২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আশুলিয়া ও বাঁশখালীতে তিন লাশ উদ্ধার

মোরেলগঞ্জে মাদরাসাছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা : পাবনায় স্ত্রী খুন
-

আশুলিয়ায় এক নারীসহ দুই জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে অজ্ঞাত এক মহিলার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাবনায় স্বামীর ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন স্ত্রী। বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ।
পটিয়া-চন্দনাইশ সংবাদদাতা জানান, চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সাগর তীরবর্তী খানখানাবাদ বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে গতকাল সকাল সাড়ে ৭টায় অজ্ঞাতনামা (৪০) এক মহিলার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ পরিদর্শক কামাল হোসেন জানান, সকালে ওই এলাকার সংবাদের ভিত্তিতে নাম পরিচয়বিহীন মহিলার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি মনে করেন সাগরের জোয়ারে লাশটি অজ্ঞাত স্থান থেকে ভেসে এসেছে।
পাবনা সংবাদদাতা জানান, পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের ক্ষুদ্র মাটিয়াবাড়ি গ্রামে স্বামীর ছুরিকাঘাতে বৃষ্টি খাতুন (১৮) নামের এক গৃহবধূ খুন হয়েছেন। নিহত বৃষ্টি খাতুন ওই গ্রামের জালাল বিশ্বাসের মেয়ে। ঘটনার পর থেকে স্বামী মোমিন হোসেন (২০) পলাতক রয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রায় তিন বছর আগে পাবনা শহরের নয়নামতি মহল্লার বাসিন্দা আলাই বিশ্বাসের ছেলে মোমিন হোসেনের (২০) সাথে বৃষ্টির বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই বৃষ্টির উপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিল মোমিন। নির্যাতন সইতে না পেরে প্রায় বছরখানেক আগে ক্ষুদ্র মাটিয়াবাড়ি বাবার বাড়িতে চলে আসে বৃষ্টি।
মাঝে মধ্যে বৃষ্টিকে বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য নানা ফাঁদ পাতে মোমিন। কিন্তু তাতে কোনো ফল না আসায় ক্ষিপ্ত হয় মোমিন। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় একটি সাদা প্রাইভেট কারে করে কয়েকজন বন্ধুকে সাথে নিয়ে বৃষ্টির বাড়িতে যায় মোমিন। এ সময় বৃষ্টিকে একা পেয়ে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় সে। বৃষ্টির চিৎকারে স্থানীয়রা আহত বৃষ্টিকে দ্রুত উদ্ধার করে পাবনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন। পরে ঢাকায় নেয়ার পথে বেলা ৩টায় মারা যায় বৃষ্টি।
চট্টগ্রামে ভাড়া বাসায় নিয়ে যুবক ‘হত্যা’ : কথিত স্ত্রী উধাও
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী থানা এলাকায় একটি বাসা থেকে গলা কেটে হত্যা করা এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টায় পাহাড়তলীর আব্দুল আলী নগর এলাকায় নেছারিয়া মাদরাসার সামনে একটি সেমি পাকা বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে।
পাহাড়তলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অর্ণব বড়ুয়া নয়া দিগন্তকে জানান, ওই যুবক কয়েক দিন আগে বাসাটি ভাড়া নেয়। গতকাল বেলা ১১টায় স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীসহ ওই বাসায় ওঠে। বিকেল ৩টার দিকে স্থানীয়দের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
তিনি বলেন, ওই যুবকের নাম-পরিচয় কিছুই বাড়ির মালিক জানেন না। স্ত্রী পরিচয় দেয়া নারীকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
আশুলিয়া (ঢাকা) সংবাদদাতা জানান, আশুলিয়ায় পৃথক স্থান থেকে গুলিবিদ্ধ পোশাক শ্রমিক ও নারীসহ দু’জনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনায় একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল সকালে আশুলিয়ার কাঠগড়া মণ্ডলপাড়া এলাকার একটি বাঁশঝাড় থেকে রাজিয়া খাতুন নামের এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে শুক্রবার গভীর রাতে আশুলিয়ার জামগড়া উত্তরপাড়া এলাকা থেকে রাসেল খান নামের পোশাক শ্রমিককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং পরে সাভার এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে শনিবার সকাল ৮টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত রাসেল খান মাদারীপুরের শিবচর থানাধীন হাজী কুতুবপুর এলাকার ফজলু খানের ছেলে এবং সে আশুলিয়ার জামগড়া উত্তরপাড়া এলাকার দেলোয়ার হোসেন জমিদারের বাড়ির ষষ্ঠ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে থেকে বেরন এলাকার এনভয় গ্রুপের মান্তা এ্যাপারেলস লিমিটেডে চাকরি করত। তবে সে শারীরিক প্রতিবন্ধী ছিল।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাবেদ মাসুদ জানান, গভীর রাতে জামগড়া উত্তরপাড়া এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে রাসেল নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হলে স্থানীয়রা তাকে এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তবে কে বা কারা তাকে গুলি করেছে সে বিষয়ে তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি। এ ছাড়া নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে শুক্রবার রাতে আশুলিয়ার কাঠগড়া মণ্ডলপাড়া এলাকার একটি বাঁশ ঝাড় থেকে রাজিয়া খাতুন নামের এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত রাজিয়া খাতুনের গ্রামের বাড়ি বগুড়ার ধুনট থানা এলাকায় বলে জানা গেছে।
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিরাজ হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে নিহত নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় নিহতের স্বজন জিয়াউর রহমান নামে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
মোরেলগঞ্জে মাদরাসাছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা
বাগেরহাট সংবাদদাতা জানান, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ইমন মোল্লা (১৭) নামের এক মাদরাসাছাত্রকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। নিহত ইমন উপজেলার চণ্ডিপুর গ্রামের মৃত মামুন মোল্লার ছেলে ও চণ্ডিপুর দাখিল মাদরাসার দশম শ্রেণীর ছাত্র। শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে চণ্ডিপুর গ্রামের নূরানি মাদরাসাসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা তানভিরসহ চারজনকে আটক করেছে। আটক অপর তিন জন হলোÑ একই গ্রামের আলমগীর শেখের মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী জান্নাতি (১৫), চান্দু মোল্লার ছেলে সজিব (১৮) ও নিহত ইমনের বন্ধু চণ্ডিপুর গ্রামের কুদ্দুস খানের ছেলে আসিব খান (১৭)।
চণ্ডিপুর দাখিল মাদরাসার শিক্ষক সরোয়ার হোসেন, মাহমুদুল হাসানসহ ইমনের একাধিক প্রতিবেশী বলেন, একই গ্রামের জান্নাতির সাথে আসিবের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। জান্নাতিদের বাড়িতে তার কয়েকজন আত্মীয় বেড়াতে আসেন। ওই আত্মীয়ের ছেলেদের সাথে কথা বলাকে কেন্দ্র করে আসিব ও ইমনের সাথে জান্নাতি ও তার ফুফাতো ভাইয়ের কথাকাটাকাটি হয়। পরে আসিব ও ইমন চলে যায়। রাত ১০টায় ইমন ও আসিব মাহফিল শুনছিল। এ সময় মোবাইল ফোনে একটি কল পেয়ে তারা মাহফিল থেকে বের হয়ে আসে। এ সময় কয়েকজন ইমনের বুকে ও হাতে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় ইমন।
মোরেলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম আজিজুল ইসলাম জানান, প্রেমঘটিত বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। খবর পেয়ে সকালে ইমন মোল্লার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে তানভির (২০) নামে একজন সরাসরি হত্যা মিশনে জড়িত ছিল। আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে ওসি জানান।


আরো সংবাদ



premium cement