২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
অভিনব প্রতারণা

অনলাইনে অর্ডার করলেন ঘড়ি, পেলেন পেঁয়াজ!

অনলাইন অর্ডারের মাধ্যমে ঘড়ি কিনে পেয়েছেন পিঁয়াজ - নয়া দিগন্ত

দিনভর নানা কাজে ছোটাছুটি, সময়ের বড়ই অভাব। তাই তো ঘরেই বসে যদি পছন্দের কিংবা প্রয়োজনীয় জিনিসটি ক্রয় করা যায়, তাহলে মন্দ কি? শহর থেকে শুরু করে সর্বত্রই বাড়ছে এ রেওয়াজটি। এ সুবাদে প্রতিনিয়ত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে অনলাইনে কেনাকাটা। সেই সুযোগে একটি চক্র গ্রাহকদের সঙ্গে করছে প্রতারণা। তাদের অভিনব প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

অনলাইনে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দেখে অনেক সাধারণ গ্রাহক পণ্য কিনে বিভিন্নভাবে এই প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে চাহিদা অনুযায়ী সঠিক পণ্য সরবরাহ না করা এবং করলেও তা নিম্মমানের পণ্য সরবরাহ করার ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। এমনই একটি প্রতারণার শিকার হয়েছেন লক্ষ্মীপুরের পিয়াস সরকার নামে এক যুবক।

ভূক্তভোগী পিয়াস সরকার প্রতারণার শিকার হয়ে বুধবার রাতে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। জিডি নং-৮৫। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, গত সোমবার ‘স্মার্ট সপ ঢাকা’ নামক একটি অনলাইন পেইজ থেকে একটি স্মার্ট ঘড়ি ক্রয় করেন তিনি। ঘড়িটি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এসএ পরিবহন লক্ষ্মীপুর শাখা থেকে নগদ ১৮’শ টাকা দিয়ে গ্রহণ করেন তিনি। পরে ঘড়িটির প্যাকেট খুলে দেখতে পান ‘সেখানে ঘড়ি নেই, আছে দুইটি পেঁয়াজ’।

এ বিষয়ে প্রতারিত পিয়াস সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘড়ির বক্সটি গ্রহণের পর থেকেই ঐ অনলাইন পেইেজের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেননি তিনি। অভিযুক্ত পেইজটি বন্ধ দেখাচ্ছে।

এদিকে এই বিষয়টি এসএ পরিবহন লক্ষ্মীপুর শাখাকে জানিয়েছেন পিয়াস। পাশাপাশি এই প্রতারক চক্রটিকে পুলিশে সোপর্দ করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

এসএ পরিবহন লক্ষ্মীপুর শাখা ম্যানেজার নুরুল আলম বলেন, অনলাইনে পণ্য ক্রয় করে একজন গ্রাহক প্রতারিত হয়েছেন বলে বিষয়টি জেনেছি। পণ্যটির বক্স ও সাধারণ ডায়েরির একটি কপি এসএ পরিবহনের প্রধান শাখায় পাঠানো হয়েছে, যাতে এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

আরো পড়ুন : ডিজিটাল প্রতারণা থেকে সাবধান থাকুন
নয়া দিগন্ত অনলাইন, (১৫ মার্চ ২০১৯)

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে ডিজিটাল প্রতারণা বা অপরাধের হার অনেক বেড়ে গেছে। হঠাৎ করেই বিপদে পড়ে যাচ্ছেন অতি সতর্ক ব্যক্তিটিও। বুঝে উঠতে পারেন না কী করা উচিত। এ অবস্থায় ওই প্রতারক বা অপরাধী আরো অনেক ক্ষতি করে ফেলে। বাংলাদেশে এ ধরনের প্রতারণা বা অপরাধ দমনে ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ডিভিশন কাজ করে যাচ্ছে। যে কেউ এ ধরনের সমস্যায় পড়লে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এক্ষেত্রে যত দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া যাবে, ততই ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

তবে এসব ক্ষেত্রে প্রথমে নিজেকেই সাবধান থাকতে হবে । আর তাই ফেসবুক বা ডিজিটাল মাধ্যমে অজানা বিদেশীর সাথে বন্ধুত্ব করে বা প্রেমে পড়ে গিফট সামগ্রীর লোভে সর্বস্ব হারাবেন না। মনে রাখবেন কেউ শুধু শুধু আপনাকে গিফট দিবে না। এর মাধ্যমে শুধুই প্রতারণার শিকার হবেন। লটারি জিতেছেন শুনে কাউকে কোনো তথ্য বা টাকা দিবেন না।

মোবাইল ব্যাংকিং-এর এজেন্ট বা কর্মকর্তা পরিচয়ে কেউ ফোন দিলে সাইবার পুলিশের সাথে যোগাযোগ না করে কোনো লেনদেন করবেন না। মনে রাখবেন মোবাইল ব্যাংকিং-এর কোনো কর্মকর্তাই আপনাকে ফোন দিবেন না। কেউ ভুলে টাকা পাঠিয়েছে জানালে, নিজের মোবাইল ব্যাংকিং-এর ব্যাল্যান্স না জেনে অজানা কাউকে টাকা ফেরত দিবেন না। নিজের বিকাশ বা অন্যান্য ব্যাংকিং-এর ওয়ালেটের ব্যালান্স চেক না করে শুধুমাত্র ফেইক বা ভুয়া এসএমএস দেখে কাউকে টাকা পাঠাবেন না।

এয়ারপোর্ট কাস্টমস পুলিশ সেজে পার্সেল পাইয়ে দেয়ার কথা বলেও কিছু এ দেশীয় দালাল যারা নাইজেরিয়ান স্ক্যাম-এর সহযোগী তারা আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে, তাদের কথায় কোনো টাকা দেবেন না।

অনলাইনে কেনা কাটায় সাবধান হতে হবে। টাকা পাঠানোর আগে সব দিক চেক করে, বিশেষ করে পণ্যের মান ও প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা বা অন্য কিছু যা দেখে চিহ্নিত করা যায় তা পরীক্ষা করে লেনদেন করুন।

যেকোনো ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনাকাটার সময় আপনার গোপন পিন সাবধানে প্রেস করুন যাতে কেউ দেখতে না পারে। ম্যাগবার কার্ড বাদ দিয়ে চিপ যুক্ত কার্ড (ইএমভি) ব্যবহার করুন। এ ক্ষেত্রে আপনার ব্যাংককে তাগাদা দিন নতুবা অন্য ব্যাংক এর চিপ যুক্ত কার্ড ব্যবহার করুন।

এ ধরনের কোনো প্রতারণা বা অপরাধের শিকার হলে দ্রুত থানায় জিডি করে সাইবার পুলিশ এর সহায়তা নিন। সহায়তা নেয়ার জন্য  https://www.facebook.com/cyberctdmp ফেসবুক পেজে যোগাযোগ করতে পারেন।


আরো সংবাদ



premium cement