১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের শিকার ৯৮ শতাংশ বাসযাত্রী : জরিপ

-

সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও ২৮ শতাংশ যাত্রী গণপরিবহনে দাঁড়িয়ে যেতে বাধ্য হন। বাসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের শিকার হন ৯৮ শতাংশ যাত্রী। রমজান মাসে নগরীতে যাতায়াতকারী যাত্রীদের ভোগান্তি নিয়ে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির এক জরিপে এই চিত্র উঠে এসেছে। বাংলা ট্রিবিউন।
সংগঠনটির গণপরিবহনের ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেণ উপকমিটির পাঁচটি টিম গত ছয় দিন রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে রমজান মাসে যাত্রী ভোগান্তি ও ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেণ করে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পর্যবেণকালে ৩১০টি বাস ও এর ৫৫৭ জন যাত্রী, ২১৪টি অটোরিকশা ও ১৮৫ জন যাত্রী, ৫৬ জন ট্যাক্সিক্যাব যাত্রীর সাথে কথা বলে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়। জরিপে অংশ নেয়া ৮২ শতাংশ যাত্রী রমজানে গণপরিবহন ব্যবস্থায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ৯২ শতাংশ যাত্রী প্রতিদিন যাতায়াতে দুর্ভোগের শিকার হন। ৬২ শতাংশ যাত্রী চলন্ত বাসে ওঠানামা করতে বাধ্য হন।
৯৩ শতাংশ যাত্রী জানান, হয়রানির শিকার হলেও অভিযোগ কোথায় করতে হয় তা জানেন না তারা। তবে ৮৮ শতাংশ যাত্রী মনে করেন, অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না বলেই অভিযোগ করা হয় না।
যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক বলেন, ‘পবিত্র রমজান মাসের শুরু থেকে পরিবর্তিত অফিস সময় অনুযায়ী যাতায়াতে নগরীর যাত্রী সাধারণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এই সময় সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা, বেলা ২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নগরীতে চলাচলকারী বাস-মিনিবাসের প্রায় ৯৬ শতাংশ সিটিং সার্ভিসের নামে দরজা বন্ধ করে যাতায়াত করছে। এতে নগরীর মাঝপথের যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এসব বাস সরকার নির্ধারিত ভাড়ার পরিবর্তে কোম্পানি নির্ধারিত অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। এতে নি¤œআয়ের লোকজনের যাতায়াত কষ্টকর হয়।
মোজাম্মেল হক আরো বলেন, ‘যাত্রী সাধারণের অফিসযাত্রা এবং অফিস ছুটি শেষে ইফতারকে কেন্দ্র করে ঘরমুখো যাত্রাকে টার্গেট করে নগরীতে চলাচলকারী বেসরকারি বাসের সবকটি এখন রাতারাতি সিটিং সার্ভিস বনে গেছে। এসব বাস বিশেষত ইফতারের সময় যাত্রীদের ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দ্রুত গন্তব্যে যাত্রা করছে। একমাত্র বিআরটিসি বাস ও হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানির বাস মাঝপথের যাত্রীদের বাদুড়ঝোলা হয়ে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠেছে। যাত্রী ভোগান্তির এ চিত্র মিডিয়ায় গুরুত্ব পেলেও মালিক সমিতি বা সংশ্লিষ্ট কোনো সরকারি-বেসরকারি কর্তৃপরে তৎপরতা ল্য করা যায়নি।’
জরিপে আরো উল্লেখ করা হয়, নগরীতে চলাচলকারী সিএনজি অটোরিকশার ৯৪ শতাংশ চুক্তিতে চলাচল করছে, ৯৮ শতাংশ মিটারের অতিরিক্ত ভাড়া বা বকশিশ দাবি করছে। আগে ১০ টাকা বকশিশ চাইলেও রমজানে ৩০-৫০ টাকা বেশি চাওয়া হচ্ছে। যাত্রীদের কাক্সিত গন্তব্যে যেতে রাজি হয় না ৯০ শতাংশ অটোরিকশা।
এ দিকে, শনিরআখড়া, গুলিস্তান, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, পোস্তগোলা, শাহবাগ, ফার্মগেট, মিরপুর-১০, মহাখালী, আগারগাঁও, ধানমন্ডি, বনানী, বারিধারাসহ নগরীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকার রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও ট্যাক্সিক্যাবের দেখা মেলে না। এতে পাঠাও, উবারসহ অ্যাপসভিক্তিক পরিবহনগুলো যাত্রীদের কিছুটা স্বস্তি দিতে পাশে দাঁড়াচ্ছে। প্রয়োজন অনুযায়ী যাত্রী ছাউনি না থাকা বা যাত্রী ছাউনিগুলো বেদখলে থাকায় বৃষ্টিতে নাজুক পরিস্থিতিতে পড়ছেন যাত্রীরা।


আরো সংবাদ



premium cement