২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
জাতীয় সংলাপে বক্তারা

পাহাড়ের নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের দাবি

-

বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রথাগত প্রতিষ্ঠানে নারীর অংশগ্রহণ কিছুটা বাড়ালেও তা যথেষ্ট নয়। নারীর ক্ষমতায়ন ও সম-অধিকার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে ওই সব প্রতিষ্ঠানে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে প্রথাগত আইন বিশ্লেষণের মাধ্যমে বৈষম্যমূলক উপাদান চিহ্নিত করে তা অপসারণে সার্কেল চিফ ও সিএইচটি মন্ত্রণালয়কে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। একইসাথে ২০১১ সালের জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা ও পার্বত্য শান্তিচুক্তির আলোকে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
গতকাল সিরডাপ মিলনায়তনে ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথাগত প্রতিষ্ঠানে আদিবাসী নারীর অংশগ্রহণ : বর্তমান বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক এক জাতীয় পরামর্শ সভায় তারা এ দাবি জানান। বাংলাদেশ নারী প্রগতি সঙ্ঘ (বিএনপিএস), কাপেং ফাউন্ডেশন, আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক, উইমেন হেডম্যান কারবারি নেটওয়ার্ক, সিএইচটি উইমেন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম, প্রগ্রেসিভ, অনন্যা কল্যাণ সংগঠন ও খাগড়াপুর মহিলা কল্যাণ সমিতির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত পরামর্শ সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমা।
বিএনপিএসের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চাকমা সার্কেল প্রধান ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। বিশেষ অতিথি ছিলেন মং সার্কেল প্রধান রাজা সাচিং প্রু চৌধুরী ও পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) রমা রাণী রায়। আলোচনায় অংশ নেন মানবাধিকার কমিশনের সদস্য বাঞ্ছিতা চাকমা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. আইনুন নাহার, মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, বিএনপিএসের উপপরিচালক শাহনাজ সুমী, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি সোমা দত্ত, সিএইচটি নেটওয়ার্কের সদস্য থুয়াই ইয়ং মারমা, অনন্যা কল্যাণ সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ড. নই প্রু নেলী, খাগড়াপুর মহিলা কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক শেফালিকা ত্রিপুরা, সিএইচটি নারী হেডম্যান কারবারির আহ্বায়ক জয়া ত্রিপুরা, কারবারি সান্তনা খিসা চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সচিব শান্তি বিজয় চাকমা, কাপেং ফাউন্ডেশনের সোহেল হাজং প্রমুখ।
সভায় চাকমা সার্কেল প্রধান রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় বলেন, কিছু নারী মূল দায়িত্বে এলেই নারীর ক্ষমতায়ন হয় না। উপজাতীয় নারীদের অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম করতে আইন করতে হবে। ক্ষমতা কাঠামোতে তাদের জন্য কোটাব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। রাজা সাচিং প্রু চৌধুরী বলেন, মং সার্কেলে নারী হেডম্যান-কারবারি নিয়োগ হলেও তাদের জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় তাদের সক্ষমতা বাড়ছে না।
অতিরিক্ত সচিব রমা রানী রায় বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা ক্ষেত্রে সব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে। এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্তসহ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য বিভিন্ন সার্কেলের প্রধানদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রথাগত প্রতিষ্ঠানে নারীদের অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দূর করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর। মূল প্রবন্ধে সুস্মিতা চাকমা বলেন, অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মতো উপজাতি নারীদের অধস্তন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement