২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ)

বিএনপির মিছিলে পুলিশের হামলায় আহত ৩০, আটক ২

ফরিদগঞ্জে বিএনপির মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ - নয়া দিগন্ত

চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে ধানের শীষের মিছিলে পুলিশি হামলার অভিযোগ করেছে বিএনপি প্রার্থী এম এ হান্নান। গতকাল সোমবার সন্ধ্যার আগে ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরে এ ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, বিএনপি সশন্ত্র মিছিল করায় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় তাদের বাধা দেয়া হয়েছে।

এদিকে পুলিশের হামলায় বিএনপির ২৫জন নেতাকর্মী এবং বিএনপির কর্মীদের পাল্টা আঘাতে অন্তত ৫জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে বলে উভয়পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি হামলার ঘটনায় আরিফ পাটওয়ারী ও ইমাম হোসেন নামে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ রাউন্ড শর্টগানের গুলিবর্ষন করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনের বিএনপি প্রার্থী এম এ হান্নানের নেতৃত্বে ধানের শীষের একটি মিছিল ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরের বাজারের মধ্যে আসলে পুলিশ প্রথমে বাধাপ্রদান করে ও পরে লাঠিচার্জ শুরু করে। এসময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়।

পুলিশের হামলায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফ মোঃ ইউনুছ, পৌর বিএনপির সম্পাদক আমানত গাজী, যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আমির বেপারী, শ্রমিকদলের সভাপতি আজিম খাঁ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা বেগমসহ অন্তত ২৫জন নেতাকর্মী আহত হন।

এদিকে সংঘর্ষে পুলিশের এস আই ওমর ফারুক, সুমন্ত মজুমদার, সাজু বড়ুয়া , গোলাম রসুল ও আবুল কালাম আহত হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

ঘটনার পর সন্ধ্যায় পুলিশি হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি প্রার্থী এম এ হান্নান ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় তিনি নেতাকর্মীদের উপর হামলার নিন্দা জানিয়ে ফরিদগঞ্জ থানা ওসির প্রত্যাহার দাবি করেন।

ফরিদগঞ্জ থানার ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, সোমবার বিকেলে বিএনপির একটি সশস্ত্র মিছিল উপজেলা সদরে আসে। নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় পুলিশ মিছিলে বাধাপ্রদান করলে পুলিশের উপর হামলা করে বিএনপি কর্মীরা। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৬ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে। ঘটনার সময় পুলিশ দুই জনকে আটক করেছে।

এদিকে নির্বাচনী প্রচারণায় পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চাঁদপুর-৪ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী এম. এ. হান্নান বলেন, বিনা উস্কানিতে পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ শোডাউনে অতর্কিত হামলা করেছে। আমাদের নেতাকর্মীদের পিটিয়ে আহত করেছে। গ্রেফতার করেছে। অতি উৎসাহী হয়ে পুলিশ আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছে। ফরিদগঞ্জে কোনো কলঙ্কজনক অধ্যায় সৃষ্টি হলে এর দায় পুলিশকে নিতে হবে। এ সময় তিনি ফরিদগঞ্জ থানার ওসির প্রত্যাহার দাবি করেন।

সোমবার সন্ধ্যায় ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে এম. এ হান্নান আরো বলেন, আমরা নির্বাচনী প্রতীক পেয়েছি। এখন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় বা মিটিংয়ে বাধা নেই। আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে বাজারে পৌঁছলে পুলিশ অতর্কিত আমাদের উপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করে। পুলিশের হামলায় উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শরীফ মোহাম্মদ ইউনুছ, পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আমানত গাজীসহ ২০/২৫ জনকে আহত হয়েছে। আরিফ হোসেন পাটওয়ারী, ইমাম হোসেনসহ আমার কর্মীদের গ্রেফতার করেছে। এখন পুলিশ উল্টো গল্প তৈরির পাঁয়তারা করছে। আমরা রিটার্নিং অফিসারের কাছে এ হামলার তদন্তপূর্বক বিচার দাবি করছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শরীফ মোহাম্মদ ইউনুছ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান, ফরিদগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মঞ্জিল হোসেন, পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আমানত হোসেন গাজী, পৌর কাউন্সিলর জাকির হোসেন গাজী, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক মহসিন মোল্লা, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক আব্দুল মতিন, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেবেকা সুলতানা, বিএনপি নেতা ডাঃ আবুল কালাম আজাদ, সাবেক চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম, শাহাদাৎ হোসেন নয়ন ও হারুনুর রশীদ, বিএনপি নেতা আবু জাফর খোসরু মোল্লা, মজিবুর রহমান বকুল, আহসান উল্যাহ কিরণ, সাবেক জিএস নজরুল ইসলাম, যুবদল নেতা ফারুক হোসেন খান প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement