২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
সাবেক পরিচালক চিকিৎসক ঠিকাদারসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

রমেক হাসপাতালে ৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

-

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওষুধসহ বিভিন্ন খাতে ভুয়া ভাউচারে ক্রয় দেখিয়ে সাড়ে আট কোটি টাকা আত্মসাৎ ও দরপত্র ছাড়াই সাড়ে ৯ কোটি টাকার কার্যাদেশ প্রদানের অভিযোগে মামলা হয়েছে সাবেক পরিচালক, চার চিকিৎসক ও চার ঠিকাদারসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে। দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদুকের ঢাকা অফিসের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক রংপুর কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেছেন।
দুদক রংপুর আঞ্চলিক অফিসের সহকারী পরিচালক আতিকুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে জানান, মামলায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা: আ স ম বরকত উল্লাহ, সহকারী পরিচালক (অর্থ ও ভাণ্ডার) ডা: মো: শফিকুল ইসলাম, সাবেক সহকারী পরিচালক ডা: বিমলকুমার বর্মণ, সাবেক উপপরিচালক ডা: পরিতোষকুমার দাসগুপ্ত ও সাবেক উপপরিচালক ডা: মো: জহিরুল হক, প্রধান মেডিসিন স্টোরের ইনচার্জ ফার্মাসিস্ট মো: আনিছুর রহমান, ফার্মাসিস্ট মো: মোকছেদুল হক, স্টুয়ার্ড মো: আজিজুল ইসলাম ও স্টুয়ার্ড মো: আসাদুজ্জামান এবং ঠিকাদার রংপুরের স্থানীয় মেসার্স ম্যানিলা মেডিসিনের স্বত্বাধিকারী মনজুর আহমেদ, এম এইচ ফার্মার মালিক মোসাদ্দেক হোসেন, মেসার্স অভি ড্রাগসের মালিক মো: জয়নাল আবেদীন ও মেসার্স আলবিরা ফার্মাসির মালিক মো: আলমগীর হোসেনকে আসামি করা হয়েছে।
সহকারী পরিচালক আতিকুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে জানান, অভিযোগটি ঢাকা অফিসের কর্মকর্তারা তদন্ত করেছেন। সেই তদন্তের আলোকেই ঢাকার একজন অফিসার শনিবার রংপুর কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেছেন।
কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ বাবলু মিয়া নয়া দিগন্তকে জানান, মামলায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জন্য ওষুধসহ বিভিন্ন খাতে আট কোটি ৬১ লাখ ১৭ হাজার ৭৩৯ টাকা আত্মসাৎ ও বিনা দরপত্রে ৯ কোটি ৫৩ লাখ ৬১ হাজার ৩৬ টাকার কার্যাদেশ প্রদানের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় বলা হয়েছে, আসামিরা সিন্ডিকেট করে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে হাসপাতালের এমএসআর (মেডিসিন, সার্জিক্যাল, রিঅ্যাজেন্ট) খাতে ইনজেকশন সেমিপাইম-১ ক্রয় দেখিয়ে পাঁচ কোটি ১০ লাখ ৪১ হাজার ৪০৬ টাকা ও পথ্য খাতে তিন কোটি ৫০ লাখ ৭৬ হাজার ৩৩২ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়াও বিনা দরপত্রে ৯ কোটি ৫৩ লাখ ৬১ হাজার ৩৬ টাকার কার্যাদেশ প্রদান করেছিলেন। ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০ ও ১০৯ ধারায় এই মামলাটি করেছেন দুদক কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা: বরকত উল্লাহর সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে মামলায় এজাহার নামীয় স্থানীয় ঠিকাদার মেসার্স ম্যানিলা মেডিসিনের স্বত্বাধিকারী মনজুর আহমেদ নয়া দিগন্তকে জানান, মামলাটি মিথ্যা ও বানোয়াট। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ওই মামলাটি করে আমাদের হয়রানি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের ওই কার্যাদেশ দিয়েছিলেন। পরে বিষয়টি নিয়ে পত্রিকায় লেখালেখি হলে বিষয়টি তদন্ত হয়ে হাসপাতালের সভাপতি সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ডিওলেটারের পরিপ্রেক্ষিতে আবারো কার্যাদেশ হয়। আমরা সেই কার্যাদেশ অনুযায়ী পথ্য ও ওষুধ সরবরাহ করেছি। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি। কিন্তু একটি মহল ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দুদককে দিয়ে মামলা করিয়ে আমাদের হয়রানি করছে।


আরো সংবাদ



premium cement