১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জাবি ছাত্রলীগ সেক্রেটারিকে চড়-থাপ্পড় মারলেন সাবেক সেক্রেটারি‎

-

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান সেক্রেটারি আবু সুফিয়ান চঞ্চলকে ‎ক্যাম্পাসে এসে ‎গালিগালাজ ও চড়-থাপ্পড় দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সাবেক সেক্রেটারি ‎রাজিব আহমেদ রাসেলের নামে। ‎শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ‎সালাম-বরকত হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।‎
রাজিব ও চঞ্চল বিষয়টি অস্বীকার করলেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের মাধ্যমে ‎জানা যায়, ‘জাবি ‎ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারি রাজিব আহমেদ রাসেল শুক্রবার রাত ‎সাড়ে ১০টায় অনুসারীদের নিয়ে শহীদ ‎সালাম বরকত হলের সামনে আসেন। আধিপত্য ‎বিস্তার ও নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে চঞ্চলের সাথে রাগ-‎‎ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা ‎যায় তাকে। একপর্যায়ে তিনি চঞ্চলকে গালিগালাজ করেন। এমনকি রেগে গিয়ে চড়-‎‎‎থাপ্পড় দেয়। তখন চঞ্চল কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। এ সময় হলের সামনে উত্তপ্ত ‎পরিস্থিতি তৈরি হলে হল ‎প্রভোস্ট ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে হাজির হন। ‎একই সাথে বিভিন্ন হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে ‎বটতলাসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ‎অবস্থান করতে দেখা যায়। পরে চঞ্চল ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।‎
রাজিব আহমেদ রাসেল গত কমিটির সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন চঞ্চল ছিলেন তার ‎একনিষ্ঠ অনুসারী। শাখা ‎ছাত্রলীগ থেকে বিদায় নেয়ার দুই বছর পরও তিনি জাবি ‎ছাত্রলীগের রাজনীতিতে শক্ত প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তার ‎করে যাচ্ছেন।‎
ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ‘কয়েক মাস ধরে ‎রাজিব ও চঞ্চলের ‎মধ্যে নানা বিষয়ে মতানৈক্যেরে কারণে দূরত্ব তৈরি হয়। ফলে চঞ্চলের ‎কাছে থেকে তার সাবেক রাজনৈতিক ‎‎গুরু রাজিব আহমেদ রাসেলের অনুসারীরা দূরে সরে ‎যান। একই সাথে শাখার সহসভাপতি নিয়ামুল হাসান ‎তাজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ‎সাদ্দাম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম মোল্লার নেতৃত্বে ভিন্ন বলয় তৈরি ‎করেন।‎
সর্বশেষ গত ১৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী প্রচারণায় গোপালগঞ্জ থেকে ‎ঢাকা আসার পথে জাবি ‎ক্যাম্পাসের সামনে শুভেচ্ছা জানাতে শাখা ছাত্রলীগের ‎নেতাকর্মীরা ঢাকা-আরিচা প্রধান সড়কে জড়ো হন। এ ‎সময় চঞ্চলকে রেখেই তার ‎অনুসারীদের একটি অংশ সহসভাপতি নিয়ামুল হাসান তাজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ‎‎সাদ্দাম হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম মোল্লার নেতৃত্বে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। ‎চঞ্চল পরে এসে ‎কর্মসূচিতে অংশ নেয়। এ নিয়ে তখন থেকেই চঞ্চল ও তার রাজনৈতিক ‎গুরু রাজিব আহমেদ রাসেলের মধ্যে ‎‎দূরুত্ব দৃশ্যমান হয়। এরই সূত্র ধরে শুক্রবার রাতে ‎রাজিব ক্যাম্পাসে এসে চঞ্চলকে গালিগালাজ ও মারধর করেন ‎বলে জানা যায়। তবে ‎গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র আয়োজিত বিজয় মেলার উদ্বোধনী ‎‎অনুষ্ঠানে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চলকে অংশ নিতে দেখা ‎গেছে। এ সময় তার ‎সাথে তুলনামূলক কমসংখ্যক অনুসারী দেয়া যায়।‎
এ বিষয়ে জাবির সাবেক ছাত্রলীগ সেক্রেটারি রাজিব আহমেদ রাসেল বলেন,‘সাম্প্রতিক ‎সময়ে সেক্রেটারি ‎প্যানেলের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়ে বিশৃঙ্খলা দেয়া দিয়েছিল। তাই ‎আমি এ ব্যাপারে রাগ করেছি। বিশৃঙ্খলা ‎নিরসন করার জন্য বলেছি।’ সাবেক ছাত্রলীগ ‎নেতা হয়েও আপনি ক্যাম্পাসে এসে এমন করতে পারেন কিনা ‎এমন প্রশ্নের জবাবে ‎রাজিব বলেন, ‘কোনো সমস্যার তৈরি হলে তারা আমাকে ডাকে তাই আমি আসি এবং ‎‎সমাধানের চেষ্টা করি।‎
এ বিষয়ে জাবি ছাত্রলীগ সেক্রেটারি আবু সুফিয়ান চঞ্চল বলেন, ‘সংগঠনে অভ্যন্তরীণ ‎বিষয় নিয়ে আমাদের ‎হালকা বাগি¦তণ্ডা হয়েছে। মারধরের ঘটনা ঘটেনি। অনেকে ‎অনেক কিছু বললেও তিনি আমার বড় ভাই। তাই ‎আমি বিষয়টাকে নেতিবাচকভাবে ‎দেখছি না।’ ছাত্রলীগের কোনো পদে না থেকেও রাজিব আপনার সাথে এমন ‎আচরণ ‎করতে পারে কিনা এমন প্রশ্নোত্তরে চঞ্চল বলেন, ‘সাবেক বড় ভাইয়ের ক্যাম্পাসে ‎অনধিকার চর্চা করা ‎কখনো শুভকর নয়। নিজের বিবেক ও আত্মসম্মানবোধ বিজর্সন ‎দিয়ে হস্তক্ষেপ করাও কাম্য নয়। বিষয়টা আমি ‎‎কেন্দ্রে জানিয়েছি। আশা করি সব বিভ্রান্তি ‎দ্রæত দূর হবে। সব সমস্যার সমাধান হবে।’ এ বিষয়ে জানতে ‎ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ‎সভাপতি রেজাওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সেক্রেটারি গোলাম রবাানিকে কল করেও ‎‎পাওয়া যায়নি।‎


আরো সংবাদ



premium cement