খুলনায় এক পরিবারের কাছে ৩০ লাখ টাকা আদায়
- খুলনা ব্যুরো
- ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০
কাজী আব্দুল মুনিম ও তানজিলা হাসান ঝুমা স্বামী-স্ত্রী। তাদের বাড়ি খুলনা মহানগরীর ছোট বয়রা এলাকার করিমনগরে। তারা কয়েক বছর ধরে মহানগরীর নিরালা আবাসিক এলাকার একটি বাড়িতে লোকজনদের প্রেমের ফাঁদে ফেলাসহ নানা কৌশলে ধরে নিয়ে মেয়েদের সাথে আপত্তিকর ছবি তুলে তা ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। এভাবে একটি পরিবারের কাছ থেকেই ৪ বছর ধরে তারা আদায় করে ৩০ লক্ষাধিক টাকা। কিন্তু ‘চোরের দশ দিন গৃহস্থের এক দিন’। তাই শেষমেশ তারা গত সোমবার ধরা পড়েছে র্যাব-৬ এর সিপিসি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: এনায়েত হোসেন মান্নানের হাতে।
গতকাল মঙ্গলবার র্যাব-৬ সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দম্পতির প্রতারণা ও আটকের তথ্য জানানো হয়। র্যাব কর্মকর্তারা জানান, তারা জিজ্ঞাসাবাদে একটি ঘটনার বিস্তারিত জানায়। ৪ বছর আগে ওয়াজেদ আলী নামক ব্যক্তিকে তারা আলী কাবের মোড়ে একটি তিনতলা বাড়ির নিচতলার রুমের মধ্যে ব্যবসায়িক কাজের কথা বলে নিয়ে যায়। সেখানে একটি মেয়েকে দিয়ে নানা রকম আপত্তিকর ছবি ও প্রায় ২০ মিনিটের ভিডিও করে তাদের কাছে রাখে। তারপর ধারণকৃত ছবি ও ভিডিও বিভিন্ন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ছাড়বে বলে টাকা দাবি করে এবং ওয়াজেদ আলীর কাছে থাকা চেক বইয়ে জোর করে স্বাক্ষর করিয়ে কাজী আব্দুল মুনিম তাৎক্ষণিকভাবে ৮ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে তুলে নেয়। পরে ওয়াজেদের ছেলে মো: তৌহিদুজ্জামান সুমনের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা আদায় করে। ওয়াজেদ আলীর স্ত্রীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা আদায় করে। পরিবারটিকে ব্ল্যাক মেইল করে ৩০ লাখ টাকা নেয়ার পর কয়েক বছর চুপ থাকে। তারপর গত ১৮ সেপ্টেম্বর তারিখে ০১৭৭২-৭৮৭৫৩৯ ও ০১৬৭০-৪৬১৫৯৭ নম্বর মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ওয়াজেদ আলীর কাছে আবার ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। পরিবারটি বার বার এত টাকা দিতে পারবে না বলে বিষয়টি স্থায়ী ভাবে সমাধানের প্রস্তাব দেয়। এরপর রেশমা নামক একজন স্থায়ীভাবে বিষয়টি সমাধান করার জন্য ২০ লাখ টাকা দাবি করে বিকাশ নং-০১৭৩২-১৪৪১৬০ প্রদান করে। ১৮ তারিখ রাতে মোবাইল ০১৭৩২-১৪৪১৬০ নম্বরে ১০ হাজার টাকা করে দুইবার মোট ২০ হাজার টাকা প্রেরণ করে। এর পরেও আসামিরা মোবাইল ০১৬৭০-৪৬১৫৯৭ ও ০১৭৭২-৭৮৭৫৩৯ নম্বরের মাধ্যমে প্রাথমিক দাবির বাকি ৩০ হাজার টাকা দাবি করতে থাকে। এ ছাড়াও তারা ভিকটিমের পুত্রবধূ শ্রাবণীর ফেইস বুকের মাধ্যমে অশালীন ভাষা এবং আপত্তিকর স্টিল ছবি আপলোড দিয়ে ভিডিও ইউটিউবে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিতে থাকে। ফলে ভিকটিমের পরিবার ২০.০৯.১৮ তারিখে খুলনা সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। ওই ডায়েরির কপিসহ র্যাব-৬ খুলনার কাছে একটি অভিযোগ দাখিল করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব-৬ এর পক্ষ থেকে তথ্য ও প্রযুক্তি ও বিকাশ কর্তৃপক্ষের সহায়তায় বিষয়টি যাচাই করা হয় এবং এক পর্যায়ে তানজিলা হাসান ঝুমা (২৪) ও তার স্বামী কাজী আব্দুল মুনিমকে গ্রেফতার করা হয়। ২০ সেপ্টেম্বর যে মোবাইল নম্বর দু’টিতে টাকা পাঠানো হয় তা আসামি তানজিলা হাসান ঝুমার নম্বর বলে জানা যায়। এ ছাড়া ঝুমার নামে আরো মোবাইল সিম রেজিস্ট্রেশন করা আছে এবং সেগুলো অর্থ লেনদেনে ব্যবহার করা হত। তাদের কাছ থেকে এরকম ১২টি মোবাইল সিম, ইন্টারনেটে প্রেরণকৃত কাগজপত্রের ফটোকপি-৪০ পাতা, একটি মেমোরি কার্ড ও একটি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়।
তাদের বিরুদ্ধে খুলনা সোনাডাঙ্গা থানায় তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে র্যাব জানায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা