২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

দেশে এক বছরে ৮৬৫ এইচআইভি শনাক্ত

-

এক বছরে বাংলাদেশে নতুন করে ৮৬৫ জন এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়েছে বলে শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তকৃত এ সংখ্যার ৩১ শতাংশই অভিবাসী (শ্রমিক)। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা (হু), ইউএনএইডসসহ বিভিন্ন সংস্থা বলছে, ২০১৭ পর্যন্ত বাংলাদেশে এইচআইভি আক্রান্ত ১৩ হাজার ২০০। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশে প্রথম এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পর থেকে গত বছর পর্যন্ত মোট পাঁচ হাজার ৫৮৬ জনকে (৪২.৩ শতাংশ) শনাক্ত করা গেছে এবং মারা গেছে ৯২৪ জন। অবশিষ্টদের অনেকেই জানেন না যে তিনি বা তারা এই রোগটির ভাইরাস বহন করছেন। বিশে^ সাতটি দেশে সবচেয়ে বেশি এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ দেশগুলো হলোÑ অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, পাপুয়ানিউগিনি, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ফিলিপাইন। এ দেশগুলোতে অনেক বেশি এইচআইভি আক্রান্ত তা অবশ্য নয়। এসব দেশে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী শনাক্তের আওতায় আসায় এখানে হঠাৎ করে সংখ্যাটা বেড়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
গতকাল মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে ‘বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সাথে আয়োজিত ‘এইচআইভি/এইডস বিষয়ক অ্যাডভোকেসি’ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের টিবি, ল্যাপ্রসি অ্যান্ড এএসপির লাইন পরিচালক অধ্যাপক মো: শামিউল ইসলাম। বাংলাদেশে এইচআইভি বাড়লেও তিনি এই রোগটিকে এখন আর মরণব্যাধি বলতে চান না। তিনি জানান, এইচআইভিতে আক্রান্তদের সব ধরনের চিকিৎসা ও ওষুধ সরকার দিচ্ছে। নিয়মিত ওষুধ চালিয়ে গেলে একজন এইচআইভি আক্রান্ত স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। তিনি বলেন, সরকারের সহযোগিতার কারণে গত এক বছরে এইচআইভি/এইডসে মৃত্যুর সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফ, স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের এনএএসসির পরিচালক ডা: মো: আমিনুল ইসলাম, বিষয়ের ওপর বিস্তারিত তুলে ধরেন এএসপির সিনিয়র ম্যানেজার আক্তারুজ্জামান।
শনাক্তকৃত এইচআইভির মধ্যে সবচেয়ে বেশি রাজধানী ঢাকায়। এরপরই চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে। এর বাইরে যেসব জেলায় অভিবাসী শ্রমিক বেশি রয়েছে তাদের মধ্যে বেশি পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে ১৩ হাজার জন এই রোগটির ভাইরাস বহন করলেও মোট জনসংখ্যার এটা ০.০১ শতাংশেরও কম। তবে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভির হার ৩.৯ শতাংশ। এ ছাড়া ইনজেকশনের মাধ্যমে যারা মাদক নিয়ে থাকেন (পিডব্লিআইডি) এরা মোট সংখ্যার ৫ শতাংশ এবং সবচেয়ে বেশি ২২ শতাংশ রাজধানী ঢাকার একটি অঞ্চলে।
অধ্যাপক শামিউল ইসলাম বলেন, এইচআইভি আক্রান্ত মায়েদের জন্য সরকার বিশেষ কর্মসূচি নিয়েছে। ২০১৩ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ৯১ জন আক্রান্ত গর্ভবতী মা ৯২টি শিশু জন্ম দেন (একজন মা যমজ শিশুর জন্ম দেন)। এর মধ্যে ৮৯ শিশুর জীবিত জন্ম হয়। পরে তিনটি শিশু মারা যায় নানা জটিলতায়। এইচআইভি আক্রান্ত মায়ের গর্ভে জন্ম নেয়া ৮৯টি শিশুর মধ্যে মাত্র একটি শিশু এইচআইভিতে আক্রান্ত। এ প্রসঙ্গে বলা হয়, ওই শিশুর মা সময় মতো মনিটরিংয়ে আসেননি। অধ্যাপক শামিউল ইসলাম বলেন, এইচআইভি আক্রান্ত মায়েরা সঠিক চিকিৎসা নিলে সুস্থ ও এইচআইভিমুক্ত শিশুর জন্ম দিতে পারেন।
উল্লেখ্য, ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয়, সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কক্সবাজার সদর হাসপাতাল, খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকার খিলগাঁওসহ বিভিন্ন হাসপাতালে এইচআইভির চিকিৎসা দেয়া হয়।
প্রতি বছর ১ ডিসেম্বর সারা বিশে^ বিশ^ এইডস দিবস পালন করা হয়। এবারো ১ ডিসেম্বর সরকারিভাবে দিবসটি পালন করা হবে। এবার বিশ^ এইডস দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, এইচআইভি পরীক্ষা করুন, নিজের অবস্থান জানুন।


আরো সংবাদ



premium cement