১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘গোল্ড’ দিয়ে সৌদি আরবে বলিউড যাত্রা শুরু

‘গোল্ড’ ছবির একটি দৃশ্যে অক্ষয় কুমার - সংগৃহীত

সৌদি আরব এখন আর আগের অবস্থানে নেই। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা নিয়মটাই এখন দেশের প্রশাসকদের কাছে সেকালে ব্যাপার। এই অবস্থা থেকে পরিবর্তন আনতে বাদশা সালমান নতুন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তারই অংশ হিসাবে দেশটিতে সিনেমা প্রদর্শন উন্মুক্ত করা হয়েছে চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল থেকে। এর আগে ১৯৭০ সালে একটি আইনের মাধ্যমে প্রেক্ষাগৃহে সিনেমা প্রদর্শন বন্ধ করা হয়েছিল। 

দুবাই থেকে প্রকাশিত একটি পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, চলতি বছর এপ্রিলে মারভেলের সুপারহিরো মুভি ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ দিয়ে সৌদি আরবে নতুন করে সিনেমা প্রদর্শনের যে সূচনা হয়েছে, সেখানে এবার যোগ হয়েছে বলিউডের ছবি। 

শুক্রবার সৌদি আরবের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে রীমা কাগতি পরিচালিত ছবি ‘গোল্ড’। আর এই ছবির নায়ক অক্ষয় কুমার এই খবর দিয়েছেন টুইটারে। তিনি সবাইকে প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে ছবিটি দেখার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। লিখেছেন, ‘আমরা এখন আরেকটি ইতিহাসের অংশ!’

১৯৪৮ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ভারত প্রথম লন্ডন অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করে। ওই বছর হকিতে স্বর্ণ পদক জিতেছিল ভারত। জুনিয়র ম্যানেজার ও হকি খেলোয়াড় তপন দাস সারা ভারত থেকে এমন সব প্রতিভা খুঁজে বের করেছিলেন, যাঁরা একজোট হয়ে স্বাধীন ভারতকে অলিম্পিকে প্রথম সোনা এনে দেন। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গত ১৫ আগস্ট ভারতে মুক্তি পায় ছবিটি। এখানে তপন দাসের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অক্ষয় কুমার।

ছবিটি দেখে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে একজন চিত্রসমালোচক লিখেছেন, ‘এই ছবি আপনার দেশপ্রেমকে উদ্বুদ্ধ করবে, আপনি আবেগপ্রবণ হবেন দেশের জন্য। তপন দাস, যিনি নিজের সারাটা জীবন হকিকে উৎসর্গ করেছেন। যিনি খুব কাছ থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব বুঝেছেন, ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার কাছে থেকে স্বাধীন ভারত বলার অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার স্বাদ জানেন। বাঙালি তপন দাস আর তার স্ত্রী মনোবীণার জন্যই ভারতের হকি দল অলিম্পিকে পৌঁছানোর সাহস পেয়েছে।’

‘গোল্ড’ ছবিতে তপন দাস চরিত্রে অক্ষয় কুমারের অভিনয় খুব প্রশংসিত হয়। ট্রেড অ্যানালিস্ট তরণ আদর্শ জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ১০০ কোটির ক্লাবে পৌঁছে গেছে ‘গোল্ড’।

এদিকে ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান ভিউ ইন্টারন্যাশনাল সৌদি আরবে ৩০টি প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণ করেছে। সৌদি আরবের রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান আবদুল মহসিন আল হোকায়ের হোল্ডিংয়ের সহযোগিতায় প্রেক্ষাগৃহগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। জানা গেছে, ১৯৭০ সালের পর সৌদি আরবের নাগরিকেরা প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে ছবি দেখার সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ওই সময় তারা পাশের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়ে প্রেক্ষাগৃহে ছবি দেখেছেন। যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান আল-সৌদ তার ‘ভিশন ২০৩০’ বাস্তবায়ন আর তেলের ওপর থেকে দেশটির নির্ভরতা কমিয়ে আনার জন্য সিনেমা প্রদর্শনের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেন। ২০৩০ সালের মধ্যে সৌদি আরবে ৩০০টি প্রেক্ষাগৃহ চালু করার পরিকল্পনা এখন চূড়ান্ত। আশা করা হচ্ছে, এ শিল্প খাত থেকে তখন বছরে ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলার আয় হবে।

বিবিসি জানিয়েছে, সৌদি আরব সিনেমা বা বিনোদন উন্মুক্ত করে রক্ষণশীল সমাজব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো প্রেক্ষাগৃহে চলচ্চিত্র প্রদর্শন। সৌদি আরবের প্রধান আর্থিক তহবিল পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড সিনেমা প্রদর্শনের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় সিনেমা হল চেইন আমেরিকান মুভি ক্ল্যাসিক বা এএমসির সাথে চুক্তি করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement