২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের মাহবুব তালুকদার নির্বাচনের মাধ্যমে হলুদ গণতন্ত্র চাই না, চাই স্বচ্ছ গণতন্ত্র

-

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সংরক্ষণ ও পরিপালনের পূর্বশর্ত হলো আইনের শাসন। আইনের শাসন না থাকলে যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় তাকে আমরা হলুদ গণতন্ত্র বলতে পারি। আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে হলুদ গণতন্ত্র চাই না। চাই স্বচ্ছ ও স্বাভাবিক গণতন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায় অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন করে স্বচ্ছ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্রেদের উদ্দেশে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন বিষয়ে নির্দেশনামূলক বক্তব্যে গতকাল তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ইসি সভাপতি সভাপতিত্ব করেন। সিইসিসহ অন্যান্য কমিশনাররাও উপস্থিত ছিলেন এ সময়।
মাহবুব তালুকদার বলেন, বিচারকের দৃষ্টি হতে হবে নির্মোহ। তিনি অবশ্যই আইনানুগ মন বা ‘লিগ্যাল মাইন্ডের’ অধিকারী হবেন। যিনি এই অবস্থান থেকে বিচ্যুত হবেন, তিনি বিচারকের যোগ্যতা হারাবেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, আমরা বলে থাকি, নির্বাচন আইনানুগ করতে হবে। এ কথাটার ব্যাখ্যা প্রয়োজন। আইন যদি নিজস্ব খাতে প্রবাহিত না হয়, তাহলে আইনানুগ কথাটা অর্থহীন হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, আইনের মূল কথা হচ্ছে সব নাগরিকের প্রতি সম-আচরণ। ‘আইনের চোখে সবাই সমান’Ñ এই বাক্যের কোনো একক অভিব্যক্তি নেই। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সবাই সম-অধিকার ভোগ করেন কি না, সেটাই বিবেচ্য। জাতীয় নির্বাচনে সবার প্রতি সব আইন নিরপেক্ষভাবে প্রয়োগ হচ্ছে কি না, তা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, আপনারা নির্বাচনী ব্যবস্থাপনাকে আইনসিদ্ধ করার বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। নির্বাচনে অনিয়ম বা বিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে আপনারা কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করলে তা নির্বাচনকে ত্রুটিমুক্ত করার বিষয়ে অবদান রাখবে। বিচারকের দৃষ্টি হতে হবে নির্মোহ। তিনি অবশ্যই আইনানুগ মন বা ‘লিগ্যাল মাইন্ডের’ অধিকারী হবেন। যিনি এই অবস্থান থেকে বিচ্যুত হবেন, তিনি বিচারকের যোগ্যতা হারাবেন। আর একটি কথা। শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে আপনাদের সর্বোচ্চ সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন ভুয়া সাক্ষ্য প্রমাণে শাস্তি না পায়।
তিনি বলেন, এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক সার্বজনীন ও পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন করতে চাই। এ জন্য কেবল দেশবাসী নয়, বিশ্ববাসী এই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি মনে করি, আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মানুষ ইতিহাসের এক সোনালী অধ্যায় রচনা করবে। সেই সোনালী অধ্যায়ের রূপদানকারী আপনারা। আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে নির্বাচন যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, তা নিশ্চিত করা। জাতির এই ক্রান্তি লগ্নে আপনারা এক মহান দায়িত্ব নিয়েছেন। নির্বাচনের শুদ্ধতায় আপনাদের অবদান জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।
তিনি বলেন, একজন ভোটার নির্বিঘেœ বাড়ি থেকে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের ইচ্ছানুযায়ী প্রার্থীকে ভোট দিয়ে যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন, এটুকুই তো চাওয়া। রাজনৈতিক বাস্তবতায় এই সামান্য চাওয়া বাস্তবায়িত করতে এক বিশাল কর্মযজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছে। প্রায় ১২ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার সাথে সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement