১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ডাকসুর ভোটকেন্দ্র নিয়ে গণভোটের পরামর্শ শিক্ষার্থী অধিকার মঞ্চের

-

ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র হলে হবে নাকি হলের বাইরের অ্যাকাডেমিক ভবনে করা হবে সে বিষয়ে ছাত্রদের গণভোট নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে ‘ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষার্থী অধিকার মঞ্চ’। গতকাল শুক্রবার দুপুরে বিশ^বিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ পরামর্শ দেন মঞ্চের নেতারা। ডাকসুর দাবিতে গড়ে ওঠা ঢাবি শিক্ষার্থী অধিকার মঞ্চ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
প্রায় সাত বছর আগে বিশ^বিদ্যালয়ের তৎকালীন শিক্ষার্থীরা এ মঞ্চ গঠন করেন। এর পর থেকে ২০১২ সালে ডাকসু ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে স্মারকলিপি, মানববন্ধন, গণস্বাক্ষর, সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ ২০১২ সালের মার্চে মঞ্চের ২৫ জন সদস্য আদালতে রিট করেন। সে পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২৮ বছর ধরে অচল থাকা ডাকসুর নির্বাচন। এই আন্দোলনকারীরা এখন বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে নূর বাহাদুর, মওদুদ মিষ্টি, নুরে আলম দুর্জয়, অ্যাডভোকেট মনজিল মোর্শেদসহ প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন শিক্ষার্থী অধিকার মঞ্চের অন্যতম সদস্য মওদুদ মিষ্টি। তিনি প্রথমেই ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়ায় বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান। এই নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের স্বাধীন বিচার-বুদ্ধির প্রয়োগ ঘটাতে পারবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক ডাকসু নির্বাচনের প্রত্যাশা করেন মঞ্চের সংশ্লিষ্টরা। আদতে ভোট হবে কি না সে বিষয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা। এসব বিষয় নিয়ে লিখিত বক্তব্যে মওদুদ মিষ্টি বলেন, ভোট নিয়েও যেন শঙ্কার শেষ নেই। ভোট যদি না হয় তবে শিক্ষার্থীদের উচ্ছলতা হতাশায় নিমজ্জিত হবে।
ডাকসুর সংবিধানের বিষয়ে তিনি বলেন, ডাকসুর বর্তমান সংবিধানে শিক্ষার্থীদের স্বার্থে আন্দোলন ও অবস্থান নেয়ার ক্ষমতা কতটা দেয়া হয়েছে সেটি খতিয়ে দেখা দরকার। বলা হচ্ছে ইউনিয়নটি শিক্ষার্থীদের। অথচ এর চূড়ান্ত ক্ষমতা ভিসির হাতে। তিনিই সর্বেসবা- একনায়ক। তিনি বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে ডাকসুর সভাপতির ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে ডাকসু এবং হল সংসদ নির্বাচন। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ছাড়া অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোর দাবি সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে হলের বাইরের অ্যাকাডেমিক ভবনগুলোতে ভোট কেন্দ্র স্থাপন করা। তবে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্র সংগঠনের এ দাবি আমলে না নিয়েই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। এ নিয়ে ছাত্র সংগঠন এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এজন্য শিক্ষার্থী অধিকার মঞ্চের পরামর্শ হলো এ নিয়ে গণভোটের আয়োজন করার।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে গড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের এই প্ল্যাটফর্মটি বর্তমানে সক্রিয় না। তবে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পেছনে তাদের বড় ভূমিকা রয়েছে। ডাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হয়েছে যে রিটের সূত্র ধরে, সেটিও এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে করা।

 


আরো সংবাদ



premium cement