২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ট্রাফিক আইন ভঙ্গে গুনতে হবে যত জরিমানা

-

‘ট্রাফিক আইন মেনে চলুন’ স্লোগানটির সাথে কমবেশি সবাই পরিচিত। বিশেষ করে রাস্তায় যারা যানবাহন নিয়ে বের হন তাদের কোনো না কোনো দিন এই স্লোগানের মুখোমুখি হতে হয়। রাস্তায় চলতে গিয়ে অনেকেই অজান্তে আইন অমান্য করে ফেলেন। ফলে গুনতে হয় জরিমানা। কিন্তু আমরা ক’জনই বা ট্রাফিক আইন সম্পর্কে জানি।
সারা দেশে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। মোটরযান চালানোর আইন-কানুন না জানা কিংবা তোয়াক্কা না করার প্রবণতাই এসব দুর্ঘটনার মূল কারণ বলে মনে করছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। কিন্তু পৃথিবীর অন্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও রয়েছে মোটরযানের জন্য প্রযোজ্য বিশেষ আইন। যা অমান্য করলে যান চালকের বিরুদ্ধে জরিমানা কিংবা মামলা হতে পারে।
কোন অপরাধে কত জরিমানা
ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ট্রাফিক আইন অমান্য করলে কোন অপরাধে কত জরিমানা গুনতে হবে, তার সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে। ১৯৮৩ সালের ‘মোটরযান আইন’ অনুযায়ী কোন অপরাধে কী শাস্তির বিধান আছে তা উল্লেখ রয়েছে।
অপরাধের মধ্যে- যানবাহনে নিষিদ্ধ হর্ণ বা হাইড্রোলিক হর্ণ ব্যবহার করলে মোটরযান আইনের ১৩৯ ধারা অনুযায়ী চালককে শাস্তি হিসেবে ১০০ টাকা জরিমানা গুনতে হবে। কোন চালক মোটরযান আইনের আদেশ অমান্য করলে বা বাধা সৃষ্টি ও তথ্য প্রদানে অস্বীকৃতি জানালে তার শাস্তি হচ্ছে ৪০০ টাকা জরিমানা (ধারা ১৪০(১)। ওয়ানওয়ে সড়কে বিপরীত দিকে গাড়ি চালানোর জন্য চালকের শাস্তি ২০০ টাকা জরিমানা (ধারা : ১৪০(২)। অতিরিক্ত গতি বা নির্ধারিত গতির চেয়ে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য চালকের জরিমানা ৩০০ টাকা, আবার অপরাধের পুনরাবৃত্তি করলে জরিমানা ৫০০ টাকা (ধারা : ১৪২)। দুর্ঘটনা সংক্রান্ত যেসব অপরাধ থানায় ব্যবস্থা নেয়া হয়নি : তার জরিমানা ৫০০ টাকা, অপরাধের পুনরাবৃত্তি করলে : জরিমানা ১০০০ টাকা (ধারা : ১৪৬)। নিরাপত্তা বিহীন অবস্থায় গাড়ি চালানোর জন্য চালকের জরিমানা ২৫০ থেকে ১০০০ টাকা (ধারা : ১৪৯)। কালো বা অতিরিক্ত ধোঁয়া বের হওয়া মোটরযান ব্যবহার করলে চালকের জরিমানা ২০০ টাকা (ধারা : ১৫০)। মোটরযান আইনের সাথে সঙ্গতিবিহীন অবস্থায় গাড়ি বিক্রয় বা ব্যবহার, গাড়ির পরিবর্তন করলে জরিমানা ২০০০ টাকা (ধারা : ১৫১)। রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা ফিটনেস সার্টিফিকেট অথবা রুট পারমিট ব্যতীত মোটরযান ব্যবহার করলে জরিমানা ১৫০০ টাকা, অপরাধের পুনরাবৃত্তি করলে জরিমানা ২৫০০ (ধারা : ১৫২)। অনুমোদনবিহীন এজেন্ট বা ক্যানভাসার নিয়োগ করলে জরিমানা ৫০০ টাকা, অপরাধের পুনরাবৃত্তি করলে জরিমানা ১০০০ টাকা (ধারা : ১৫৩)। অতিরিক্ত মাল বা অনুমোদিত ওজন অতিক্রম পূর্বক গাড়ি চালানোর জরিমানা ১০০০ টাকা, অপরাধের পুনরাবৃত্তি করলে জরিমানা ২০০০ টাকা (ধারা : ১৫৪)। বীমা ব্যতীত গাড়ি চালানোর জরিমানা ৭৫০ টাকা (ধারা : ১৫৫)। অনুমতি ব্যতীত গাড়ি চালানোর জরিমানা ৭৫০ টাকা (ধারা : ১৫৬)। প্রকাশ্য সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জরিমানা ৫০০ টাকা (ধারা : ১৫৭)। গাড়ির ব্রেক কিংবা কোনো যন্ত্র অথবা গাড়ির বডি কিংবা স্পিড গভর্নর সিল বা ট্যাক্সি মিটারের ওপর অন্যায় হস্তক্ষেপ করলে জরিমানা ৫০০ টাকা (ধারা : ১৫৮)। যেসব অপরাধের জন্য মোটরযান আইনে সুনির্দিষ্ট কোনো শাস্তির ব্যবস্থা নেই তার জরিমানা ২০০ টাকা, অপরাধের পুনরাবৃত্তি করলে জরিমানা ৪০০ টাকা (ধারা : ১৩৭)।
প্রসঙ্গত, ঢাকা মহানগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, আইনের কঠোর প্রয়োগ, জনসচেতনতা এবং শৃঙ্খলা ফেরাতে গত ১৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে ট্রাফিক শৃঙ্খলা কার্যক্রম। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চেকপোস্টে যানবাহনে তল্লাশি চলছে। প্রতিদিনই ট্রাফিক আইন ভঙ্গের অভিযোগে চালকের বিরুদ্ধে মামলা ও জরিমানা আদায় হচ্ছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement