শিশু নুসরাতকে ধর্ষণ ও হত্যার বিচার চায় বাবা-মা
- রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতা
- ১০ জুলাই ২০১৯, ১৬:৪০, আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৯, ১৭:০৩
‘আর কাঁদতে পারি না, ক্লান্ত হয়ে গেছি কাঁদতে কাঁদতে। চোখের পানিও শুকিয়ে গেছে। কী অপরাধ ছিলো আমার মেয়েটির। পাষাণ্ড জানোয়ার, আমার অবুঝ শিশু নুশরাতকে এমন নির্মমভাবে কেন হত্যা করল?’ এভাবেই রাত-দিন আহাজারি করছেন জেলার রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আলোচিত ধর্ষন ও হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশু নুশরাতের বাবা এরশাদ মিয়া ও মা রেহানা বেগম।
রামগঞ্জ থানা ও ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৩ মার্চ শুক্রবার জুমার নামাজের আগে উপজেলার ২ নং নোয়াগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম নোয়াগাঁও কালা মিস্ত্রি বাড়ীর প্রবাসী এরশাদ মিয়ার কন্যা স্থানীয় ফয়েজে রাসূল নুরানী মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী নুশরাত নুশু (৮) নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের তিনদিন পর ২৬ মার্চ সোমবার সকাল ১১টায় নুশরাতের বাড়ী থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দুরে পার্শ্ববর্তী কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপাড়া গ্রামের ঠাকুর বাড়ীর ওয়াপদা খাল থেকে রামগঞ্জ থানা পুলিশ নুশরাতের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে। মা রেহানা বেগম ও মামা জিয়া উদ্দিন কানের দুল ও জামা দেখে নুশরাতের লাশ শনাক্ত করেন।
পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর হসপিটালে মর্গে প্রেরণ করলে ধর্ষন ও শ্বাসরোধ করে হত্যার আলামত মেলে। পুলিশ কৌশলে মাঠে নামে ধর্ষক ও হত্যাকারী আটক করতে। নুশরাতের লাশের সাথে উদ্ধার হওয়া ব্যাগ ও ছবি দিয়ে লিফলেট বিতরন করা হয় জেলাব্যপী। এক সপ্তাহ পর লাশের ব্যাগ বহনকারী সিএনজি অটোরিক্সাচালক মোঃ রাকিব হোসেন স্থানীয় চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন রানাকে অবগত করলে ধর্ষন ও হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা শাহ আলম রুবেলের বন্ধু নোয়াগাঁও বাজার ক্যাবল অপারেটর ব্যবসায়ী বোরহান উদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বোরহান উদ্দিনের দেয়া তথ্যমতে ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের সূত্র ধরে রামগঞ্জ থানা পুলিশ খুলনা থেকে ধর্ষক ও খুনী শাহ আলম রুবেলকে (৩২) গ্রেফতার করে। আটকৃকত শাহ আলম রুবেল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধিতে জানান, ঘটনার দিন আইসক্রিম খাওয়ার লোভ দেখিয়ে শিশু নুশরাতকে গলা টিপে ধরে জোরপুর্বক নুশরাতকে ধর্ষন করা অবস্থায় শ্বাসরোধ হয়ে সে মারা যায়। লাশ লুকানোর জন্য পাটি দিয়ে মুড়িয়ে স্টিলের আলমিরার উপর রেখে দেয়। ঐদিন রাতেই নোয়াগাঁও বাজারের ক্যাবল অপারেটর ব্যবসায়ী বন্ধু বোরহানের সহযোগীতায় ডেকে আনা হয় সিএনজি চালক রাকিবকে। লাশ ভর্তি ব্যাগটি সিএনজিতে তুলে বাড়ী থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দুরে ব্রহ্মপাড়া ঠাকুর বাড়ীর খালে ফেলে দেয়া হয়।
শিশু নুশরাতের মা রেহানা বেগম সাংবাদিকদের জানান, আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই। আমি ধর্ষনকারী, খুনী রুবেলের ফাঁসি চাই। ষোল মাস পার হয়ে গেলো, এখনো আমরা বিচার পাইনি। উপরুন্ত জেলে থাকা ধর্ষনকারী রুবেলের পরিবারের লোকজন আমাদের হুমকি দিচ্ছে।
নুশরাতের বাবা এরশাদ মিয়া জানান, আজ দেড় বছর হয়ে গেলো আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার পাইনি। আমাদের কোটি টাকার লোভ দেখাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
এ ব্যাপারে শাহ আলম রুবেলের বাড়ীতে গিয়ে কাউকে না পেয়ে বক্তব্য নেয়া যায়নি। মামলার অপর আসামী শাহ আলম রুবেলের বন্ধু বর্তমানে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন।
রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, শিশু নুশরাত হত্যা ও ধর্ষনের ঘটনা দেশব্যপি আলোচিত ঘটনা। মূল হোতা রুবেলকে আটক করেছে পুলিশ, বর্তমানে সে জেলে আছে। আদালতে সে তার দোষ স্বীকার করেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা