২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

নীতিমালার শর্তপূরণের পর এমপিও দেয়া হবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে

আগামী মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত
-

এমপিও নীতিমালা বা জনবল কাঠামো-২০১৮’র শর্তপূরণ করার পরও নতুন বেসরকারি শিাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তি হবে ‘সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে’। সে প্রক্রিয়ায় কাজ চলছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে বলা হচ্ছে। তবে প্রথম থেকে নির্ধারিত যে সংখ্যার কথা (প্রথম ধাপে এক হাজার) বলা হচ্ছে, এমপিও দেয়ার সময় সে সংখ্যা বাড়বে বলে জানা গেছে। সে সংখ্যাটি কত তা নিশ্চিত করা হয়নি। এ ধরনের ঘোষণা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেই দেয়া হবে। এ দিকে, বেসরকারি শিাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির বিষয়টি আগামী মাসের মধ্যে ফয়সালা হবে বলে জানিয়েছেন শিামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
আট বছর বন্ধ থাকার পর চলতি অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ না রাখা হলেও ‘বিশেষ ও থোক বরাদ্দ’ থেকে নতুন বেসরকারি শিাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেয়া হয়েছে গত জুনে চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) বাজেট জাতীয় সংসদে উত্থাপনের পর থেকে। এ লক্ষে গত ১৪ জুন জারি করা হয় এমপিও নীতিমালা বা জনবল কাঠামো-২০১৮। যদিও এ নীতিমালা নিয়ে সব শিক্ষক সংগঠনের আপত্তি রয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একধিক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল পর্যন্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হাতে বেসরকারি স্কুল- কলেজ- মাদরাসা এবং কারিগরি মিলে মোট ৯ হাজার ৪৯৮টি আবেদন জমা পড়েছে। এগুলোকে যাচাই-বাছাই এবং সর্বশেষে যোগ্যদের তালিকা চূড়ান্ত করার পর সেগুলোতে সরেজমিন পরিদর্শন করা হবে। এরপরই চূড়ান্ত তালিকা পাঠানো হবে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে কোনো প্রতিষ্ঠানকে এমপিও দেয়া হবে। এখানে মন্ত্রণালয় দাফতরিক কাজ করছে মাত্র। মন্ত্রণালয়ের বা অন্য কারো কোনো ক্ষমতা বা অনুমতি নেই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার।
গত সপ্তাহে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে নতুন করে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যাচাই-বাছাইকৃত প্রতিষ্ঠান সরেজমিন পরিদর্শন করে এমপিওভুক্তির জন্য নির্বাচন করা হবে।
বেসরকারি শিাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিও দিতে গত ২০ জুন দু’টি কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিা বিভাগ। এর একটি শর্তপূরণ করা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রস্তুতের জন্য ‘অনলাইন আবেদন গ্রহণ ও ব্যবস্থাপনা’ কমিটি এবং অন্যটি ‘এমপিওভুক্তির জন্য যাচাই-বাছাই’ কমিটি। চলতি মাসে যাচাই-বাছাই কমিটির বৈঠক করার কথা থাকলেও গতকাল পর্যন্ত কমিটির কোনো বৈঠক হয়নি। কমিটির প্রধান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক) জাবেদ আহমেদ নয়া দিগন্তকে বলেন, কমিটির বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি। আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আবেদন যাচাই-বাছাই করতে। আমরা সে কাজই করছি। এমপিও দেয়া হবে সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে।
