২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

চাঁদপুর-২ আসনে ড. জালালে ঐক্যবদ্ধ বিএনপির নেতাকর্মীরা

নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করছেন ড.জালাল উদ্দিন।( ডান থেকে তৃতীয় ) - ছবি: সংগৃহীত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর ও দক্ষিণ) আসনটি বিভিন্ন কারণে দেশব্যাপী আলোচিত। তাই নির্বাচনের সময় এই আসনটির দিকে ভোটারদের বিশেষ নজর থাকবে।

এই আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে দেশের অন্যতম কারেন্সি (মুদ্রা) বিশেষজ্ঞ ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ ড. জালাল উদ্দিনকে।

আর আওয়ামী লীগে মনোনয়ন নিয়ে অনেক নাটকীয়তা তৈরি হয়েছিল। আওয়ামী লীগের হেভিয়েট প্রার্থী বর্তমান সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে মনোনয়ন দিয়েও শেষ মূহুর্তে তার মনোনয়ন কেড়ে নেয়া হয়েছে। পরে এখানে মনোনয়ন দেয়া হয় ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রিয় নেতা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট নুরুল আমীন রুহুল।

এই আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী (সাবেক সংস্থাপন) ও চারবারের সংসদ সদস্য প্রয়াত নুরুল হুদার ছেলে তানবীর হুদা। বিএনপি থেকে ড. জালাল ও তানবীর হুদাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। পরে দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে ধানের শীষের চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয়েছে ড. জালাল উদ্দিনকে। আর জালাল ধানের শীষের প্রার্থী হওয়ায় মতলব উত্তর ও দক্ষিণ এই দুই উপজেলায় বিএনপিসহ ২০ দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা দেখা গেছে। নেতাকর্মীরা সকল বিভেদ ভুলে ধানের শীষের প্রার্থী জালালে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।

এদিকে আজ বুধবার প্রয়াত নুরুল হুদার ছেলে তানবীর হুদা তার মরহুম বাবার কবর জিয়ারত করে ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নামবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

দুইটি উপজেলা নিয়ে গঠিত চাঁদপুর-২ আসনটি। নদীবেষ্টিত উপজেলা মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনটি। মতলব দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির ঘাটি বলে জেলায় পরিচিতি আছে। বিগত নির্বাচনের ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায় বিএনপি বরাবরই এই উপজেলায় এগিয়ে ছিলো। প্রয়াত নুরুল হুদা তৃণমূল পর্যন্ত দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করেছেন। ২০০৯ সালে এই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আব্দুস শুক্কুর পাটোয়ারী। তিনিও দলকে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করেছেন। ২০১৬ সালে জানুয়ারি মাসে মারা যান নুরুল হুদা। এরপর থেকে তার ছেলে বিএনপির হাল ধরেছেন।

আর ড. জালাল উদ্দিনও বিএনপির দু:সময়ে দলের নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন। ব্যক্তিগত ও সাংগঠনিকভাবে তিনি নেতাকর্মীদের কে সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন। দলকে শক্তিশালী করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।

মতলব উত্তরেও বিএনপির অবস্থান আগের যে কোন সময়ের চেয়ে ভালো বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা। সুষ্ঠুভাবে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হবেন বলে নেতাকর্মীরা আশাবাদী।

উভয় উপজেলায়ই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক হামলা-মামলার কারণে এলাকা ছাড়া। তারা একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশীদারিত্বমূলক নির্বাচন চায়। যেখানে তারা নির্ভয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। তবে বিএনপি নেতাকর্মীদের মনে এখনো অজানা শঙ্কা ও ভয় কাজ করছে।

তবে বিএনপির কর্মী ও সমর্থকরা ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে একাট্টা। তারা সব ভুলে এই আসনটি পুনরুদ্ধার করতে চান। তারা বলেন, কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাই সংকীর্ণতা থেকে বেরিয়ে এসে বৃহত্তর স্বার্থে ড. জালালের পক্ষে কাজ করতে হবে।

মতলব দক্ষিণের নায়েরগাঁও এর মনির নামে এক ভোটার বলেন, মানুষ ভয়ডর হীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে ধানের শীষের বিজয় হবে। তবে তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা এ নিয়ে সন্দিহান। তার মতে, ভোটের দিন নেতাকর্মীদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।

কালিপুরের তারেক এবারই প্রথম ভোট দিবেন। তিনি বলেন আমরা তরুণরা একটা ইতিবাচক পরিবর্তন চাই। আমরা কর্মসংস্থানের সুযোগ চাই। তিনি আরো বলেন, তরুণ ভোটাররা ভুল করবে না। আর তরুণ ভোটাররাই এবারের ভোটে জয়-পরাজয়ের নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে।

উভয় দলের প্রার্থীদের নিয়ে বলেন, এবার উভয় দল (বিএনপি ও আওয়ামী লীগ) নতুন প্রার্থী দিয়েছে। তাই তাদের একটা ইতিবাচক ইমেজ আছে।


আরো সংবাদ



premium cement