২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চাঁদপুরে ৯০ শতাংশ ইলিশের পেটেই ডিম!

- সংগৃহীত

প্রজনন মৌসুমের কারণে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর ইলিশের বাড়ি খ্যাত চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ডিমওয়ালা মা ইলিশ ধরা পড়ছে।

গত ৩১ অক্টোবর থেকেই চাঁদপুরের বড় রেল স্টেশন, মাছঘাটসহ নদী তীরবর্তী মাছের আড়তগুলো ডিমওয়ালা ইলিশে সয়লাব হয়ে গেছে। এসব আড়তের প্রচুর পরিমাণ মাছ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন দূরবর্তী এলাকায় ট্রাকে করে প্রতিদিনই চালান হচ্ছে বলে জানান ইলিশ ব্যবসায়ী ও পরিবহন শ্রমিকরা।

তারা বলেন, ঘাটে প্রচুর মা ইলিশ আমদানি হচ্ছে, কিন্তু এর মধ্যে ৯০ শতাংশের পেটেই ডিম রয়েছে। মাত্র ১০ শতাংশ ডিম ছাড়া ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে।

দামের বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, ইলিশ মাছের সরবরাহ বেশি থাকায় দাম কিছুটা কম। এক কেজি ওজনের মা ইলিশের দাম ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। এক কেজির নিচে মা ইলিশ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে বড় স্টেশন মাছঘাটে। আবার ১০ শতাংশ ডিমছাড়া ইলিশের দামও বেশি না ।

বুধবার বিভিন্ন মাছঘাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় ১০০০ মণ ইলিশ জেলার বৃহত্তম মাছ ঘাটে ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে করে এসেছে ভোলা, হাতিয়া, সন্দীপ, চরফ্যাশন থেকে। তবে এখানে পদ্মা নদীর মাছই বেশি, ৯০ শতাংশ ডিমওয়ালা মাছ।

স্থানীয় মানুষজন বলছে, ডিমওয়ালা ইলিশের স্বাদ কম। এক কেজি ওজনের বেশি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায়।   

অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী- নুরুল ইসলাম বকাউল, মফিজুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন, ইসমাইল, ইউনুছ  মনে করেন, ইলিশের প্রজনন রক্ষা করা না গেলে ইলিশের বংশ বিস্তার বিনষ্ট হবে। এভাবে ডিমওয়ালা বা মা ইলিশ মাছ ধরা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে এদেশ থেকে জাতীয় মাছ ইলিশ বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ইলিশের এ প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞার সময় আরও ১০/১২ দিন বাড়িয়ে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত করা উচিৎ ছিল। তাহলে লাখ লাখ ইলিশ ডিম ছাড়ার সময় পেতো ।  

এ বিষয়ে চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. শবেবরাত সরকার বলেন, ‘মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের মেয়াদ শেষে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ ইলিশ ঘাটে আসছে তাদের পেটে ডিম আর ডিম । জাতীয় স্বার্থে ২২ দিনের অভিযান আরও ১০ দিন বাড়িয়ে দিলে ভালো হতো।’

কিন্তু জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকি দাবি করেন, এবার মা ইলিশ রক্ষা অভিযান সফল হয়েছে। এ কারণেই নদী বা সাগরে জেলেরা এখন প্রচুর সংখ্যক ইলিশ ধরতে পারছেন। ইলিশ গবেষকদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ৮০ ভাগ ইলিশই ডিম ছেড়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিশিষ্ট ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান বলেন, আমরা আরও কিছু দিন এ বিষয়ে গবেষণা চালাবো। এরপর বলতে পারবো কত ভাগ মা ইলিশ ডিম ছেড়েছে।

জানা যায়, বর্তমানে চলছে ইলিশ প্রজননের ভরা মৌসুম। এ সময় ইলিশ মাছ ডিম ছাড়ার জন্য সমুদ্র থেকে নদীতে ওঠে আসে। স্রোতের বিপরীতে ইলিশ চলতে থাকে, মিঠাপানিতে আসে এবং ডিম ছেড়ে বংশ বৃদ্ধি করে। প্রজনন মৌসুম হিসেবে ইলিশের বংশ বৃদ্ধির জন্যে গত ৯ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন অভয়াশ্রমে মা ইলিশ ধরা, পরিবহন করা এবং বিক্রি করা নিষিদ্ধ করে সরকার। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই সময়ের মধ্যে মা ইলিশ নদীতে ডিম ছাড়া শেষ করতে পারেনি। ফলে এ নিষেধাজ্ঞা ওঠে যাবার পর চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনার জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ডিমওয়ালা মা ইলিশ ধরা পড়ছে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞার সময়েও প্রচুর মা ইলিশ ধরা হয়।

সরকারের ইলিশ রক্ষার পদক্ষেপ কঠোর থাকলেও অনেক জেলেরা আইন অমান্য করে ইলিশ শিকার করে। নিষেধাজ্ঞার সময়ে এবার যে পরিমাণ ডিমওয়ালা ইলিশ ধরা হয়েছে, তাতে হাজার হাজার টন ইলিশের বংশবিস্তার বিনষ্ট হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, এবার নদীতে জাল ফেললেই ধরা পড়েছে চকচকে রূপালি ইলিশ। এসব মাছ আরও ১০দিন নদীতে থাকলেই ডিম ছাড়তো। এর ফলে বৃদ্ধি পেত হাজার হাজার মণ ইলিশ। ফলে ইলিশের এ প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরার ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞার সময় বাড়িয়ে কমপক্ষে এক মাস বা ৩২ দিন করা দরকার বলে মনে করছেন অনেকে। সূত্র : ইউএনবি।


আরো সংবাদ



premium cement
কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্য পান, সেভাবেই ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে : কৃষিমন্ত্রী চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সিএনজি ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৪ ভান্ডারিয়ায় ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে দর্শনার্থীদের ঢল তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ৭ দিন স্কুল বন্ধের দাবি চাটমোহরে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তি, এদের রুখতে হবে : ওবায়দুল কাদের সাদিক এগ্রোর ব্রাহামা জাতের গরু দেখলেন প্রধানমন্ত্রী ভারতে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু

সকল