এদিকে, মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ে একাধিক কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে জানা গেছে, যাচাই-বাছাই কমিটির কাছ থেকে তালিকা পাওয়ার পর সেটি সচিব ও মন্ত্রীর অনুমোদনের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে। সেখানেই এমপিওভুক্তির তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ২০১০ সালে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে এমপিও দেয়ার পর প্রথমে এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। পরে তা নিয়ে মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন রাজনৈতিক উপদেষ্টার মধ্যে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছিল। তাই এবার নতুন করে কোনো ধরনের বিতর্কে জড়াতে চান না মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়াও গত ১০ বছর এমপিওভুক্তি বন্ধ থাকায় মন্ত্রী বা মন্ত্রণালয় দলীয় এমপিদের প্রচণ্ড চাপের মুখে রয়েছে। তাই কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না তারা।
অপর দিকে, যাচাই-বাছাই কমিটি নীতিমালার শর্তপূরণ করা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে যোগ্যদের খুঁজতে গিয়েও নানামুখী চাপের মধ্যে রয়েছে। প্রতিনিয়তই কমিটির প্রধানসহ অন্য সদস্যদের সরকারের হেভিওয়েট এমপিরা এসে নিজ নিজ আসনের প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তদবির করছেন। যাচাই-বাছাই তালিকা থেকে তার সুপারিশকৃত প্রতিষ্ঠান বাদ না পড়ে তা নিশ্চিত করতে চাপ দিচ্ছেন।
গত ১৪ জুন জারি করা এমপিও নীতিমালা বা জনবল কাঠামোতে এমপিওভুক্তির জন্য যে সব শর্তের কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলো হচ্ছেÑ শিক নিয়োগে বয়সসীমা ৩৫ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী, শিাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য ১০০ নম্বরের গ্রেডিং করা হবে। তার মধ্যে একাডেমিক স্বীকৃতিতে ২৫ নম্বর (প্রতি দুই বছরের জন্য পাঁচ নম্বর, ১০ বা তার চেয়ে বেশি বয়স এমন প্রতিষ্ঠানের জন্য ২৫ নম্বর), শিার্থীর সংখ্যার ওপর ২৫ নম্বর (কাম্য সংখ্যার জন্য ১৫ নম্বর, এরপর ১০ শতাংশ বৃদ্ধিতে পাঁচ নম্বর), পরীার্থীর সংখ্যার জন্য ২৫ নম্বর (কাম্য সংখ্যার েেত্র ১৫ ও পরবর্তী প্রতি ১০ জনের জন্য পাঁচ নম্বর), পাবলিক পরীায় উত্তীর্ণের জন্য ২৫ নম্বরের (কাম্য হার অর্জনে ১৫ নম্বর ও পরবর্তী প্রতি ১০ শতাংশ পাসে পাঁচ নম্বর) গ্রেডিং করা হবে।
বেসরকারি কলেজের প্রভাষকদের এমপিওভুক্তিতর েেত্র বিষয়ভিত্তিক ২৫ জন শিার্থী বাধ্যতামূলক থাকতে হবে। তবে বিজ্ঞান বিভাগে ১৫ জন শিার্থী থাকলেও চলবে। আর নতুন জনবল কাঠামোতে সৃষ্ট পদের শিক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা দেয়া হবে না; কিন্তু নতুন পদে এমপিওভুক্তি করা হবে। নতুন জনবল কাঠামোর বাইরে কর্মরতদের পদ শূন্য হলে নতুন করে নিয়োগ দেয়া যাবে না। এ েেত্র, যারা এমপিওভুক্তি নন; কিন্তু বৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছেন, তাদের নতুন পদে পদায়ন করতে হবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়।
এমপিওভুক্তির দাবিতে অনশনকারী নন-এমপিও শিক্ষক নেতা, নন-এমপিও শিাপ্রতিষ্ঠান শিক-কর্মচারী ফেডারেশনের অধ্য মাহমুদন্নবী ডলার নয়া দিগন্তকে বলেন, আমাদের দাবি ছিল এবং এখনো আছে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব প্রতিষ্ঠানকেই এমপিওর আওতায় নেয়া। প্রয়োজনে ধাপে ধাপে করা যেতে পারে। তবে সবগুলোর গেজেট করা যেতে পারে। বেতনও ধাপে ধাপে দেয়া হোক। এখনই যদি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওর আওতায় আনা না হয়, তাহলে প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। শিক্ষকেরা বেকার হয়ে যাবেন। তাদের চাকরির আর কোনো সুযোগ থাকবে না। কারণ ১৭-১৮ বছর ধরে বহু শিক বিনা বেতনে চাকরি করছেন। তাদের বয়স এখন শেষের দিকে।


আরো সংবাদ



premium cement
আওয়ামী লীগকে ‘ভারতীয় পণ্য’ বললেন গয়েশ্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে দাগনভুঞার যুবক নিহত কাশ্মিরে ট্যাক্সি খাদে পড়ে নিহত ১০ অবশেষে অধিনায়কের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছল পাকিস্তান জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ বাতিল করে কেন নতুনের জন্য বিজ্ঞপ্তি! বাইডেনের মেয়াদে রুশ-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির কোনো আশা নেই : রুশ রাষ্ট্রদূত

সকল