ্বান জানানো হয়।
সভায় অবিলম্বে শ্রমিকদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং গণহারে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়। এ ছাড়াও সভার অপর প্রস্তাবে সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট ও ব্যাংক ডাকাতি, অর্থপাচারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, সরকার ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করেছে।
সভার-আশুলিয়াসহ গার্মেন্ট শিল্পাঞ্চলে হাজার হাজার শ্রমিকের নামে মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা দায়ের এবং ১১ হাজার শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকেল ৪টায় ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয়া হয়েছে। অপর দিকে দুর্নীতির রাঘব বোয়াল, ব্যাংক ডাকাত ও অর্থপাচারকারীদের গ্রেফতার বিচার এবং তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত, পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে আগামী ৫ মার্চ দুদক কার্যালয় অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি দেয়া হয়। এ ছাড়া মার্চ-এপ্রিল মাস জুড়ে সারা দেশে বিভাগীয় শহর ও জেলায় জেলায় জনসভা-সমাবেশ করবে বাম জোট।


আরো সংবাদ



premium cement