২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয়ের অসহযোগিতা

মুক্তিযুদ্ধে শহীদ মিত্রবাহিনী স্মৃতিস্তম্ভ
-

অনুমোদনের এক বছর অতিক্রাস্ত হয়েছে। অথচ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকালে শহীদ মিত্রবাহিনীর সদস্যদের জন্য নেয়া স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণকাজ আজো শুরু হয়নি। নির্ধারিত জায়গা হস্তান্তরের ব্যাপারে রেল বিভাগের অসহযোগিতার কারণে প্রকল্পটি এক বছর ধরে স্থবির হয়ে আছে। রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে খোদ মন্ত্রণালয়ই এখন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এখন বাধ্য হয়ে বিকল্প স্থান খুঁজছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র বলছে, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর এক হাজার ৬৬১ জন সৈনিক জীবন উৎসর্গ করেন। বিষয়টি স্মৃতিবহ ও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এই স্তম্ভ নির্মাণের জন্য যে প্রকল্প নেয়া হয় তাতে ব্যয় ধরা হয় ১৬ কোটি ৩০ লাখ ২৫ হাজার টাকা। দুই বছরের এই প্রকল্প গত বছর ৩০ সেপ্টেম্বর অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু জমি পাওয়া সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এখনো প্রকল্পের কাজই শুরু হয়নি।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য নির্বাচিত স্তানটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন। প্রকল্পের জন্য নির্বাচিত বা চিহ্নিত স্থানটি প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ প্রদানের প্রারম্ভিক পর্যায়েই জানা যায়, মহাসড়কটি চারলেনে নেয়ার পরিকল্পনার কারণে স্থানটি কোনোভাবেই বরাদ্দ দেয়া যাবে না। অন্য দিকে বাংলাদেশ রেলওয়ের মালিকানাধীন জমি প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দের জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেয়া হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রস্তাব প্রেরণের পর একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু জমি প্রাপ্তির বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে আশানুরূপ কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের (উন্নয়ন) নেতৃত্বে গঠিত প্রতিনিধিদল গত ৪ আগস্ট প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন। সে সময় ডিসির প্রতিনিধি হিসেবে ইউএনও উপস্থিত ছিলেন। বলা হয়েছে, প্রকল্পের জন্য জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত দু’টি স্থান পরিদর্শন করা হয়। স্থান দুটোর মধ্যে আশুগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের নিকটবর্তী স্থানটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে দুই কিলোমিটারের বেশি দূরে অবস্থিত। যাতায়াতের জন্য রাস্তাটি সরু বলে প্রকল্পের জন্য উপযোগী নয়। এই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজন তিন একর জমি।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধানের অভিমত হলো, প্রকল্পের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিক বিষয়াদি বিবেচনায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন স্থানটি অধিকতর উপযোগী। তাই কম-বেশি তিন একর জমি অধিগ্রহণের সংস্থান রেখে প্রকল্পটি দ্রুত সংশোধন করা দরকার। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে নিহত ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সদস্যদের সঠিক বা পূর্ণ নাম, র্যাংক ও অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করে স্মৃতিস্তম্ভের নামফলকে লিপিবদ্ধ করা গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে দক্ষ কোনো গবেষক প্রয়োজন।
প্রকল্প পরিচালক জানান, জমি প্রাপ্তি নিশ্চিত না হওয়ার কারণে প্রকল্পের বাস্তবায়ন বিঘিœত হচ্ছে। সুষ্ঠুভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রকল্পের জন্য জমি প্রাপ্তির বিষয়টি জরুরিভিত্তিতে সুরাহা করা প্রয়োজন।

 


আরো সংবাদ



premium cement