১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করেও রেহাই মিলছে না গৃহবধূর

মামলা তুলে নিতে হত্যার হুমকি
-

নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাংগুয়েজ কাব থেকেই সামসিয়া তুজ সারোয়ার ও খন্দকার মো: হাসানুলের পরিচয়। এরপর একে অপরকে ভালো লাগা। আর সেই ভালো লাগা থেকে দু’জন জড়িয়ে যান ভালোবাসার বন্ধনে। পরে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। কিন্তু সুখ যে বেশি দিন সইলো না সামসিয়ার জীবনে। বিয়ের কিছু দিনের মাথায় তার সেই ভালোবাসার মানুষের আসল রূপ প্রকাশ পায়। যৌতুকের ১৫ লাখ টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে মেয়েটিকে। শুরু হয় মানসিক-শারীরিক নির্যাতন। তবুও স্বামীর ঘর ছাড়েননি সামসিয়া। এরপর এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে বেদম মারধর করে স্বামী হাসানুল। এরপর তার ঠাঁই হয় মেডিক্যালে। বেশ কিছু দিন চিকিৎসা শেষে বাবার বাড়িতে ওঠেন সামসিয়া। এরপর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যৌতুক মামলা করেন ভুক্তোভোগী। এর পর থেকেই মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিয়ে আসছেন স্বামী খন্দকার মো: হাসানুল। এতে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে সামসিয়ার পরিবার। এ ঘটনায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর রোববার টঙ্গী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন সামসিয়া, যার নম্বর ৭২৩।
জিডিতে তিনি অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকে আমার স্বামী যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে। এরপর তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলায় স্বামী হাসানুলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু হওয়ার পর আমাকে ও আমার পরিবারের লোকজনকে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদান করে আসছে। পরে সে জামিনে মুক্ত হয়; কিন্তু তার হুমকি, ভয়ভীতি প্রদান অব্যাহত থাকে। সর্বশেষ গত ১৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুরে টঙ্গীর স্টেশন রোডের বাসায় এসে মামলা তুলে না নিলে জীবননাশের হুমকি দিয়ে যায়।
ভুক্তোভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২৪ জুলাই ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক দেড় লাখ টাকা মোহরানায় সামসিয়া তুজ সারোয়ার ও খন্দকার মো: হাসানুলের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মেয়ের বাবা ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও ১০ লাখ টাকার উপঢৌকন দেন। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে টাকা দাবি করে আসছে হাসানুল। মেয়ের পরিবার থেকে যতটুকু সম্ভব দিয়েছেন। এরপর ঢাকায় জমি কেনার জন্য ১৫ লাখ টাকা চায় হাসানুল। এত টাকা তারা কোথা থেকে কিভাবে দেবে এ কথা বলার পর থেকেই সামসিয়ার ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সামসিয়াকে তার স্বামী ও মা বিলকিস বেগম যৌতুকের ওই ১৫ লাখ টাকার দাবিতে বেধড়ক মারধর করে। নির্যাতন সইতে না পেরে মেয়েটি বাবার বাড়িতে ওঠেন। পরে পরিবারের লোকজন তাকে মেডিক্যালে ভর্তি করেন।
ভুক্তোভোগী সামসিয়া নয়া দিগন্তকে বলেন, আমরা খুবই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বাধ্য হয়ে অনেক সময় ফোন বন্ধ করে রাখি। স্বামীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে মামলা করেও আমার নিস্তার নেই। এখন হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এতে আমি ও আমার পরিবার খুবই ভয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। তিনি অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকে প্রথম দুই বছর ভালোই কাটছিল। এর পর থেকেই ওর ডিমান্ড বাড়তে থাকে। আর সেই ডিমান্ড মেটাতে না পেরেই আজ এ অবস্থা। ওদের নির্যাতনটা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে আমি এখনো সাফার করছি। এখনো আমাকে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হয়।
তিনি বলেন, বিয়ের পর ওর আয়কর অফিসে চাকরি হয়। এরপর রাজশাহীতে পোস্টিং ছিল। তখন আমি ঢাকায় একটি কোম্পানিতে জব করতাম। এরপর ওর রংপুরে পোস্টিং হলে ওর সাথে থাকার জন্য চাকরি ছেড়ে দিই। কিন্তু নেবে নেবে বলে আর নেয়নি। রংপুর থেকে বিমানে ঢাকায় এসে আমায় বলতো আমি বাসে ঢাকায় আসতেছি। পরে হাসানুলের এক কলিগ আমায় ফোন দিয়ে বলে যে, ‘আপনার স্বামীর দিকে খেয়াল নিয়েন ও-কিন্তু ঢাকায় অবস্থান করছে। এরপর আমি খোঁজ নিতে নিতে হোটেল-৭১-এ গিয়ে ওকেসহ ওর এক মেয়ে কলিগকে পাই। জানতে পারি তাদের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে পরকীয়া চলছে। এ ঘটনার পর থেকে তার প্রতি নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায় বলে অভিযোগ করেন সামসিয়া তুজ সারোয়ার।


আরো সংবাদ



premium cement
চাটমোহরে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তি, এদের রুখতে হবে : ওবায়দুল কাদের সাদিক এগ্রোর ব্রাহামা জাতের গরু দেখলেন প্রধানমন্ত্রী ভারতে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২

সকল