১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খালেদা জিয়ার মনোনয়ন নিয়ে রিটের শুনানি শেষ

আজ আদেশ
-

ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও ৭ আসনে মনোনয়ন বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার করা রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
গতকাল সোমবার এ বিষয়ে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো: ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আদেশের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। শুনানিতে তাকে সহায়তা করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, ব্যারিস্টার এহসানুর রহমান। এ সময় সানাউল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার মীর হেলাল ও ব্যারিস্টার ফাইয়াজ জিবরান প্রমুখ আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
অন্য দিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তাকে সহায়তা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
শুনানির পর বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন কমিশন বেআইনিভাবে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার তিনটি মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিয়েছিল। আমরা আশা করছি, আজ বেগম খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাবেন এবং জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা অনুযায়ী আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মামলা সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন আছে। ফাইনাল পর্যায়ে যায়নি। পাশাপাশি যদি কারো দণ্ড হয়েও থাকে, সেটির আপিল যদি পেনডিং থাকে তাহলে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন, আদালতে এসব যুক্তি তুলে ধরেছি।
পাশাপাশি আমরা আদালতে আরো বলেছি, এই নির্বাচন কমিশন সরকারের ডিকটেশনে চলছে। কারণ বেগম খালেদা জিয়ার তিনটি আসনে মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। ওই তিনটার আদেশ একই। আমরা মনে করি তিনটির ব্যাপারেই অর্ডার কোনো একটি জায়গা থেকে দেয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে রিটার্নিং অফিসার এবং নির্বাচন কমিশনও মনোনয়ন বাতিল করেছে। আমরা ন্যায়বিচারের জন্য সুপ্রিম কোর্টে এসেছি। আশা করি দেশ ও জাতির স্বার্থে আদালত ন্যায়বিচার করবেন।
গতকাল সোমবার শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘ইলেকশন এক্সপার্ট মিশনের’ আইনজ্ঞ ইরিনি মারিয়া গোনারি। শুনানির শুরুতে এজলাস কক্ষের শেষ সারিতে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। এ সময় বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ তাকে দেখে বসার ব্যবস্থা করে দিতে বলেন। তখন শেষ সারির একটি বেঞ্চে আইনজীবীরা তাদের পাশে বসান গোনারিকে। শুনানি চলাকালে তাকে নোট নিতেও দেখা যায়।
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের দণ্ড নিয়ে গত ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন বেগম খালেদা জিয়া।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে খালেদার পক্ষে রিট আবেদন তিনটি গত রোববার দায়ের করেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার নওশাদ জমির। গতকাল সোমবার তা শুনানির জন্য ওঠে। বেগম খালেদা জিয়া ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। কিন্তু গত ৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে আপিলের শুনানির পর সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার তিনটি আসনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন এই সিদ্ধান্ত দেন। প্রার্থিতা বাতিল করা নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার পক্ষে রিট গত রোববার রিট আবেদন তিনটি দায়ের করা হয়।
নির্বাচন কমিশনের পুনঃতফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গত ৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন ছিল। গতকাল ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার পর থেকে অনেক প্রার্থী ও সমর্থক নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণা শুরু করে।


আরো সংবাদ



premium cement