২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বগুড়া থেকে চট্টগ্রামে গিয়ে স্বামীকে হত্যা করেন দ্বিতীয় স্ত্রী আশা

আশা আক্তার - সংগৃহীত

প্রথম সংসারের স্ত্রী-সন্তানের কথা গোপন রেখে বগুড়ার মেয়ে আশা আক্তারকে বিয়ে করেন চট্টগ্রামের শামীম। বিয়ের পর আশা বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারণার শিকার। প্রতারিত হওয়ার ক্ষোভ থেকে স্বামীকে ঘুমন্ত অবস্থায় মুখের ওপর কম্বল চাপা দিয়ে এবং গলা কেটে তাকে হত্যা করেন আশা।

চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী থানা পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর টানা চারদিন ধরে তদন্ত চালিয়ে নিহতের পরিচয় নিশ্চিতের পাশাপাশি অভিযান চালিয়ে আশাকে গ্রেফতার করে।
আশা আক্তার (২৩) বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া নতুনপাড়া এলাকার আব্দুল আজিজের মেয়ে। বগুড়া শহরে একটি বায়িং হাউজে চাকরির পাশাপাশি ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট থেকে তিনি এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী। আশা পুলিশকে জানান, স্বামীকে হত্যার পর তিনি পালিয়ে যান চট্টগ্রাম থেকে বগুড়ায়। গত ১৬ জানুয়ারি বিকেলে নগরীর পাহাড়তলী থানার ইউসুফ মিয়ার কলোনির একটি বাসা থেকে মোহাম্মদ শামীমের (৩০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পেশায় বাবুর্চি শামীমের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায়। মা, এক বোন এবং স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে থাকতেন চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানার ঢেবারপাড় এলাকায়। 

পাহাড়তলী থানার ওসি সদীপ কুমার দাশ নয়া দিগন্তকে বলেন, ভাড়া নেয়া বাসাটিতে সকালে স্ত্রীকে নিয়ে উঠেছিলেন শামীম। একটি ফোন কলের সূত্র ধরে আমরা অনুসন্ধান চালিয়ে শামীমের বাসার ঠিকানা পাই এবং স্বজনদের খুঁজে বের করি। শামীমের মা এবং প্রথম স্ত্রী তার লাশ শনাক্ত করেন।
ওসি জানান, শামীম ফেসবুকে এক মেয়ের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলত প্রথম স্ত্রীর দেয়া এমন তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালিয়ে আশা আক্তারের বিষয়ে জানা যায় এবং ১৯ ফেব্রুয়ারি তাকে বগুড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। 

ওসি বলেন, ‘আমরা ওই মেয়ের বাসা থেকে তার রক্তমাখা জামা উদ্ধার করেছি। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, এই খুনের ঘটনা তিনি একাই ঘটিয়েছেন। মূলত প্রতারিত হওয়ার ক্ষোভ সহ্য করতে না পেরে তিনি স্বামীকে হত্যা করেছেন বলে জানান।’

রূপগঞ্জে মাটি ব্যবসায়ীকে শ্বাসরোধে হত্যা 
নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাটি ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামকে হত্যার জেরে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশের লাশ নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ফাঁকা গুলিবর্ষণ ও বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার দাউদপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। এতে সাংবাদিকসহ কমপক্ষে আটজন আহত হয়েছেন। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ঘণ্টাব্যাপী দুই পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। তবে ফাঁকা গুলি ও পুলিশ অবরুদ্ধের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারা। 

গত মঙ্গলবার সকালে দাউদপুর ইউনিয়নের দুয়ারা এলাকার এমএবি-২ ইটভাটার ভেতরে একটি ঘর থেকে পুলিশ নিহত ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। 

নিহত ব্যবসায়ীর বাবা শাহজাহান সিরাজ জানান, গত সোমবার সন্ধ্যায় ইটভাটায় সরবরাহ করা মাটির বকেয়া টাকা তুলতে তার বড় ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৯) বাড়ি থেকে বের হন। এরপর তিনি আর বাসায় ফেরেননি। সকালে দাউদপুরের এমএবি-২ ইটভাটার ভেতরে একটি টিনশেড ঘর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। 

শাহজাহান সিরাজ বলেন, পুলিশ লাশ উদ্ধার করেই নিয়ে যেতে চায় এবং তিন আসামিকে কোনো কিছু জিজ্ঞাসাবাদ না করেই একটি সিএনজি অটোরিকশায় উঠিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। এতে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী পুলিশ কেন তড়িঘড়ি করছে তা জানতে চান এবং লাশ নিতে বাধা দেন। এ সময় পুলিশ নিহতের চাচাতো ভাই সেলিমকে লাঠিপেটা করে। পুলিশ কোনো কথা না শুনে দ্রুত লাশ ও আসামিদের নিয়ে এলাকা ত্যাগ করে। তখন এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে এএসআই রিয়াজ ও কনস্টেবল সফিকে ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিসে অবরুদ্ধ করে রাখে। তাদের ছাড়াতে গিয়ে সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। অন্য দিকে আত্মীয়স্বজনকে না দেখিয়ে লাশ নিয়ে যাওয়ার জেরে উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি ধাওয়া করে বেলদী বাজারে লাশবাহী গাড়িটি আটক করে। এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছুড়ে ও লাঠিচার্জ করে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে লাশ নিয়ে চলে যায়। এ সময় আহত হন কমপক্ষে চারজন। পরে ভোলাবো ফাঁড়ির ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম উত্তেজিত লোকজনকে বুঝিয়ে শান্ত করে দুই পুলিশ সদস্যকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। 

এ দিকে ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ইটভাটার পাহারাদার জাহাঙ্গীর, শ্রমিক সর্দার পিন্টু দাস ও মোতালিবকে আটক করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement