২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যাত্রাবাড়ীতে শিশু সানজিদা হত্যার আলামত মিলেছে : শিক্ষিকা ও তার স্বামী গ্রেফতার

-

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে শিক্ষিকার বাসায় ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া শিশু সানজিদা আক্তারকে (১০) হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় সানজিদার শিক্ষিকা নুসরাত জাহান মনি ও তার স্বামী মোরশেদ আলমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার প্রায় তিন মাস পর সানজিদার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর পুলিশ গতকাল ওই শিক্ষিকা ও তার স্বামীকে গ্রেফতার করল। যদিও সানজিদার পরিবার বার বার অভিযোগ করে আসছিল তাদের মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষিকার দাবি ছিল খেলার ছলে গলায় ফাঁস লেগে তার মৃত্যু হয়। এ দিকে ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে ‘শিশু সানজিদাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে এমন আলামত পাওয়া গেছে।’ যদিও তাকে কী কারণে হত্যা করা হয়েছে সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত নয় পুলিশ। হত্যার আগে সানজিদাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না তা জানতে পুলিশকে ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
সানজিদার পরিবার জানায়, সানজিদা যাত্রাবাড়ীর মোহাম্মদিয়া আরাবিয়া কওমি মাদরাসার চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। মাদরাসায় ক্লাসের পড়া শেষ করে বিকেলে প্রতিবেশী লামিমকে (সানজিদার থেকেও বয়সে ছোট) সাথে নিয়ে স্থানীয় ফুলকলি হাইস্কুলের শিক্ষিকা নুসরাত জাহান মনির কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই বাসাতে পড়াশোনা করে। প্রতিদিনের মতো সেদিনও লামিমাকে সাথে নিয়ে ২ নম্বর বিবি বাগিচা, ৭৩/২/এম উত্তর যাত্রাবাড়ীর পঞ্চম তলায় ম্যাডামের বাসায় পড়তে যায়। সন্ধ্যায় লামিমা ফিরে এলেও সানজিদা আর বাসায় ফেরেনি। এ সময় সানজিদার মা জান্নাতি লামিমার কাছে সানজিদার কথা জানতে চাইলে সে কিছুই বলতে পারেনি। পরে তিনি ম্যাডামকে ফোন করে তার মেয়ের কথা জানতে চান। এ সময় ম্যাডাম ফোনে জানান, তার মেয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় রশি পেঁচিয়ে মারা গেছে। এ কথা শুনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন জান্নাতি। এরপরই আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে ছুটে যান সেখানে।
নিহত সানজিদার চাচা অ্যাডভোকেট আলমগীর বলেন, খবর পেয়ে তিনিসহ অন্যরা ছুটে যান সেখানে। গিয়ে দেখেন ওই বাসার মালিক ওই শিক্ষিকা ও তার স্বামীকে আটক করে পুলিশকে খবর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সানজিদার গলায় রশি পেঁচানো। রশির অপর প্রান্ত সিলিং ফ্যানের সাথে বাঁধা। তবে সানজিদার পা ছিল ফ্লোরের সাথে মেশানো। তা ছাড়া ১০ বছরের মেয়ে শিশুর পক্ষে এতটা ওপরে থাকা সিলিং ফ্যানের সাথে রশি বাঁধা সম্ভব নয়। হত্যার কোনো প্রমাণ না থাকায় এই ঘটনায় তখন যাত্রাবাড়ী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ পাঠানো হয় মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে। প্রায় তিন মাস পর গত বৃহস্পতিবার সানজিদার লাশের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট যাত্রাবাড়ী থানায় পৌঁছায়। থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী জানান, রিপোর্টে শ্বাসরোধে হত্যার আলামত মিলেছে। তাই শিক্ষিকা ও তার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কী কারণে সানজিদাকে হত্যা করা হয়েছে সে ব্যাপারে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement