২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গাছে বেঁধে বৃদ্ধাকে নির্যাতন

গাছে বেঁধে নির্যাতন। (ইনসেটে) হাত বেঁধে মাটিতে শুইয়ে রাখা হয়েছে বদ্ধাকে - ছবি : নয়া দিগন্ত

জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক বৃদ্ধাকে গাছের সাথে বেঁধে প্রকাশ্যে নির্যাতন করা হয়েছে। এ ঘটনায় বেশ সমালোচনার ঝড় বইছে। ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার টামটা দক্ষিণ ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামে।

নির্যাতনের শিকার বেলুয়া খাতুন শাহরাস্তি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গাছের সাথে দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে তাকে নির্যাতন করা হয়। ১৭ মার্চ ঘটে যাওয়া নির্যাতনের ঘটনা জানালেন এ বৃদ্ধা। বেলুয়া খাতুন শাহরাস্তি উপজেলার আলিপুর গ্রামের দক্ষিণ পাড়া মোল্লা বাড়ির বাসিন্দা। তার ৪ ছেলে ও ৩ মেয়ে সন্তান রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন যাবত বেলুয়া খাতুনের সাথে প্রতিবেশী মিজানুর রহমান ও সুমনের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। গত ১৭ মার্চ মিজানুর রহমান, সুমন ও মানিক জমিতে বেড়া দিতে গেলে বাধা দেয় বেলুয়া খাতুন। এ নিয়ে তাদের মাঝে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে বেলুয়া খাতুনকে মাটিতে হেঁচড়ে প্রথমে ঘরের পিলারের সাথে বাঁধে। পরবর্তীতে তাকে বাড়ির উঠানে আম গাছের সাথে বেঁধে প্রহার করা হয়। নির্যাতনকারীরা এই দৃশ্যটি মোবাইলে ধারণ করে।

বেলুয়া খাতুনের স্বামী শহীদুল্লাহ বলেন, এঘটনার সময় আমরা কেউ বাড়িতে ছিলাম না। একা পেয়ে তারা আমার স্ত্রীর উপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এই ঘটনায় আমি আদালতে মিজানুর রহমান, সুমন, মানিক ও মিজানুর রহমানের স্ত্রী কাজল বেগমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি।

নির্যাতিতা বৃদ্ধার ছেলে মো. বশির আহমেদ ও মেয়ে রাহেরা বেগম বলেন, আমাদের জমিতে তারা জোড় করে দখল করতে আসলে আমার মা তাদের বাধা দেয়। এসময় তাদের সাথে বাকবিতণ্ডা হলে এক পর্যায়ে তারা আমার মাকে ধরে নিয়ে গিয়ে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে আম গাছের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে প্রহার করে। আমরা আমার মায়ের উপর নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।

নির্যাতনকারীদের মা বদরুন্নেছা তাদের অন্যায় স্বীকার করে নিয়ে বলেন, উত্তেজিত হয়ে এই ঘটনা ঘটে গেছে। আমার ছেলেদের বার বার নিষেধ করার পরেও তারা ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। গাছের সাথে বাঁধা তাদের অন্যায় হয়েছে।

স্থানীয় মোজাম্মেল হোসেন মোল্লা ও সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। নিষেধ করা সত্তেও তারা নির্যাতন বন্ধ করেননি। আমরা বাঁধন খুলতে গেলে আমাদেরও নিষেধ করেন তারা। একজন বৃদ্ধা নারীকে নির্যাতন করা কোনভাবে ঠিক হয়নি। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এ ধরনের একটি ঘটনা আমাদের এলাকায় ঘটেছে যা অত্যন্ত বিবৃতকর।

বদ্ধা নারীকে নির্যাতনের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে শাহরাস্তি থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এসময় তারা বেলুয়া খাতুনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এ ঘটনায় বেলুয়া খাতুনের স্বামী শহীদ উল্লাহ বাদী আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement