জাবি ছাত্রলীগ সেক্রেটারিকে চড়-থাপ্পড় মারলেন সাবেক সেক্রেটারি
- জাবি সংবাদদাতা
- ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ২৩:৫৯
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান সেক্রেটারি আবু সুফিয়ান চঞ্চলকে ক্যাম্পাসে এসে গালিগালাজ ও চড়-থাপ্পড় দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সাবেক সেক্রেটারি রাজিব আহমেদ রাসেলের নামে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সালাম-বরকত হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
রাজিব ও চঞ্চল বিষয়টি অস্বীকার করলেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের মাধ্যমে জানা যায়, ‘জাবি ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারি রাজিব আহমেদ রাসেল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় অনুসারীদের নিয়ে শহীদ সালাম বরকত হলের সামনে আসেন। আধিপত্য বিস্তার ও নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে চঞ্চলের সাথে রাগ-ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় তাকে। একপর্যায়ে তিনি চঞ্চলকে গালিগালাজ করেন। এমনকি রেগে গিয়ে চড়-থাপ্পড় দেয়। তখন চঞ্চল কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। এ সময় হলের সামনে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হলে হল প্রভোস্ট ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে হাজির হন। একই সাথে বিভিন্ন হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে বটতলাসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করতে দেখা যায়। পরে চঞ্চল ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
রাজিব আহমেদ রাসেল গত কমিটির সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন চঞ্চল ছিলেন তার একনিষ্ঠ অনুসারী। শাখা ছাত্রলীগ থেকে বিদায় নেয়ার দুই বছর পরও তিনি জাবি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে শক্ত প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তার করে যাচ্ছেন।
ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ‘কয়েক মাস ধরে রাজিব ও চঞ্চলের মধ্যে নানা বিষয়ে মতানৈক্যেরে কারণে দূরত্ব তৈরি হয়। ফলে চঞ্চলের কাছে থেকে তার সাবেক রাজনৈতিক গুরু রাজিব আহমেদ রাসেলের অনুসারীরা দূরে সরে যান। একই সাথে শাখার সহসভাপতি নিয়ামুল হাসান তাজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম মোল্লার নেতৃত্বে ভিন্ন বলয় তৈরি করেন।
সর্বশেষ গত ১৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী প্রচারণায় গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকা আসার পথে জাবি ক্যাম্পাসের সামনে শুভেচ্ছা জানাতে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঢাকা-আরিচা প্রধান সড়কে জড়ো হন। এ সময় চঞ্চলকে রেখেই তার অনুসারীদের একটি অংশ সহসভাপতি নিয়ামুল হাসান তাজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম মোল্লার নেতৃত্বে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। চঞ্চল পরে এসে কর্মসূচিতে অংশ নেয়। এ নিয়ে তখন থেকেই চঞ্চল ও তার রাজনৈতিক গুরু রাজিব আহমেদ রাসেলের মধ্যে দূরুত্ব দৃশ্যমান হয়। এরই সূত্র ধরে শুক্রবার রাতে রাজিব ক্যাম্পাসে এসে চঞ্চলকে গালিগালাজ ও মারধর করেন বলে জানা যায়। তবে গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র আয়োজিত বিজয় মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চলকে অংশ নিতে দেখা গেছে। এ সময় তার সাথে তুলনামূলক কমসংখ্যক অনুসারী দেয়া যায়।
এ বিষয়ে জাবির সাবেক ছাত্রলীগ সেক্রেটারি রাজিব আহমেদ রাসেল বলেন,‘সাম্প্রতিক সময়ে সেক্রেটারি প্যানেলের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়ে বিশৃঙ্খলা দেয়া দিয়েছিল। তাই আমি এ ব্যাপারে রাগ করেছি। বিশৃঙ্খলা নিরসন করার জন্য বলেছি।’ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হয়েও আপনি ক্যাম্পাসে এসে এমন করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে রাজিব বলেন, ‘কোনো সমস্যার তৈরি হলে তারা আমাকে ডাকে তাই আমি আসি এবং সমাধানের চেষ্টা করি।
এ বিষয়ে জাবি ছাত্রলীগ সেক্রেটারি আবু সুফিয়ান চঞ্চল বলেন, ‘সংগঠনে অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আমাদের হালকা বাগি¦তণ্ডা হয়েছে। মারধরের ঘটনা ঘটেনি। অনেকে অনেক কিছু বললেও তিনি আমার বড় ভাই। তাই আমি বিষয়টাকে নেতিবাচকভাবে দেখছি না।’ ছাত্রলীগের কোনো পদে না থেকেও রাজিব আপনার সাথে এমন আচরণ করতে পারে কিনা এমন প্রশ্নোত্তরে চঞ্চল বলেন, ‘সাবেক বড় ভাইয়ের ক্যাম্পাসে অনধিকার চর্চা করা কখনো শুভকর নয়। নিজের বিবেক ও আত্মসম্মানবোধ বিজর্সন দিয়ে হস্তক্ষেপ করাও কাম্য নয়। বিষয়টা আমি কেন্দ্রে জানিয়েছি। আশা করি সব বিভ্রান্তি দ্রæত দূর হবে। সব সমস্যার সমাধান হবে।’ এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজাওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সেক্রেটারি গোলাম রবাানিকে কল করেও পাওয়া যায়নি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা