২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

রোহিঙ্গাদের নিয়ে অ্যাঞ্জেলিনা জোলির আর্তি

অ্যাঞ্জেলিনা জোলি - এএফপি

জাতিসঙ্ঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) বিশেষ দূত ও হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি বলেছেন, বিশ্ববাসীর উচিত হবে না মিয়ানমার থেকে পালিয়া আসা ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া। তিনি উদ্বাস্তু রোহিঙ্গাদের সহায়তা অব্যাহত রাখার জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ সফর শেষ করার আগে জোলি আরো বলেন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা ও তাদের বাস্তুচ্যুতির চক্র বন্ধে সত্যিকারের প্রতিশ্রুতি না দেখানো পর্যন্ত বৈশ্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে।

জোলির এ সফরকে সামনে রেখে বিভিন্ন সংস্থাকে সাথে নিয়ে আগামী সপ্তাহে রোহিঙ্গাদের জন্য চলতি বছরের অর্থায়নে ‘জয়েন্ট রেনপন্স প্লান’ ঘোষণা করতে যাচ্ছে শরণার্থী সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার ইউএনএইচসিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রোহিঙ্গা ও স্থানীয় ভুক্তভোগী জনগণের জন্য চলতি বছর ৯২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি সহায়তা চাওয়া হবে।

ইউএনএইচসিআরের বিশেষ দূত জোলি রোহিঙ্গাদের মানবিক প্রয়োজনগুলো নিরূপণ করতে সোমবার সকালে কক্সবাজার যান। পরে টানা দুদিন তিনি জেলার রোহিঙ্গা শিবিরগুলো পরিদর্শন করেন।

কক্সবাজার থেকে ফিরে বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনসহ অন্য সিনিয়র কর্মকর্তাদের সাথে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন এ বিশেষ দূত।

অ্যাঞ্জেলিনা জোলি এর আগে ২০০৬ সালে ভারত ও ২০১৫ সালের জুলাইয়ে মিয়ানমার সফরকালে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের সাথে দেখা করেছিলেন।

ইউএনএইচসিআরের সাথে কাজ করা জোলি ২০১২ সালের এপ্রিলে সংস্থার বিশেষ দূত হিসেবে যোগ দেন।

নিজের ভূমিকার মাধ্যমে জোলি বিশ্বের বিভিন্ন সংকট এবং ব্যাপকভাবে মানুষের স্থানচ্যুত বা বাস্তুচ্যুত হওয়ার ব্যাপারে ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধিত্ব করেন। এছাড়া এ হলিউড অভিনেত্রী বৈশ্বিক শরণার্থী বিষয়ক বিভিন্ন আলোচনায় নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে থাকেন।

অ্যাঞ্জেলিনা জোলি ইউএনএইচসিআরের বিশেষ দূত হওয়ার আগে সংস্থাটিতে ২০০১ সাল থেকে শুভেচ্ছা দূত হিসেবে ছিলেন।

বিরামহীনভাবে কাজ করে যাওয়া জোলি প্রায় ৬০টির মতো মাঠ পর্যায়ের মিশন পরিদর্শন করেছেন এবং বস্তুচ্যুত বা শরণার্থীদের জন্য নিজেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রভাবকের স্তরে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।

‘গুলি করো, তবুও রাখাইনে ফেরত দিয়ো না’
গোলাম আজম খান,কক্সবাজার (দক্ষিণ) সংবাদদাতা

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার ‘ইউএনএইচসিআর’ এর বিশেষ দূত হলিউড অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি তিন দিনের বাংলাদেশ সফরের অংশ হিসেবে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। সফরের দ্বিতীয় দিনে তিনি কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করছেন। যার শুরুটা হয় সকাল ৯টায় স্থানীয় ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্প পরিদর্শনের মাধ্যমে।

সেখানে অন্যান্যদের সাথে ভারত ফেরত রোহিঙ্গাদের সাথেও কুশল বিনিময় করেন। সকাল ১০টার পর কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শণ করেন। বেলা ১১টায় রিলিফ ইন্টারন্যাল সংস্থার হেল্থ প্রোগ্রাম পরিদর্শন ও সাড়ে ১১টায় রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় ইউনিএনএইচসিআর কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা তার সাথে ছিলেন।


রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মব্যস্ত সময়ে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি মঙ্গলবার দুপুরে হোপ হসপিটাল, রেজিষ্ট্রেশন সাইড, শিশুবান্ধব কেন্দ্র পরিদর্শন এবং সেখানকার রোহিঙ্গাদের সাথে মতবিনিময় করেছেন। এসময় নারী-শিশুদের সাথে কথা বলে মিয়ানমারে তাদের উপর চলা ভয়াবহ নির্যাতনের বর্ণনা শুনেছেন।

সারাদিনে তিনটি ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় সংবাদ সম্মেলন করেছে তিনি। এতে তিনি বলেন, যারা নির্যাতিত হয়েছে মিয়ানমারে তাদের সাথে তার কথা হয়েছে। ‘নির্যাতিতরা বলেছেন যে হয় আমাদের বাংলাদেশে রাখো নাইলে গুলি করো। কিন্তু রাখাইনে ফেরত দিয়ো না’। তিনি বলেন, ‘তবে সংখ্যাটা এতো বড় যে বাংলাদেশ সামলাতে পারবেনা, সে কারণেই সবার সহযোগিতা দরকার’।

অ্যাঞ্জেলিনা জোলি বলেন রোহিঙ্গার জাতি হিসেবে বাংলাদেশে এসেই প্রথমবারের মতো নিবন্ধিত হলো। এখন বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত তারা যাতে নিজ দেশে নাগরিকত্ব পেয়ে মর্যাদার সাথে বসবাস করতে পারে সেটি নিশ্চিত করা।


আরো সংবাদ



premium cement