২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গভীর রাতে কলেজ ছাত্রীকে তুলে নিয়ে বিয়ে করার চেষ্টা

কলেজ ছাত্রীকে তুলে নিতে গিয়ে আহত আলমগীর - ছবি : নয়া দিগন্ত

চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে এক কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে বিয়ে করতে গভীর রাতে এক কলেজ শিক্ষার্থীকে বাড়ি থেকে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে আলমগীরসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী। এ সময় বাড়ির লোকজন তাদের প্রতিরোধ করতে গেলে ৫ জন আহত হয়। এদের মধ্যে আলমগীরও রয়েছে।

গুরুতর আহত একজনকে প্রথমে কুমিল্লা ও পরে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। সোমবার দিবাগত রাত ২টা ৪৫ মিনিটে শাহরাস্তি উপজেলা মেহের দক্ষিণ ইউপির দেবকরা গ্রামের ভূইঁয়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেফতার করেনি।

ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, ২০১৭ সালে ওই দেবকরা গ্রামের ভুইঁয়া বাড়ীর জনৈক প্রবাসীর মেয়ে(১৮) শাহরাস্তি খিলা বাজার স্কুল এন্ড কলেজ পড়া অবস্থায় একই গ্রামের কালামিয়া বেপারি বাড়ির আবু তাহেরের পুত্র আলমগীরের (৩৮) তার উপর নজর পড়ে। ওই থেকে আলমগীর বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থী ও তার পরিবারটির সঙ্গে সু-সম্পর্ক গড়তে চেষ্টা করে আসছিল। তারপর ওই শিক্ষার্থী পরিবার তার ওইসব আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে ২০১৮ সালে জানুয়ারি মাসে শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত আবেদন করলে তার প্রেক্ষিতে একই ইউপির চেয়ারম্যান শফি আহমেদ মিন্টু তার দপ্তরে আলমগীর থেকে কখনো কিছু হবে না মর্মে একটি সমঝোতা মুচলেকায় স্বাক্ষর নেন।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার জানায়, সোমবার প্রতিদিনের ন্যায় রাতের খাবার খেয়ে সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। গভীর রাতে ওই পরিবারের মৃত মনসুর আলীর ভূঁইয়া পুত্র (চাচা) আব্দুল মান্নান(৩৪) প্রকৃতির ডাকে ঘর থেকে বের হতে গিয়ে দরজা বন্ধ পায়। পরে তিনি দরজার বাঁধন খুলে বেড়িয়ে দেখেন বাড়ির সব ইলেকট্রিক লাইট বন্ধ। এরই মধ্যে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা কে বা কারা মুখে কালো কাপড় বেঁধে তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে। ওই সময় তার আত্মচিৎকারে ও ধস্তাধস্তির শব্দ শুনে পরিবারের অন্য সদস্যরা জেগে উঠলে সঙ্গবদ্ধ দল বিয়ের দাবীতে নিতে আসা শিক্ষার্থীকে তুলে নিতে চেষ্টা চালায়। এতে প্রতিরোধ করতে গিয়ে তার পরিবারের চাচা আঃ সাত্তার (৩৮), জেঠা শাহাজান (৫০) শিক্ষার্থীর ভাই মোঃ ফখরুল ইসলাম (১৯) গুরুতর জখম হন।

সংঘর্ষ চলাকালে শিক্ষার্থীর চাচা আঃ সাত্তার আগত আলমগীরকে ঝাপটিয়ে ধরলে তার সঙ্গে থাকা মুখোশ পরা ব্যক্তিদের সঙ্গে বাড়ির লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে চাচা আঃ সাত্তার ও শিক্ষার্থীকে তুলে নিতে আসা আলমগীরও গুরুতর আহত হন। ওই সময় আলমগীরের সঙ্গে থাকা মুখোশধারী ব্যক্তিরা কেটে পড়তে সক্ষম হয়।

পুলিশ সংবাদ পেলে দ্রুত এসআই হাবিবুর রহমান, এএসআই শাহাজালালসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে শাহরাস্তি হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে আহত সাত্তারের অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেকে) ভর্তি করা হয়।

একই সময় সংঘর্ষে আহত আলমগীরকে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে ভর্তির জন্য প্রেরণ করা হয়। অন্য আহতদের শাহরাস্তি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করা হচ্ছে। ওই ঘটনায় প্রবাসীর স্ত্রী (৩৮) বাদী হয়ে আলমগীর বিরুদ্ধে মঙ্গলবার একটি মামলা রুজু করেন।

মামলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খিলা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জাকির হোসেন জানান, তদন্ত সাপেক্ষে বাকি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযুক্ত আলমগীরের মা গুলশান আরা জানান, আমার ছেলেকে ষড়যন্ত্র করে মেয়ে বিয়ে দিবে বলে অনেক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীর মা বলেন, তিনি এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার চান।


আরো সংবাদ



premium cement