২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

কাপ্তাই হ্রদে ভেসে গিয়ে এক সপ্তাহে ৪ জনের মৃত্যু

-

পাহাড়ী ঢলের স্রোতে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ভেসে গিয়ে রাঙ্গামাটিতে এক সপ্তাহে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। নানিয়ারচর, বাঘাইছড়ি, বরকল ও কাপ্তাই উপজেলায় এ প্রাণহানী ঘটে। নিহতদের মধ্যে একটি শিশু, একজন যুবক ও দুইজন বৃদ্ধ।

৯ জুলাই নানিয়ারচরে পাহাড়ী ঢলের স্রোতে পানির তোড়ে ভেসে যাওয়ার চারদিন পর শুক্রবার আলো বিকাশ চাকমা (২৮) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। কাঠ কাটতে গিয়ে পাহাড়ী ঢলের স্রোতে ভেসে গিয়ে প্রাণ হারান তিনি।

১০ জুলাই বরকলে ভূষনছড়া ইউনিয়নের বড় উজ্জ্যাংছড়ির আগোরো আদাম গ্রামে পাহাড়ি ঢলের স্রোতের টানে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হন ষাটোর্ধ বৃদ্ধ বিজু রাজ চাকমা (৬৭)।

ছড়ার পাশে তার গরু আনতে গিয়ে বিজু রাজ চাকমা স্রোতের টানে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হন। নিখোঁজের তিন ঘন্টা পরে বিজু রাজ চাকমার লাশটি একটি পাথরের সাথে আটকানো অবস্থায় পাওয়া যায়।

১২ জুলাই বাঘাইছড়ির দুরছড়ি এলাকায় কুয়াশা চাকমা (১৩) নামে এক কিশোরী গোসল করতে নামলে ¯্রােতের টানে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ভেসে যায়। শনিবার বিকালে মাইনী নদীর বড় দুরছড়ির নদীর মাঝখানে কুয়াশ চাকমা লাশ ভেসে থাকতে দেখে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

১৩ জুলাই শনিবার সন্ধায় কাপ্তাইয়ের কলমীছড়া এলাকার কাপ্তাই থানা পুলিশ হ্রদে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে অজ্ঞাত এক পাহাড়ি ব্যক্তির লাশ। ৫০ বছর বয়সী এই ব্যক্তিটির লাশের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে পুলিশের ধারণা, গত এক সপ্তাহ আগেই মৃত্যু হয়।

এদিকে আট দিন পর আজ রোববার বৃষ্টি কমে আসলেও পাহাড়ী ঢল অব্যাহত থাকায় রাঙ্গামাটির চারটি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় চার উপজেলায় দুই হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছে।

বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বেড়ে ৯৮ এমএসএলে (মীনস সী লেভেল) অবস্থান করছে। কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র জানিয়েছে, কাপ্তাই হ্রদের প্রতিনিয়ত পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ১৩০ মেগাওয়াটে দাঁড়িয়েছে।

কর্ণফুলীর শাখা কাচালং, মাইনী, চেঙ্গী ও রাইংক্ষিয়ং নদীতে প্রবল বেগে পাহাড়ী ঢল নেমে আসায় কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। পাহাড়ী ঢলে প্রবল স্রোতের কারণে বাঘাইছড়ি, লংগদু, বরকল, নানিয়ারচর জুরাছড়িতে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।

রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে বাঘাইছড়ি, লংগদু, বরকল জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ির নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে। চার উপজেলায় ২শ’ আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যাদুর্গত দেড় হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। প্রশাসন থেকে আশ্রয় কেন্দ্রের লোকদের খাবার দেয়া হচ্ছে।

রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য রেম লিয়ানা পাংখোয়া ও ফারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্যালাল তঙচঙ্গ্যা রোববার বিলাইছড়িতে ক্ষতিগ্রস্ত ফারুয়া ইউনিয়নের বাজারসহ সাতটি গ্রাম পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের মাঝে সাহায্য বিতরণ করেন।


আরো সংবাদ



premium cement