২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
গ্রেডিং কার্যক্রমের উদ্বোধন

স্টিকারের রঙ দেখে নিরূপণ করা যাবে রেস্তোরাঁর মান

-

ভালো-মন্দ নিরূপণের সুবিধার্থে সারা দেশের রেস্তোরাঁগুলোকে গ্রেডিংয়ের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে গ্রাহকদের নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। রেস্টুরেন্টের মানের ক্রমানুসারে তালিকাভুক্ত করা হবে ‘এ+’, ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ এই চার ক্যাটাগরিতে। স্টিকার সাঁটানো হবে সবুজ, নীল, হলুদ এবং কমলা রঙের। যারা খেতে যাবেনÑ তারা রেস্তোরাঁয় প্রবেশের সময় স্টিকার দেখেই বুঝতে পারবেন ভেতরের পরিবেশ কেমন, কিচেনের অভ্যন্তরে কী ধরনের দূষণ বা কতটা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার রয়েছে। গ্রাহকদের সুবিধার্থে এবং উদ্যোক্তাদের হয়রানির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
গতকাল রোববার রাজধানীর পল্টনের একটি হোটেলে এই গ্রেডিং কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধনচন্দ্র মজুমদার। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো: কামরুল ইসলাম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক প্রমুখ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদ। গত বছরের ২ এপ্রিল কস্তুরী হোটেলে স্টিকার লাগিয়ে এই কার্যক্রমের পরীক্ষামূলক উদ্বোধন করে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিকভাবে রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা, পল্টন ও সচিবালয় এলাকায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে এসব এলাকার ১৮টি ‘এ+’ এবং ৩৯টি ‘এ’ গ্রেডের স্টিকার দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গ্রেডিং সিস্টেমের আওতায় খাবারের মান, বিশুদ্ধতা, পরিবেশ, ডেকোরেশন, মনিটরে রান্নাঘরের পরিবেশ দেখার ব্যবস্থা ও ওয়েটারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ভিত্তিতে রেস্তোরাঁগুলোতে চার ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করা হবে। এসব বিচারে ৯০ নম্বরের বেশি স্কোর হলে সবুজ বর্ণের স্টিকার ‘এ+’, স্কোর ৮০ এর ঊর্ধ্বে হলে নীল বর্ণের স্টিকার বা ‘এ’; ৫৫ থেকে ৭৯ পর্যন্ত স্কোর হলে হলুদ বর্ণের ‘বি’ এবং ৪৫ থেকে ৫৫ স্কোর হলে কমলা বর্ণের ‘সি’ ক্যাটাগরি পাবে। ‘এ+’ এর মানে হচ্ছে রেস্তোরাঁটি উত্তম, এ মানে ভালো, ‘বি’ মানে গড়পড়তা ভালো এবং ‘সি’ মানে গ্রেড পেন্ডিং। সবুজ রং আর নীল স্টিকারযুক্ত রেস্তোরাঁর মান নিয়ে ক্রেতাদের কোনো প্রশ্ন থাকতে পারে না। কিন্তু হলুদ স্টিকারধারী রেস্তোরাঁকে তাদের মান ও গ্রেড উন্নতির জন্য আপাতত তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হবে। একইভাবে কমলা বর্ণের রেস্তোরাঁকে গ্রেডিং বাড়ানোর জন্য এক মাস সময় দেয়া হবে। এ সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করা না হলে সংশ্লিষ্ট হোটেল-রেস্তোরাঁর লাইসেন্স বাতিল করা হবে।
কর্মসূচির উদ্বোধন করে খাদ্যমন্ত্রী সাধনচন্দ্র মজুমদার বলেন, অনেকে এসএসসি-এইচএসসিতে ‘এ’ প্লাস পেয়ে থাকে। কিন্তু তারা কি সেটা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারে? তেমনি আপনাদের যারা ‘এ+’ প্লাস ও ‘এ’ গ্রেড পেলেন আমরা আশা করি সরকারের দেয়া এই স্বীকৃতিটুকু ধরে রাখবেন। রেস্তোরাঁর ভালো মান বজায় রাখতে হবে।
মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, আপনাদের এই স্বীকৃতি সরকারি স্বীকৃতি। এই স্বীকৃতি পাওয়ার ফলে আপনাদের ব্যবসা ও লাভ আগের চেয়ে অনেকটাই বেড়ে যাবে। ভালো গ্রেডপ্রাপ্তদের মধ্যে পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ রেস্তোরাঁর মান যে কমবে না এটা কেউ গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারবে না। তাই নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত মনিটরিংয়ের অনুরোধ জানান তিনি।
অ্যাডভোকেট মো: কামরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর প্রথম কাজই ছিল নিরাপদ খাদ্যের ব্যবস্থা করা। সেই লক্ষ্যে উন্নত বিশ্বের মতো আমরা এই গ্রেডিং সিস্টেম চালু করেছি। সাবেক খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে আমিও এই কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত।
এটি একটি আন্তর্জাতিক মানসম্মত গ্রেডিং পদ্ধতি জানিয়ে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। রেস্তোরাঁ মালিকরা বারবার মোবাইল কোর্ট কার্যক্রমে জরিমানা দেয়ার ফলে আমাদের কাছে স্থায়ী সমাধান চেয়েছেন। আমরা তাদের জন্য এই সিস্টেম এনেছি।


আরো সংবাদ



premium cement